মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

টার্কি’র পরিচিতি

মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮
748 ভিউ
টার্কি’র পরিচিতি

কক্সবাংলা ডটকম(৩১ জুলাই) :: ব্রয়লার, হাঁস, মুরগি, কোয়েলসহ পোলট্রির ১১টি প্রজাতির মধ্যে টার্কিও একটি। পাখিটির মাংস যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকর। টার্কি সর্বপ্রথম গৃহে পালন শুরু হয় উত্তর আমেরিকায়। কিন্তু বর্তমানে ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে পাখিটি কম-বেশি পালন করা হচ্ছে। মোটামুটি সারা বিশ্বেই এখন টার্কির মাংস বেশ জনপ্রিয়।

আজ পর্যন্ত যেসব দেশেই টার্কি পালন হয়েছে, তার প্রতিটিতেই জনগণের মাংস ও প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখছে পাখিটি। অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির মাংসে পুষ্টিগুণ বেশি। এতে প্রোটিন বেশি, চর্বি কম। পশ্চিমা দেশগুলোয় টার্কি বেশি জনপ্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড ও ব্রাজিলে সবচেয়ে বেশি টার্কি পালন করা হয়।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই টার্কি গৃহপালিত পাখি হিসেবে পালন করা হয়। বাংলাদেশে এখনো খুব একটা পরিচিতি পায়নি পাখিটি। দেখতে মুরগির মতো হলেও আকৃতিতে বৃহৎ পাখিটির মাংস এখনো সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। যদিও দেশে এখন ব্যক্তি উদ্যোগে টার্কি পালনের জন্য বেশকিছু ছোট-মাঝারি খামার গড়ে উঠেছে।

ইলেকট্রনিক মিডিয়া আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বেকার যুবকদের অনেকেই টার্কি পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কিছু কিছু খামার থেকে টার্কির মাংস রফতানির চেষ্টা চলছে। অচিরেই এ পাখির মাংস দেশের রফতানি অর্থনীতিতে অবদান রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টার্কি মেলিয়াগ্রিস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এক ধরনের বড় আকৃতির পাখি। উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে ইউরোপীয়রা প্রথম দেখা পেয়েছিল পাখিটির। এক সময় পাখিটি ছিল মূলত বুনো ধরনের। পোষ মানানোর পর থেকে পাখিটি স্থান করে নিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের গৃহে বা খামারে। তবে মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভো প্রজাতির বুনো টার্কি উত্তর আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলে বসবাস করে। গৃহপালিত টার্কিও মূলত এ প্রজাতিরই হয়ে থাকে।

এছাড়া মেলিয়াগ্রিস ওসেলাটা বা চক্ষু আকৃতির চিহ্নবিশিষ্ট বুনো আরেক জাতের টার্কির আবাসস্থল হচ্ছে ইউকাতান উপদ্বীপের বনাঞ্চল। বাচ্চা অবস্থায় এগুলো দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো।

বিশ্বের সর্বত্র টার্কি গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীরা সনাতন ধারায় থ্যাংকসগিভিং ডের ছুটির দিনে টার্কি ভোজন করে। এছাডা ইউরোপীয় দেশগুলোয়, বিশেষত খ্রিস্টীয় পর্বের আহার-অনুষ্ঠানে টার্কি খাওয়া হয়।

টার্কি উৎপাদন মূলত মৌসুমভিত্তিক হলেও সারা বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি খাওয়া হয়। মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভো জাতের টার্কি উত্তর আমেরিকায় খেলাধুলার বিনোদনে ব্যবহার করা হয়।

ইউরোপীয়রা প্রথমবারের মতো আমেরিকা মহাদেশে টার্কি দেখতে পাওয়ার পর ভুলবশত একে এক ধরনের গিনি মুরগি (নুমিডা মেলিয়াগ্রিস) ভেবেছিল। ইউরোপীয়দের সঙ্গে প্রথম দেখা হলেও ব্রিটিশদের আগে মধ্যপ্রাচ্যের অধিবাসীরাই পাখিটিকে সফলভাবে পোষ মানিয়েছিল। পরবর্তীকালে তুরস্ক থেকে মধ্য ইউরোপ হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে পাখিটি। গিনি মুরগি বা গিনিফাউলকে টার্কিফাউল নামেও ডাকা হয়। এ থেকেই টার্কি তার বর্তমান নামটি পেয়েছে।

