রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশের শীর্ষ ২০ গ্রাহকের খেলাপি ঋণের ঝুঁকিতে ৪০টি ব্যাংক

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯
167 ভিউ
দেশের শীর্ষ ২০ গ্রাহকের খেলাপি ঋণের ঝুঁকিতে ৪০টি ব্যাংক

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ ডিসেম্বর) :: ভালো ব্যাংকগুলোর অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। গতিশীল ব্যাংক গতি হারাচ্ছে, ব্যবসা হারাচ্ছে। আর এই খারাপ পরিস্থিতির পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে ব্যাংকের মাত্র ২০ গ্রাহক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৭ শতাংশই আটকে রেখেছেন শীর্ষ ২০ গ্রাহক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, কোনও কোনও ব্যাংকের ৮১ ভাগ ঋণই নিয়েছেন শীর্ষ ঋণগ্রহীতা। এ ধরনের গ্রহীতার ঋণখেলাপি হওয়ার প্রবণতাও বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের ঝুঁকিতে পড়েছে ৪০টি ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোর ঝুঁকিতে পড়ার পেছনেও বড় ভূমিকা রয়েছে শীর্ষ ২০ গ্রাহকের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, তাদের পকেটেই রয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার কোটি টাকা যা ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের প্রায় অর্ধেক। কারণ, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। এই সময়ে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ৫৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ছিল ৪০ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে পাওনা বেড়েছে ১৪ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা।

সাধারণত, বাংলাদেশের পেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অর্থাৎ ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী, কোনও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে থাকলে তা সহনীয় ধরা হয়। কিন্তু ৫ শতাংশের ওপরে হলেই সেটাকে অসহনীয় বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সরকারি ও বিশেষায়িত ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৯টিই রয়েছে খেলাপি ঋণের ঝুঁকিতে। আর ৪১টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ২৯টি ব্যাংক এখন খেলাপি ঋণের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিদেশি ৯টি ব্যাংকের মধ্যে দু’টি ঋণ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ঝুঁকির মুখে পড়া কোনও কোনও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪০ থেকে ৮৫ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গুটিকয়েক ব্যক্তির কাছে পুরো ব্যাংক খাত এখন জিম্মি। শীর্ষ ২০ গ্রাহক যদি ব্যাংকের টাকা ফেরত দেন তাহলে নতুন নতুন গ্রাহক ঋণ পাবেন। এতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। সুদের হারও কমে আসবে।’ তিনি জানান, খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণেই সুদহার কমছে না। এজন্য প্রত্যেক ব্যাংকের শীর্ষ ২০ গ্রাহকের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায় বাড়ানো জরুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের মতে, খেলাপি ঋণ তখনই আদায় হবে যখন ব্যাংকে সুশাসন থাকবে। সুশাসন থাকলে প্রভাবশালীরাও টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হবে। আর শীর্ষ ২০ গ্রাহক তখনই টাকা ফেরত দেবেন যখন দেখবেন যে, পার পাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। টাকা মেরে দেওয়ার কোনও পথ নেই। এজন্য ব্যাংক খাতে সুশাসন থাকা জরুরি।

জানা গেছে, কোনও ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেশি হলে সেই ব্যাংককে বর্ধিত হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। বর্ধিত হারে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে আয় কমে যায়। একইসঙ্গে প্রভিশন ঘাটতিও দেখা দেয়। আর প্রভিশন ঘাটতির পাশাপাশি মূলধন ঘাটতি দেখা দেয়। মূলধন ঘাটতি হলে সামগ্রিক ঝুঁকির মুখে পড়ে যায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে মোট খেলাপি ঋণের ৪৩ শতাংশই ছিল শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে। এখন শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে আটকা রয়েছে ৪৭ শতাংশ খেলাপি ঋণ। প্রসঙ্গত, তিন মাস পর প্রত্যেক ব্যাংকের শীর্ষ খেলাপিদের তালিকা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর প্রতি প্রান্তিকেই ব্যাংকগুলোর কাছে শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে খেলাপি আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আদায়ের ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখা যায় না।

অবশ্য শীর্ষখেলাপি ও ঋণ গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঋণ আদায় বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। চলতি বছরের মাঝামাঝিতে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে খেলাপি ঋণ নিবিড় তদারকি করতে সব ব্যাংকের একজন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (ডিএমডি) প্রধান করে একটি বিশেষ তদারকি সেল গঠন করতে বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে আদায় বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এজন্য প্রত্যেক ব্যাংকে একটি তদারকি কমিটিও আছে। তারা এ নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া শীর্ষ খেলাপিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ২১ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে জনতা ব্যাংকের। এর মধ্যে শীর্ষ ২০ খেলাপি আটকে রেখেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের মোট ১২ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের মধ্যে ২৮ দশমিক ৫০ শতাংশই আটকে আছে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে। রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে আটকা রয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৫৪ শতাংশই শীর্ষ ২০ খেলাপির কাছে আটকা।

167 ভিউ

Posted ১২:৫৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com