কক্সবাংলা ডটকম(১৮ অক্টোবর) :: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের আয়করসংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই মধ্যে গত ৩ অক্টোবর এনবিআরের করনীতি শাখা থেকে বিভিন্ন কর অঞ্চলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সম্ভাব্য প্রার্থীর স্ত্রী বা স্বামী ও সন্তানদের আয়কর রিটার্নের তথ্যও সমান গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করা হবে। কোনো করখেলাপি যাতে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন এবং একই সঙ্গে রাজস্ব আদায়ের কৌশল হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন বড় একটি ইস্যু। নিয়মিত আদায়ের বাইরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এনবিআর বাড়তি রাজস্ব আদায়ে মনোযোগী হয়েছে। এনবিআর কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এ কাজ করছে না। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অন্যতম উদ্দেশ্য।’
এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নতুন নতুন কৌশল গ্রহণে এনবিআর চেষ্টা করছে।
’ তিনি আরো বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম এরই মধ্যে পত্রিকা, টেলিভিশনে এসেছে। এর বাইরেও অনেকে প্রার্থী হবেন।
এনবিআরের বিভিন্ন কর অঞ্চলের অধীনে কয়েকটি করে আসন আছে। এসব আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা করে তাঁদের রাজস্ব পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। এনবিআরের এ কার্যক্রমের ফলে কোনো করখেলাপি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে রিটার্ন জমা দিতে দেরি করেন বা তাড়াহুড়া করে রিটার্ন জমা দেন। এতে অনেক সময়ে প্রকৃত তথ্য-প্রমাণ সংযুক্ত করা সম্ভব হয় না। এনবিআর থেকে এসব ব্যক্তির আসন্ন নির্বাচনের আগে কর পরিশোধের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হলে তাঁরা সঠিক হিসাবে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। করখেলাপি হবেন না। এতে এনবিআরের আদায়ও বাড়বে।’
করনীতি শাখা থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, করখেলাপি ব্যক্তিদের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে এনবিআর তৎপর হয়েছে। বর্তমান সংসদ সদস্যদের অনেকে আবারও প্রার্থী হবেন। অনেক আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নতুন ব্যক্তিদের নাম
সংবাদমাধ্যমে আসছে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান সংসদ সদস্য ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সমান গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের রাজস্ব পরিশোধ বিষয়ক তথ্য খতিয়ে দেখতে হবে। একই সঙ্গে এসব ব্যক্তির স্ত্রী বা স্বামী ও সন্তানদের রিটার্নের তথ্য সমান গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করতে হবে।
চিঠিতে গত তিন বছরের আয়কর রিটার্নের তথ্য খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন এমন ব্যক্তিদের রাজস্ব পরিশোধের তথ্য খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের কর্মকর্তাদের নিয়ে টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করতে হবে।
টাস্কফোর্স কমিটিতে ন্যূনতম তিনজন সদস্য রাখতে হবে। সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাঁদের স্ত্রী বা স্বামী ও সন্তানদের রিটার্নে আয়-ব্যয়ের তথ্যে গরমিল পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নটি তথ্য-প্র্রমাণসহ এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলে (সিআইসি) পাঠাতে হবে।
সিআইসির কর্মকর্তারা গরমিল পাওয়া রিটার্ন ও তথ্য-প্রমাণ আরো বিস্তারিতভাবে তদন্ত করে দেখবেন। এ ক্ষেত্রে আয়-ব্যয়ের তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজস্ব আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠিয়ে করখেলাপি ব্যক্তির সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে।
Posted ৯:৩০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta