হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ(১৭ ফেব্রুয়ারী) :: টেকনাফে ঐতিহাসিক ইয়াবা কারবারীদের আতœসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রত্যেক এলাকার ইয়াবা কারবারী আতœসমর্পণের অংশ নিলেও এখনো মাদকের নিরাপদ জোন হিসেবে খ্যাত হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কোন মাদক কারবারী আতœসমর্পণ করেনি। বরং এই ঐতিহাসিক দিনে ইশতেমাগামী বাস হতে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি উক্ত এলাকার এক পাচারকারী হাতে-নাতে আটকের পর জনমনে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এই জাতীয় ঘটনা আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি উক্ত এলাকার মাদক গডফাদারদের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৭টায় র্যাব-১৫ কক্সবাজারের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লিংক রোড়ে বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে যানবাহন তল্লাশীকালে কক্সবাজার হতে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনে তল্লাশীর সময় এক ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়া পরিচয় দিলেও মুলত কম্বনিয়া পাড়ার দুদু মিয়ার পুত্র সরওয়ার আলম প্রকাশ সোনাইয়া (২৮)কে আটক করে।
আটক ব্যক্তির স্বীকারোক্তিতে বাসের মধ্যে অভিনব কায়দায় ইয়াবা লুকানো গ্যাস সিলিন্ডার উদ্ধার করে। যা গণনা করে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ সরওয়ার আলমকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মাদক আইনে মামলা দায়েরের পর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সোর্পদ করা হয়েছে।
ঐদিন টেকনাফে ঐতিহাসিক ১শ ২জন মাদক কারবারীদের আনুষ্ঠানিক আতœসমর্পণের ক্ষণ না কাটতেই অভিনব কায়দায় হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সুরক্ষিত মাদক কারবারীদের বিরাট একটি চালান আটক করে র্যাব সদস্যরা চৌকষের পরিচয় দিয়েছেন।
টেকনাফের মানুষ যখন মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে কাঁেধ কাঁধ মিলিয়ে মাদক নির্মূলের শপথ নিলেন ঠিক সেই দিনেই এখন টেকনাফের একমাত্র নিরাপদ স্বর্গরাজ্য ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের আস্তানা হিসেবে পরিচিতি হোয়াইক্যং কম্বনিয়া পাড়া, পশ্চিম মহেশখালীয়া পাড়া, কাচার পাড়া, সাতঘরিয়া পাড়া, পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়ার মাদক কারবারীরা কি তাহলে চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করছে বলে প্রশ্ন উঠছে।
ইয়াবা চোরাকারবারীদের বসুন্ধরা নগরী হিসেবে পরিচিত এই এলাকার ৯০-৯৫% পরিবারের কোন না কোন সদস্য এই কারবারে জড়িত। দূর্গম সীমান্ত হতে মাদকের বড় বড় চালান খালাসের সঙ্গে সঙ্গে পাহাড়ী টিলায় হাওয়া হয়ে যায়। খারাংখালী বাজার হতে জমায়েতকৃত মাদকের চালান পর্যন্ত বসানো হয়েছে ভাড়াটে দিয়ে নিরাপদ নিশ্চিদ্র ভারী অস্ত্রের স্বশস্ত্র প্রহরী।
তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোন বাহিনী অভিযানে যাওয়ার পূর্বেই তথ্য ফাঁস হওয়ায় বরাবরই এই এলাকার মাদক কারবারীরা ধরা-চোয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকায় অপরিচিত কেউ গেলে ইয়াবা পাহারাদারদের নিকট কৈফিয়ত দিতে হয়।
এসব এলাকার কতিপয় ব্যক্তি বাহিরে লোক দেখানো মাদক বিরোধী কথা বললেও আসলেই সবই সিন্ডিকেটভূক্ত সদস্য বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এদিকে বেড়িবাঁধে কতিপয় ঘাট দালাল সক্রিয় থাকায় হ্নীলা হোয়াব্রাং, মৌলভীবাজার, খারাংখালী, নয়াবাজার, ঝিমংখালী, মিনা বাজার, নয়াপাড়া, কাঞ্জরপাড়া, ঊনছিপ্রাং, লম্বাবিল, হোয়াইক্যং বাজার, বালুখালী, খারাইগ্যাঘোনা, উলুবনিয়া, বরইতলী এলাকায় মুখোশের আড়ালে চিহ্নিত মাদক কারবারীরা বরাবরই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিরাপদ রয়েছে।
এলাকার সচেতনমহল ও সুধী সমাজ, অত্র ইউনিয়নের মাদক অধ্যূষিত পাহাড়ী জনপদে সাড়াঁশি অভিযান চালানোর দাবী জানিয়েছে।
Posted ৯:০৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta