কক্সবাংলা ডটকম(২৫ ফেব্রুয়ারী) :: প্যারোল আবেদন করে মুক্তি নিতে পরিবারের প্রচন্ড চাপে আছেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে দলীয় প্রধানের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা নিয়ে কোনো রাজনীতি করা পছন্দ করছেন না বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীও। সঙ্গত কারণে এতদিন খালেদা জিয়া প্যারোলের ঘোর বিরোধী থাকলেও এখন এ ব্যাপারে তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় বলে জানা গেছে।
সূত্র মতে, জামিনে মুক্তি না মিললে প্রয়োজনে প্যারোলেই তাকে মুক্ত করে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে- এমন প্রস্তুতিও আছে পরিবারের। এজন্য গ্রহণযোগ্য শর্তেও তাদের দ্বিমত থাকবে না। কারণ খালেদা জিয়ার শারীরিক দুরবস্থা আর সহ্য করতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্যারোলের ব্যাপারে খালেদা জিয়া ঘোর বিরোধী অবস্থানের মধ্যেই সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাকে বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। আর বোন সেলিমা ইসলাম বিদেশে চিকিৎসার জন্য প্যারোলে
হলেও মুক্তির দাবি প্রকাশ্যেই করেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে খালেদা জিয়াও সম্মত হবেন বলেও গণমাধ্যমকে সেলিমা ইসলাম জানিয়েছেন।
পরিবার ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২১ ফেব্রম্নয়ারি স্বজনরা সাক্ষাৎ করে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি দেখেছেন। খালেদা জিয়ার দুই হাত বাঁকা হয়ে গেছে। নিজ হাতে খেতে পারছেন না। সাক্ষাৎকালে খালেদা জিয়ার চোখের পানি পড়তে দেখেছেন স্বজনরা। এতদিন খালেদা জিয়া প্যারোলের ঘোর বিরোধী থাকলেও এখন এ ব্যাপারে তার অবস্থান কিছুটা নমনীয় বলে স্বজনরা মনে করছেন। তবে এখনো প্যারোলের আবেদনের ব্যাপারে শতভাগ রাজি হননি বিএনপি প্রধান। প্যারোল হলেও কোনো অসম্মানজনক শর্তে রাজি হবেন না বিএনপি চেয়ারপারসন।
বিএনপি সূত্র মতে, দলের নেতাকর্মীরাও দলীয় প্রধানের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা নিয়ে কোনো রাজনীতি করা পছন্দ করছেন না। দলীয় প্রধানের মুক্তির প্রয়োজনে সব পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত রয়েছে তাদের। তবে পরিবারকে সামনে রেখেই অগ্রসর হতে চান বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
এদিকে দলের নীতি-নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেছেন। নতুন করে আইনি লড়াইসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতা ওবায়দুল কাদের ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মধ্যে চলমান আলোচনা ছাড়াও মুক্তির জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্যারোলে মুক্তির আবেদনের বিষয়ে দলীয় অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এটা একান্তই বিএনপির চেয়ারপারসন ও তার পরিবারের বিষয়।
খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন এবং জিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ দলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, প্রথমে জীবন। বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসা প্রয়োজন। বেঁচে থাকলে তার সুযোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে আবারো ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। কিন্তু কোনো অঘটন ঘটলে দল আরও বিপর্যয়ে পড়বে। দুই বছর জেল খেটে আপোষ না করে আপোষহীন চরিত্রের পরীক্ষায় বিএনপি নেত্রী আবারো উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এই নেতা আরও বলেন, রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে প্যারোলে মুক্তির ইতিহাস অনেক বড় রাজনীতিবিদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে। যদি এই কৌশল মঙ্গলের জন্য হয় তা গ্রহণে দোষ কোথায়।
Posted ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta