কক্সবাংলা ডটকম(১৭ জুন) :: জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান দল আওয়ামী লীগ শতাধিক আসনে নতুন মুখ খুঁজছে। এ ক্ষেত্রে এলাকার গণমানুষের প্রিয় নেতা, ক্লিন ইমেজ ও ত্যাগী নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।আওয়ামী লীগ বিতর্কিতদের মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অপেক্ষাকৃত যোগ্য, তরুণ ও নারী নেত্রীদের প্রার্থী করার ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করছে । এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও দলের হাইকমান্ড থেকে জানানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সাধারণ ভোটারদের কাছে যারা গ্রহণযোগ্য তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে নৌকার টিকিট দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতি ছয় মাস অন্তর জরিপ করছেন। প্রতিটি এলাকার সার্বিক চিত্র তার নখদর্পণে। সবকিছু বিবেচনা করেই আমরা এবার মনোনয়ন দেব।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয় প্রার্থীর সন্ধান করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বর্তমান সংসদে এমপি আছেন এমন অনেকেই ছিটকে পড়বেন এবার। মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় ব্যক্তিরা। একাদশ নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে যেখানে যেমন প্রার্থীর প্রয়োজন সেখানে তেমন প্রার্থী দেওয়া হবে।
সেই নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীনরা জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে নিজেদের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে। করা হচ্ছে খসড়া তালিকা। বর্তমান এমপিদের জনপ্রিয়তা, বিগত সময়ে তাদের কর্মকাণ্ডে নির্বাচনী এলাকার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রমতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিবিহীন ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ নেই বলেই মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। সে কারণে এবার নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জনপ্রিয়তা তলানিতে গেছে এমন ১০০ থেকে ১৫০ এমপির তালিকা করা হয়েছে। তাদের ডেকে সতর্ক করার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয়তা বাড়াতে বলা হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপির অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় যেতে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বরাবরই বলে আসছেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা প্রয়োজন। সে কারণেই এবার মনোনয়নে বেশ সতর্ক আওয়ামী লীগ। দলের দায়িত্বশীল নেতাদের মতে, এ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দল ও নেতৃত্বের প্রতি একান্ত অনুগত, বিতর্কহীন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ।
কোনো বিতর্কিত, সন্ত্রাসী ইমেজের,জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য,দখলবাজি,মাদক ব্যবসায় পত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অভিযোগে অভিযুক্তদের কোনোভাবেই মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আর এমন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজে বের করতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বের বাইরেও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন, দল-সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য দলীয় সভানেত্রীর তিন শর্তকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা।
এর মধ্যে যেসব নেতা-কর্মী শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড করেছেন, তারা প্রার্থী হতে পারবেন না। কোনো রাজাকার ও তার সন্তান নৌকা প্রতীক পাবেন না। দল থেকে বহিষ্কৃত কাউকে দলে এনে মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। আর সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্থাও মাঠপর্যায়ে জরিপ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিচ্ছে। এরপর সব জরিপের ফলাফল মিলিয়ে দল ও সরকারের হাইকমান্ড চুলচেরা পর্যালোচনা করছেন। আর জরিপও প্রতি ছয় মাস অন্তর রিভিউ করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধু আওয়ামী লীগ নয়, মুক্তিযুদ্ধের শক্তির জন্য চ্যালেঞ্জ। আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই। সে কারণে সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে দলের মনোনয়ন দিতে হবে। ’
তারা বলেন, বর্তমান সংসদে অনেক এমপি রয়েছেন, যাদের ইমেজ তলানিতে গেছে। দলের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ‘আত্মীয় লীগ’ গড়ে তোলায় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। আগামীতে তাদের মনোনয়ন দিলে দলের লোকজনই ভোট কেন্দ্রে যাবে না। কাজেই গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির খোঁজ করা হচ্ছে।
Posted ১:২২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta