রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশের তৈরি পোশাকের রফতানি কমছে

বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০১৯
163 ভিউ
দেশের তৈরি পোশাকের রফতানি কমছে

কক্সবাংলা ডটকম(৫ নভেম্বর) :: চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমেছিল তৈরি পোশাকের রফতানি। পতনের এ ধারা অব্যাহত পরের মাসেও। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) তৈরি পোশাক রফতানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে গেছে। একইভাবে কমেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানিও। সব মিলিয়ে অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সামগ্রিক রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে হালনাগাদ রফতানি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। ওই পরিসংখ্যানেই রফতানি কমার এ তথ্য উঠে এসেছে। রফতানি কমার কারণ হিসেবে ডলারের বিপরীতে টাকার অতিমূল্যায়নকে বড় করে দেখছেন নীতিনির্ধারক ও রফতানি খাতসংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, প্রতিযোগী দেশগুলো ডলারের বিপরীতে নিজেদের মুদ্রা অবমূল্যায়ন করেছে। এর ফলে তাদের মূল্য সক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে অনেক ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে না এসে প্রতিযোগী দেশগুলোতে চলে যাচ্ছে। ক্রয়াদেশ ঘাটতিতে পণ্য রফতানি, বিশেষ করে তৈরি পোশাকের রফতানি কমছে।

দেশের রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক থেকে। ইপিবির হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পোশাক পণ্য রফতানি হয়েছে ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের। ১ হাজার ২০২ কোটি ৯২ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পণ্য রফতানি হয়েছে। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তো বটেই, আগের অর্থবছরের প্রথম চার মাসের তুলনায়ও সাড়ে ৬ শতাংশের বেশি কমেছে তৈরি পোশাকের রফতানি। যদিও গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পোশাক রফতানিতে ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।

ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার কারণেই পোশাক রফতানিতে এ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি বলে জানান পোশাক রফতানিকারকরা। আগামী কয়েক মাসও হয়তো ক্রয়াদেশ কম থাকবে জানিয়ে তারা বলেন, ক্রয়াদেশের ন্যায্য অংশ পাচ্ছে ভিয়েতনাম। এছাড়া পাকিস্তান ও ভারতেও ক্রয়াদেশ সরে যাচ্ছে। সবগুলো দেশই এ খাতের রফতানিতে প্রণোদনা ও বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, আমরা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাচ্ছি। গত চার বছরে ব্যয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশগুলো তাদের মুদ্রা অবমূল্যায়ন করলেও আমাদের মুদ্রা এখনো শক্তিশালী। নীতিনির্ধারকরা বসে যদি কৌশল নির্ধারণ না করেন, তাহলে গভীর সমস্যায় পড়তে হবে খাতটিকে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য শুধু নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে শিল্প টিকিয়ে রাখার স্বার্থেও কৌশল নির্ধারণ জরুরি। এত বিপুল পরিমাণ ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট নিয়ে আমরা কম রফতানির ঝুঁকি নিতে পারি না। তাই আমাদের বিকল্প ও সৃজনশীল সমাধানে আসতে হবে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ওভেন ও নিট দুই ধরনের পোশাক রফতানিতেই ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে বেশি কমেছে ওভেন পণ্যের রফতানি। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ওভেন পণ্য রফতানি হয়েছে ৫০৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। এ রফতানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম। এছাড়া এ সময়ে নিট পোশাক রফতানি হয়েছে ৫৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ কম।

নিট পণ্য উৎপাদকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে নিট পণ্যের অধিকাংশ ক্রয়াদেশ পাকিস্তানে চলে গেছে। আর ওভেনের অধিকাংশ ক্রয়াদেশ চলে যাচ্ছে মিয়ানমারে। চীনারা এখন মিয়ানমারে শিল্প করছে। এরই মধ্যে সেখানে বেশকিছু শিল্প হয়েও গেছে। সেখানে তারা ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করছে। ফলে বাংলাদেশের ওভেন ও নিট দুই পণ্যেরই ক্রয়াদেশ কমে গেছে।

পোশাকের পাশাপাশি কমেছে অন্য প্রধান খাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানিও। ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি ৮ শতাংশের বেশি কমেছে। তবে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি। তার পরও অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সামগ্রিক রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়েছে মোট ১ হাজার ২৭২ কোটি ১২ লাখ ডলারের পণ্য। গত অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে পণ্য রফতানি হয়েছিল ১ হাজার ৩৬৫ কোটি ১৭ লাখ ডলারের। এ হিসাবে মোট রফতানি কমেছে ৬ দশমিক ৮২ শতাংশ।

এ পরিস্থিতিতে যেভাবেই হোক তৈরি পোশাক তথা রফতানি খাতের দুরবস্থা কাটাতে হবে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  তিনি বলেন, টাকার অ্যাডজাস্টমেন্ট হতে পারে। আমি ডিভ্যালুয়েশন বলতে চাই না, রিভ্যালুয়েশন দরকার। আমরা যেহেতু আমদানিনির্ভর দেশ, তাই বিকল্প পথ খোঁজা হচ্ছে; যাতে করে আমদানির ওপর প্রভাব কম পড়ে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী  সভা আহ্বান করা হয়েছে। অর্থ সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্ট নেতারা থাকবেন সেখানে। খাতসংশ্লিষ্টরা সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরবেন। এখন যা হচ্ছে তার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কী হতে পারে, তা-ও বলবেন তারা। সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

ইপিবির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাস ছাড়া কখনই রফতানিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়নি। ২০১০-১১ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে রফতানিতে ৩৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। পরের অর্থবছরও ২০ দশমিক ৭৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল রফতানিতে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে রফতানি প্রবৃদ্ধি কমলেও ঋণাত্মক হয়নি।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে আবারো দুই অংকের ঘরে ১৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় রফতানিতে। এরপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশের নিচে ছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে ৪ দশমিক ৯৫ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয় রফতানিতে। ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে যথাক্রমে ৭ দশমিক শূন্য ৩ ও ১৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়।

163 ভিউ

Posted ৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com