মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার চাপে দিশাহারা মানুষ

বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০১৭
490 ভিউ
জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার চাপে দিশাহারা মানুষ

কক্সবাংলা ডটকম(২ নভেম্বর) :: জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বল্পআয়ের মানুষ। ৬০ টাকা কেজির নিচে কোনো ধরনের সবজি নেই, এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা, চালের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো অনেক বেশি। এছাড়া গত এক বছরে গ্যাসের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়নোর জন্য কয়েকদিন আগেই শেষ হয়েছে গণশুনানি।

এ অবস্থায় নিম্নবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তদের মধ্যেও হতাশা বাড়ছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ভারসাম্য রাখতে কাটছাঁট করতে হচ্ছে প্রতিদিনের বাজার তালিকা। তারা বলছেন, ব্যয় এতটাই বেড়েছে যে জীবন চালানোই দায় হয়ে পড়েছে!

রাজধানীর কাওরানবাজার এলাকায় ভ্যান চালান আমজাদ। মূলত সবজি পরিবহনের কাজ করেন। দৈনিক সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আয় করেন। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম শুধু বাড়তাছে, কমতাছে না। গত এক বছরে আমার আয় একই আছে। কিন্তু ঘরভাড়া থেকে খাওয়াখরচ সব ধরনের ব্যয়ই বেড়েছে। জমানোতো দূরের কথা, ধার করে দেশের বাড়িতে পরিবারের জন্য টাকা পাঠাতে হয়।’

একই কথা জানালেন বেসরকারি চাকরিজীবী বেলায়েত মন্ডল। তিনি রাজধানীর উত্তরায় বসবাস করেন, অফিস মতিঝিলে। তিনি বলেন, ‘উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে দুই বছর আগে বাস ভাড়া লাগত ২০ টাকা। আর এখন লাগে ৪০ টাকা।

একইভাবে গত দুই বছরের ব্যবধানে ১৩ হাজার টাকা বাড়িভাড়া এখন দিতে হচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা। সন্তানদের স্কুলের বেতন-ভাতাও বেড়েছে, বেড়েছে গ্যাস-বিদ্যুতের বিলও। কিন্তু আমাদের আয় কি বেড়েছে?’

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর হিসেবে গত এক বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ১৬০ শতাংশ, আদা ৫২ শতাংশ, খোলা সাদা আটা ৯ শতাংশ, বোতলজাত সয়াবিন তেল ৮ শতাংশ, মুগ ডাল ২৮ শতাংশ, খাসির মাংস ২৬ শতাংশ, গরুর মাংশ ১৭ শতাংশ ও ইলিশ মাছের দাম ১৫ শতাংশ বেড়েছে। চালের দাম কমার কথা বলা হলেও সংস্থাটির হিসেবে এখনো তা গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবির হিসেবে উল্লেখযোগ্য নিত্যপণ্যের মধ্যে বর্তমানে মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা, সরু চাল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা, আটা ২৮ থেকে ৩৪ টাকা, ময়দা ৩৪ থেকে ৪৪ টাকা, ১ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন ১০৪ থেকে ১০৯ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, মুগ ডাল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৮৫ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংশ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাস্তবে বাজারে অধিকাংশ পণ্যই এরচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে গত ৮ বছরে (২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল) রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৭১ শতাংশ। ক্যাবের এই হিসাব ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবার তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে।

এতে শিক্ষা, চিকিত্সা ও প্রকৃত যাতায়াত ব্যয় বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ক্যাব’র হিসেবে, ওই সময়কালে এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম প্রায় ৯৩ শতাংশ, পানির দাম ৫৬ শতাংশ এবং প্রতি কিলোমিটার বাসভাড়া ৪৫ শতাংশ বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র সভাপতি ড. গোলাম রহমান বলেন, ‘লাগামহীনভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। চালের দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো অনেক বেশি। পেঁয়াজের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়াতে পারে। এজন্য সরকারের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। কেউ কারসাজি করে দাম বাড়ালে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এদিকে দেড় বছরের ব্যবধানে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গত ১ মার্চ থেকে কার্যকর হয় এ দাম। বর্ধিত দর অনুযায়ী আবাসিক গ্রাহকদের বর্তমানে সিঙ্গেল চুলার জন্য ৭৫০ টাকা এবং ডবল চুলার জন্য ৮০০ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে।

আগে সিঙ্গেল চুলার জন্য ৬০০ টাকা ও ডাবল চুলার জন্য ৬৫০ টাকা দিতে হতো। সবচেয়ে বেশি ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে মিটারভিত্তিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম। এর আগে সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিল।

লাফিয়ে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি:

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মাসিক ভিত্তিতে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) প্রণয়ন করে। তাদের হিসেবে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছেই। বিবিএস-এর সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২১ ভাগ। শহরে এই হার ৫ দশমিক ৯৫ ভাগ।

গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ দশমিক ২ ভাগে দাঁড়িয়েছে। একমাস আগে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৮৯ ভাগ ছিল। তার আগে জুলাই মাসে ছিল ৫ দশমিক ৫৭ ভাগ। মূলত চাল, মাংস, শাক-সবজি, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতির উপর চাপ বেড়েছে।

অন্যদিকে পরিধেয় বস্ত্রাদি, জ্বালানি, বিদ্যুত্, বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র ও গৃহস্থালি, চিকিত্সা সেবা ও পরিবহন খরচও মাস ভিত্তিতে বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতি বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, অতি বৃষ্টির জন্য খাদ্য উত্পাদন ও সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। চলতি মাস থেকে মূল্যস্ফীতির হার কমে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সম্প্রতি দেশে বন্যা হয়ে গেল। এতে উত্পাদন ব্যাহত হয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রোহিঙ্গা সমস্যা। এজন্যও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বাজারে সরকারের কঠোর তদারকি করা উচিত। কারণ অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে আমাদের ভোক্তাদের সংগঠিত হওয়া উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদী হবে না। সামনে আমন ও পরে বোরো আবাদ ভালো হলে চালের দাম কমবে।

490 ভিউ

Posted ২:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com