কক্সবাংলা ডটকম(১২ ডিসেম্বর) :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মাঠপর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে। আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে অবস্থান করবে। নির্বাহী হাকিম নিয়োগসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে দুই দিন পর পর্যন্ত সশস্ত্রবাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমান) সদস্যরা থাকবেন মাঠে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কমিশনের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র ব্ষিয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইসি সূত্র জানায়, আগামী ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন মাঠে নামবে সেনাবাহিনী। তবে এর আগে ১৫ তারিখ থেকে পরিস্থিতি অবলোকন (রেকি) করবেন তারা। সেনাবাহিনীর প্রতিটি টিমের সঙ্গে থাকবেন একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট। ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মেদ খানের সই করা এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বুধবার (১২ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠকে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা কতদিন মাঠে অবস্থান করবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এরই মধ্যে বাহিনীগুলোর সঙ্গে বেশকিছু বৈঠক হলেও আগামীকাল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
এরই মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এর আওতায় আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সূত্রে উল্লিখিত (১)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী সূত্রে উল্লিখিত (২)-এর মাধ্যমে সারাদেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে পাশাপাশি নির্বাচনি এলাকার সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধের জন্য ভোটগ্রহণের দুই দিন আগে থেকে ভোটগ্রহণের দুই দিন পর পর্যন্ত, অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন।
একইসঙ্গে ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন থেকে ১ জানুয়ারি, ২০১৯ পর্যন্ত মোতায়েন করা সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, ব্যাটলিয়ান আনসারের মোবাইল/ স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের প্রয়োজন হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনি এলাকাভিত্তিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
ইসি সূত্র জানায়, বরাবরের মতো এবারও ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন। এর আগে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও তাদের একইভাবে মোতায়েন করেছিল ইসি। যদিও ২০০৮ সালে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। ওই সময়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও)-তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরে তা বাতিল করা হয়।
দশম সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ১৫ দিন মাঠে ছিল। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
ফৌজদারি বিধির আলোকে মোতায়েন করা সেনাবাহিনী ২০১৪ সালের নির্বাচনে মূলত স্ট্রাইকিং বা রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় একটি ব্যাটালিয়ন (৭৪০ সদস্য) ও প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন (৩৫ জন) সেনা সদস্য দায়িত্ব পালন করে।
Posted ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta