তোফায়েল আহমেদ(২৬ মার্চ) :: এ সময়ে মনে হয় গুজবের কদর বেড়ে যায়। না হলে এমন একটি চির সত্য বিষয়টি নিয়েও গুজবের রং দিয়ে ছড়ানো কেন হয় ?
গতরাতে (বৃহষ্পতিবার রাত) খেতে বসেছি। এমন সময় আমারই পারিবারিক সদস্য (ভ্রাতুষ্পুত্রের স্ত্রী) আমার স্ত্রীকে মোবাইল দিয়ে জানাল-বিষয়টি কাজের বুয়া জানাতে বলেছে।
এক কথা নিয়ে দুইজনকে আলাদা ভাবে মোবাইল করলে তার অহেতুক টাকা খরচ হবে। তাই তা থেকে রেহাই পেতেই সংবাদটি পৌঁছে দিতে বলা।
আমরাও পরষ্পর একই ভবনে থাকি। তবে পৃথক ফ্ল্যাট। দুই বাসায় দুইজন কাজের বুয়া। তারা দুইজনই বর্তমান পরিস্থিতি জনিত কারনে সাময়িক ছুটিতে রয়েছে। দুইজনের বাড়ীই হচ্ছে গাইবান্ধা জেলায়। আমার স্ত্রীকে বলা হল- গাইবান্ধায় এক নবজাতক ভুমিষ্ট হবার পরই পরিষ্কার ভাষায় কথা বলেছে।
নবজাতক বলেছে-কেবল তিনটি বাক্য। আর তা হচ্ছে- ‘এ পরিস্থিতিতে মধু, কালিজিরা ও আদা খেতে হবে।’ এ টুকু বলেই নবজাতক না ফেরার দেশে চলে গেছে।
কেনা জানে কালিজিরা সকল অসুখের মহাঔষধ। কেনা জানে মধু তার চেয়েও আরেক মহাঔষধ। সেই সাথে আদাও মানুষের জন্য অত্যন্ত উপকারি। এ সবতো চিরসত্য। কিন্তু সেই কথাটি খাটিখামোকা এক নবজাতকের মুখ থেকে বের করতে হবে কেন ?
অর্থাৎ নবজাতক কথা বলতে পারে না। এখন যদি এসব নিয়ে কথা বলানো যায় তাহলে একটু ‘অলৌকিক ভাব’ আসে। তাই রং চটিয়ে গাইবান্ধার সেই গুজব খানি কক্সবাজারে এভাবেই ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
গাইবান্ধা থেকে এ গুজব শেষ হতে না হতেই কক্সবাজারের সেন্টমার্র্টিন্স থেকে কুতুবদিয়া এবং পাশর্^বর্তী সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা থেকে আসতে শুরু করল আরেক গুজব। এ গুজব হচ্ছে ভুমিকম্প গুজব এবং নারিকেল গাছের পাতা সাদা হবার ঘটনা।
মধ্যরাত ১২ টায় নাকি ভুমিকম্প হবে এ কারনে মসজিদে মসজিদে আজান দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে হিন্দু পল্লীতে উলুধ্বনি দেয়া হয়। অনেক লোকজন মধ্যরাতেই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। চারিদিকে যেন এক মহা হুলস্থুল।
এ যাবতকালেও ভুমিকম্পের আগাম সতর্ক সংকেত দেয়ার যন্ত্র বের হবার কথা আমার জানা নেই। কিন্ত কি করে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে তা বুঝা গেল না।
লেখক : তোফায়েল আহমদ (সিনিয়র সাংবাদিক)
দৈনিক কালের কন্ঠ ও এসোসিয়েট প্রেস(এপি)
Posted ৩:২০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ মার্চ ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta