সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার: আবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বিএনপি ?

শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭
318 ভিউ
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার:  আবার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বিএনপি ?

কক্সবাংলা ডটকম(১৮ নভেম্বর) :: দলীয় সরকারের নির্বাচন হলে আবারও তা বর্জনের সিদ্ধান্ত কথা হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে। দাবি পূরণ না হলে আবারও ২০১২-১৩ সালের মতো আন্দোলনে যেতে পারে দলটি। তবে এই বার্তা এখনও সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দলটির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পৌঁছেনি।

অবশ্য আওয়ামী লীগ মনে করে, নিজেদের বৈঠকে জোট নেতারা যাই বলুন না কেন, নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে যাওয়ার অবস্থা বিএনপির নেই।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন এর আগেও এক দফা ব্যর্থ হয়েছে। সরকার কেন তবে এই দাবি মেনে নেবে, সে প্রশ্নের জবাব নেই জোট নেতাদের কাছে। আবার দাবি আদায়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে, সে বিষয়েও সুস্পষ্ট ধারণা নেই তাদের কাছে।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, গত বুধবার জোটের বৈঠকে তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শরিক দলের নেতাদেরকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে শরিক দলের নেতারাও একই কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান বলেন, ‘আমরা সবসময় বলে আসছি দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এখনও সেই অবস্থানে আছি।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির আগ্রহী নেতারা গত কয়েক মাস ধরেই এলাকায় যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। আবার বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে সহায়ক সরকারের দাবি সামনে নিয়ে আসা, নির্বাচনকে সামনে নিয়ে নানা দাবি তোলা দলটির আগামী নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল।

এর মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ একাধিক আলোচনায় নেতা-কর্মীদেরকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন, বলেছেন যে কোনো পরিস্থিতিতে তারা ভোটে যাবেন।

তবে এর মধ্যে জোটের নেতাদের বৈঠক পরিস্থিতি পাল্টে দেয় অনেকটাই। ওই বৈঠকে ২০১৪ সালের মতোই আবারও কঠোর অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জোট নেতারা।

এ বিষয়ে আহমদ আযম খান বলেন, ‘এটাকে কঠোর অবস্থান বা নরম অবস্থান বলা যাবে না। চেয়ারপারসন আমাদের অবস্থান জানিয়েছেন। এখন সময় আছেম এর মধ্যে সরকার দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা দেখার আছে। আর সেটা না করলে বিকল্প হলো আন্দোলন।

কিন্তু দুই দফা আন্দোলন করে খালি হাতে ঘরে ফেরা বিএনপির পক্ষে সরকারকে কি টলানো সম্ভব হবে? আহমদ আযম খান বলছেন, ‘অতীতে বিএনপির আন্দোলন সরকার ব্যর্থ দাবি করলেও আমরা মনে করি সফল হয়েছি। কারণ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দলীয় সরকারের নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাই আমাদের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই এমন দাবি করার সুযোগ কোথায়?’।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি ও তার শরিকরা। কিন্তু তাদের সহিংস আন্দোলনের মুখেও ওই বছরের ৫ জানুয়ারি দেশের ১৫৭ নির্বাচনী এলাকায় ভোট নেয়া হয়। আর তার আগেই ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান। আর ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশে বিরোধীদের বর্জনের মুখে এর আগেও নির্বাচন হয়েছে তিন বার। প্রথমবার ১৯৮৮ সালে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোর বর্জনের মুখে নির্বাচন হয়। কিন্তু ভোটের পর জাতীয় পার্টির সরকার টিকতে পারেনি দুই বছরও।

১৯৯৬ সালের ১৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মুখে নির্বাচন করে বিএনপি। তাদের সরকারও টিকতে পারেনি, দুই সপ্তাহের আগেই আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার। বিরোধী দলগুলোর বর্জনের মুখে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগও বেশিদিন টিকতে পারবে না বলে আশা ছিল বিএনপির।

কিন্তু আওয়ামী লীগের সরকার দেশ পরিচালনা করতে থাকে স্বাভাবিকভাবেই। আর নির্বাচনের এক বছর পূর্তিতে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি সরকার পতনের ‘চূড়ান্ত’ আন্দোলনের ডাক দেন বিএনপি-জামায়াত জোট নেত্রী। এবারও সহিংস আন্দোলনের মুখে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার কৌশল নেয়া হয়। কিন্তু আগেরবারের মতোই ব্যর্থ হয় এই আন্দোলন। আর বিএনপি অনেকটাই নমনীয় অবস্থানে যেতে বাধ্য হয়।

এর মধ্যে ২০১৬ সালের শেষের দিকে খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে একটি রূপরেখা নিয়ে হাজির হন। সেদিন তিনি স্বাধীন নির্বাচন কমিশনকে সহায়তার জন্য সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেয়ার কথা জানান।

এরপর থেকে বিএনপি নেতারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে সহায়ক সরকারের কথা বলতে থাকেন। কিন্তু এই সরকার কেমন হবে, এক বছরেও সেই রূপরেখা দিতে ব্যর্থ হয় দলটি। পরে বিএনপি আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানাতে থাকে।

এর মধ্যে গত রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি সহায়ক সরকারের দাবির বিষয়ে কিছু বলেননি খালেদা জিয়া।

কী করবে বিএনপি?

বিএনপির নেতারা বলছেন, তারা সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসে একটা সিদ্ধান্তে আসতে চান। এ জন্য সমঝোতার কথা বলতে থাকবেন তারা। পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলতে থাকবে।

সরকারের সঙ্গে সমঝোতার সুযোগ তৈরি না হলে ধাপে ধাপে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাচায় বিএনপি। এজন্য চলতি বছরের মধ্যে সাংগঠনিক কমিটিগুলোর কাজ শেষ করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, গুম-খুনসহ সরকারের নানা বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে জনমত গড়ে তুলতে কাজ করবে দীর্ঘদিন ধরে সংসদের বাইরে থাকা দলটি।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দাবি আদায় করতে হলে আপনাকে আন্দোলন করতে হবে। সে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি চলছে বলা যায়। সভা-সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষকে আমরা জাগ্রত করতে চাই।’

মাহবুব বলেন, ‘আমরা আশা করি সরকার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় অতীতের মতো আন্দোলনের বিকল্প থাকবে না। প্রয়োজনই সেদিকে আপনাকে নিয়ে যাবে।’

বিএনপি কি আগের মতোই হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দেবে?- এমন প্রশ্নে সাবেক সেনাপ্রধান বিএনপি নেতা বলেন, ‘আন্দোলন মানেই লাঠি-সোটা নিয়ে মারামারি করতে হবে বিষয়টি এমন নয়।’

আওয়ামী লীগ যা বলছে

গত কয়েক বছর ধরে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলে আসছেন, বিএনপির পক্ষে নির্বাচন বর্জনের সুযোগ নেই। আন্দোলন করে দুই দফায় ব্যর্থতার পর তৃতীয় দফায় এসে একই ধরনের কর্মসূচিতে যাওয়া সহজ হবে না বলেই মনে করছেন তারা। আবার নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন অনুযায়ী পরপর দুইবার নির্বাচন বর্জন করলে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। তাই সে ঝুঁকি নেয়া বিএনপির পক্ষে সম্ভব নয়।

গত সোমবারও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বিএনপির পক্ষে এবার নির্বাচন বর্জন করা সম্ভব নয়। তাও যদি তারা নির্বাচনে না আসে, তাহলে সরকার আগের মতোই নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ  বলেন, ‘আমরা মনেকরি যত যাই বলা হোক না কেন, বিএনপি নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে।’

‘যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি আবার বর্জন করে নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন করে?’-এমন প্রশ্নে হানিফ বলেন, ‘যে কোন রাজনৈতিক দলই তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে, কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে সরকার তা কঠোরহস্তে দমন করবে।’

বিএনপির নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবির বিষয়ে হানিফ বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার শুধু তাদের নিয়মতান্ত্রিকভাবে সহায়তা করবে। নির্বাচন নিয়ে সংবিধানে যে নির্দেশনা আছে এর ব্যত্যয় ঘটবে না।’

318 ভিউ

Posted ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com