পাখিটির নামকরণের পেছনে আরেক মত হলো, প্রথম দিকে তুরস্ক থেকে ইংল্যান্ডে টার্কি রফতানি করা হতো। আমদানি উেসর নামে পাখিটিকে টার্কি নামে ডাকতে শুরু করে ব্রিটিশরা। ধারণা করা হয়, ১৫৫০ সালে উইলিয়াম স্ট্রিকল্যান্ড নামের এক ইংরেজ নাবিক পাখিটিকে প্রথম ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন।

টার্কি পাখি মুক্ত ও আবদ্ধ— উভয় পদ্ধতিতেই পালন করা যায়। টিন, ছন, খড়ের ছাদ দেয়া ঘর বা কংক্রিট দালান— যেকোনো স্থানেই পাখিটি পালন করা সম্ভব। টার্কি সাধারণত পানির কাছাকাছি এলাকায় থাকতেই বেশি পছন্দ করে। ফসলের বীজ, পোকামাকড় ও মাঝে মধ্যে ব্যাঙ কিংবা টিকটিকি খেয়েও এরা জীবনধারণ করে। গৃহপালিত বা খামারে পালিত টার্কি মূলত ঘাস ও শাকসবজি খেতেই পছন্দ করে বেশি। একটি পূর্ণবয়স্ক টার্কির দিনে ১৪০-১৫০ গ্রাম খাবার দরকার হয়। এর মধ্যে অন্তত ৪ হাজার ৪০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ ক্যালরি নিশ্চিত করতে হয়। খামারিদের জন্য টার্কির মোট খাবারের ৫০ ভাগ সবুজ ঘাস ও শাকসবজি (পালং, সরিষা, কলমি, হেলেঞ্চা, সবুজ ডাঁটা, কচুরিপানা) রাখার সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া ব্রয়লার বা লেয়ার মুরগির খাবারও এরা খায়। শাকে অনেক সময় কীটনাশক থাকে। তাই শাক দেয়ার আগে এগুলোকে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। এরপর তা কেটে খাওয়াতে হয়। টার্কির খাবার সরবরাহের জন্য দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়— ম্যাশ ফিডিং ও পিলেট ফিডিং। অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির খাবারে ভিটামিন, প্রোটিন, আমিষ ও খনিজের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি নিশ্চিত করতে হয়। এছাড়া এদের কোনোভাবেই মাটিতে খাবার সরবরাহ করার সুযোগ নেই। সবসময় এদের পরিষ্কার পানি দিতে হয়।

অন্যান্য পাখির তুলনায় টার্কির রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশি। তবে এর মধ্যেও পাখিটির পক্স, সালমোনেলোসিস, কলেরা, রানিক্ষেত, মাইটস ও এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার (বার্ড ফ্লু) মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনা যায়। এছাড়া পরিবেশ ও খামার অব্যবস্থাপনার কারণেও অনেক সময় রোগ সংক্রমণ হতে পারে। রোগাক্রান্ত পাখিকে কোনো অবস্থায়ই টিকা দেয়া যাবে না বলে খামারিদের উদ্দেশে সুপারিশ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। এছাড়া নিয়মমাফিক, পরিচ্ছন্ন খাদ্য ও খামার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক রোগবালাই এড়িয়ে চলা সম্ভব।

সাধারণত ৩০ সপ্তাহ বয়স থেকে টার্কি ডিম দেয়া শুরু করে। প্রতিটি স্ত্রী টার্কি প্রতিবারে আট থেকে ১৫টি ছোট ছোট দাগের বাদামি বর্ণাকৃতির ডিম পাড়ে। ডিমের আকার আমাদের দেশের হাঁসের ডিমের আকৃতির হয়। ২৮ দিন অন্তর ডিম ফুটে বাচ্চা টার্কি জন্মায়। প্রয়োজনীয় আলো-বাতাস, পরিষ্কার পানি ও খাবার সরবরাহ করা হলে একেকটি টার্কি বছরে ৮০-১০০ ডিম দিতে পারে। ৬০-৭০ শতাংশ টার্কি সাধারণত বিকালে ডিম পাড়ে।

টার্কি ব্রয়লার মুরগির চেয়েও অনেক দ্রুত বাড়ে। টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ অনেক কম। কারণ এরা দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি শাক, ঘাস, লতাপাতা খেতেও পছন্দ করে। টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, চর্বি কম। তাই পাখিটির মাংস গরু কিংবা খাসির মাংসের বিকল্প হতে পারে। টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, বি৬ ও ফসফরাস থাকে। এ উপাদানগুলো মানবশরীরের জন্য ভীষণ উপকারী এবং নিয়মিত এ মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়। এছাড়া টার্কির মাংসে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও ট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। টার্কির মাংসে ভিটামিন ই অধিক পরিমাণে থাকে। টার্কির মাংস পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাংসের চাহিদা মেটানোয় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

যাদের অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত মাংস খাওয়া নিষেধ অথবা যারা নিজেরাই এড়িয়ে চলেন, কিংবা যারা গরু কিংবা খাসির মাংস খান না, টার্কি তাদের জন্য উত্তম একটি বিকল্প হতে পারে। দেখা গেছে, গরুর মাংসে চর্বির পরিমাণ ২ দশমিক ৬ শতাংশ, মহিষে দশমিক ৯, খাসিতে ৩ দশমিক ৬ ও ভেড়ায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ। এর বিপরীতে টার্কিতে চর্বির হার শূন্য শতাংশ।

গরুর মাংসে প্রোটিন রয়েছে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, মহিষে ১৯ দশমিক ৪, খাসিতে ২১ দশমিক ৪ ও ভেড়ার মাংসে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে টার্কির মাংসে প্রোটিন রয়েছে ২০-২৫ শতাংশ। তাই ডায়াবেটিস ও হূদযন্ত্রের সমস্যাজনিত রোগে যারা ভোগেন, তারা অনায়াসে টার্কির মাংস খেতে পারেন। টার্কির রোগবালাই তেমন একটা নেই।

তবে রানিক্ষেত, কলেরা, বার্ড ফ্লু ও পক্সের আগাম ভ্যাকসিন দিতে হয়। খাবার হিসেবে প্রধানত পতিত জমিতে উত্পন্ন দেশী-বিদেশী ঘাস ও ঘাসজাতীয় সবজি এবং মাঝে মধ্যে বাজারের খাবার দেয়া হয়।

টার্কির খামারে সাধারণত ইনকিউবেটরের মাধ্যমে তাপ দিয়ে বাচ্চা ফোটানো হয়। ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ২৮ দিনেই এর ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করা যায়। এছাড়া বর্তমানে দেশী মুরগির মাধ্যমেও টার্কির ডিম ফোটানোর ব্যবস্থা রয়েছে।

দেশের বিভিন্ন খামার থেকে একদিনের একেকটি বাচ্চা ৩০০ টাকা, প্রতিটি ডিম ১০০ টাকা ও একেকটি পরিণত টার্কি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। খামারে পুরুষ ও স্ত্রী টার্কির অনুপাত ১:৪ অথবা ১:৫ থাকলেই চলে। ২০ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি পুরুষ টার্কির গড় ওজন হয় ৬-৭ কেজি ও স্ত্রী টার্কির ৩-৪ কেজি। তবে পুরুষ পাখি বাজারজাতের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো ১৪-১৫ সপ্তাহ। স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে এ সময় ১৭-১৮ সপ্তাহ। পূর্ণাঙ্গ পুরুষ টার্কির মাথা ন্যাড়া থাকে। মাথা উজ্জ্বল লাল রঙের হয়। কখনো কখনো সাদা কিংবা উজ্জ্বল নীলাভ রঙের হয়ে থাকে। পুরুষ টার্কি গবলার বা টম নামেও পরিচিত।

এগুলো গড়ে লম্ব্বায় ১৩০ সেন্টিমিটার বা ৫০ ইঞ্চি হয়। গড়পড়তা ওজন ১০ কেজি বা ২২ পাউন্ড হতে পারে। কিন্তু স্ত্রী টার্কি সাধারণত পুরুষ টার্কির তুলনায় ওজনে অর্ধেক হয়। বুুনো টার্কি আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে দ্রুত গা-ঢাকা দিতে পারে। গৃহপালিত টার্কি তেমন একটা উড়তে সক্ষম না হলেও বুনো টার্কি স্বল্পদূরত্বে উড়তে পারে।

বাংলাদেশে টার্কি:

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টার্কির মাংস রফতানি সে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ব্রাজিল ২০১৫ সালে ১ লাখ ৩২ হাজার ৯০০ টন টার্কির মাংস রফতানি করে। টার্কির সবচেয়ে পছন্দের খাদ্য সবুজ ঘাস, শাক ও লতাপাতা, যা বাংলাদেশে সহজলভ্য। বর্তমানে দেশে ছোট-বড় অনেক খামার গড়ে উঠছে। বলা চলে, অচিরেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও টার্কির মাংস রফতানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশেষ করে নিরাপদ বাচ্চা উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়াগুলো সহজলভ্য করে তোলার মতো বিষয়গুলোয় সরকারি পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থায়ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার করলে এবং মাংস হিসেবে উৎপাদন করতে চাইলে ১৪-১৫ সপ্তাহে একেকটি টার্কির গড় ওজন ৫-৬ কেজিতে তুলে নেয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি ৪০০ টাকা দরে হিসাব করলে একেকটি টার্কির বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। অন্যদিকে ১৪-১৫ সপ্তাহ পালন করতে একেকটি টার্কির পেছনে সর্বোচ্চ খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে একটি টার্কি থেকে কমপক্ষে ৫০০ টাকা লাভ করা সম্ভব। বর্তমানে ছোট আকারের খামার করার যে চাহিদা দেশব্যাপী তৈরি হয়েছে, তাতে আগামী তিন-চার বছরে কয়েক লাখ টার্কির প্রয়োজন হবে। দেশের বাজারে বর্তমানে বয়স ও রঙভেদে টার্কির জোড়া ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে কেনাবেচা হচ্ছে।

দেশে মূলত কয়েকটি কারণে টার্কি পালন দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। বিশেষ করে মাংস উৎপাদনক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ার পাশাপাশি সুস্বাদু হওয়ায় এটি পালন ব্যাপকভাবে লাভজনক। তাছাড়া এটি ঝামেলাহীনভাবে দেশী মুরগির মতো পালন করা যায়। এটি পালনে মুরগির বিভিন্ন প্রজাতি, যেমন ব্রয়লার, কক ও সোনালি প্রজাতির চেয়ে খরচ তুলনামূলক কম। একটি টার্কি দিনে মাত্র ৫ টাকার ১২০ গ্রাম খাবার (পোলট্রি ফিড) খায়। পাশাপাশি কলমিশাক, ঘাস, কচুরিপানা ও বাঁধাকপিও এদের পছন্দের খাবার।

টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির শোভাবর্ধন করে। এতে তরুণরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে বিদেশ ফেরত অনেক তরুণ এ টার্কি পালন করে লাভবানও হচ্ছেন। যদিও শুরুটা তারা করছে শৌখিন পেশা হিসেবে। কিন্তু মুনাফা ও পালন প্রক্রিয়ায় জটিলতা না থাকায় এটিকেই পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। বাণিজ্যিকভাবে পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। আর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের স্থানীয় অফিসের মাধ্যমে এ ধরনের টার্কি ব্যবসায়ীদের পশু-পাখি পালন ও রোগে আক্রান্ত হলে সেবা দেয়া হচ্ছে। যার কারণে দেশে ১৫ হাজারের বেশি খামার এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে।

সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

বাংলাদেশে টার্কি পালনে আগ্রহীদের জন্য সুখবর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেশ লাভজনক এ পাখি পালনের জন্য আগ্রহীদের এখন থেকে ঋণ দেয়া হবে। খামারিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ও পল্লীঋণের নতুন নীতিমালায় এ পাখি পালনে ঋণ দেয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালাটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, টার্কি পালনে উন্নত অবকাঠামো দরকার হয় না। তুলনামূলক খরচও কম। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে খামার করে টার্কি পালনে লাভবান হচ্ছেন খামারিরা। এটি মাংসের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। তাই এ খাতে ঋণসহায়তা দেয়া যেতে পারে।

নীতিমালায় বলা হয়, একদিন বয়সের টার্কির বাচ্চা ক্রয় করে পালনের জন্য ব্যাংকগুলো এখন থেকে ঋণ দেবে। তবে টার্কি পালনের জন্য ঋণ নিতে হলে খামারির নিজস্ব জমি থাকতে হবে এবং সেখানে শেড নির্মাণ করতে হবে। এক হাজার টার্কি পালনে ব্যাংক সর্বোচ্চ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ দিতে পারবে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ঋণগ্রহীতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী খামারিদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতারা ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড পাবেন। ঋণগ্রহীতাকে ৩৬ থেকে ৫৪ মাসের মধ্যে (গ্রেস পিরিয়ডসহ) ঋণ সমন্বয় করতে হবে। ব্যাংকের শাখাগুলো এ খাতে ঋণের তথ্য সংরক্ষণ করবে। প্রয়োজনবোধে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী তা সরবরাহ করা হবে। এক হাজার টার্কির বাচ্চা পালনে অবকাঠামোগত ব্যয়ের জন্য গৃহীত এ ঋণ কৃষিঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

748 ভিউ

Posted ১১:০৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com