সোমবার ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নির্বাচন পর্যবেক্ষণের তালিকায় ৭৩টি এনজিও!

শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
23 ভিউ
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের তালিকায় ৭৩টি এনজিও!

কক্সবাংলা ডটকম(১ নভেম্বর) :: প্রতিটা নির্বাচনে জাতীয় পর্যবেক্ষকের তালিকা হলেই বেশিরভাগ বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) নামে নানা অভিযোগ ওঠে।

অনুসন্ধানে উঠে আসে—তাদের বেশিরভাগেরই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের কোনও অভিজ্ঞতা বা দক্ষতা নেই। কিংবা এমন অনেক প্রতিষ্ঠানেরও হদিস মেলে, যাদের কোনও অফিসও নেই।

তারপরও কেন এসব প্রতিষ্ঠা পর্যবেক্ষক হতে চায়।

নির্বাচন বিশ্লেষক, অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—এই প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে ডোনারদের কাছে, স্থানীয় নেতাদের কাছে পরিচিতি পেতে চায়।

একইসঙ্গে সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুনাম বাড়লে ভবিষ্যতে প্রকল্প বা অনুদান পাওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।

নির্বাচনকালীন ছোট ফান্ড পেলে তার বেশিরভাগ খরচ না করে কীভাবে নামেমাত্র প্রতিবেদন দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা তাদের থাকে।

এমনকি তাদের কেউ কেউ আবার নির্বাচন পর্যবেক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটাকে ‘উপভোগ’ করার বিষয় হিসেবে গণ্য করে পর্যবেক্ষকের তালিকায় নাম লেখাতে চান।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের মূল দায়িত্ব হলো—নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু রাখতে সহায়তা করা। যাতে ভোটগ্রহণ ও গণনার সময় কোনও অনিয়ম বা অনৈতিক প্রভাব না পড়ে।

তারা একইসঙ্গে নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করবে ও ভোটগ্রহণের দিন পর্যবেক্ষণের পর প্রতিবেদন প্রস্তুত করে থাকেন।

ওই প্রতিবেদনে নির্বাচন কতটা স্বাধীন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ছিল—তার বিশ্লেষণ ও সুপারিশ থাকে।

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নীতিমালা শুধু দেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে জানানো হয়।

আবেদনের যোগ্যতা অংশে বলা হয়েছে, ‘‘বেসরকারি সংস্থা যারা গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবে।’’

আর অযোগ্যতা অংশে বলা হয়েছে, ‘‘নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তি বা যারা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী, এমন কেউ যদি সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধন পাবে না।

আবেদনকারী সংস্থাকে অবশ্যই হলফনামা দিতে হবে যে তাদের প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কোনও সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।’’

নির্বাচন কমিশন থেকে এ পর্যন্ত ৭৩টি আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হলেও সেটা এখনও চূড়ান্ত নয় বলেও জানানো হয়েছে।

যদিও এই তালিকা প্রকাশের পরপরই সেটাতে অনেক প্রতিষ্ঠান ‘যোগ্যতা’ না থাকার সমালোচনার মুখে পড়েছে।

এমনও একাধিক প্রতিষ্ঠানের খোঁজ মিলেছে যে—নিবন্ধনের জন্য জমা দেওয়া আবেদনপত্রে তারা যে ঠিকানা উল্লেখ করেছে, সেখানে গিয়ে তাদের অফিসের খোঁজ মেলেনি।

আবার কোনোটার খোঁজ মিললেও সেটা এতই ছোট প্রতিষ্ঠান, যাদের আসলে এই কাজটি করা এবং নির্বাচনের পর একটি কার্যকর প্রতিবেদন তৈরির কোনও দক্ষতা নেই।

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন পেয়েছে ঝিনাইদহের তিনটি সংস্থা। এদের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জাতীয়ভাবে খ্যাত কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাদে বেশিরভাগের ওয়েবসাইট বিশ্লেষণে দেখা যায়, কাজের প্রধান জায়গা দক্ষতা উন্নয়ন, বৃত্তিমূলক ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ।

এছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, আয় সৃজন, স্বনিযুক্তি ও কর্মসংস্থান, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও বিনোদনমূলক কার্যক্রম, ন্যায়বিচার নিয়ে তারা কাজ করে থাকে।

কয়েকটি সংস্থার লক্ষ্য অংশে লেখা—বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত জনগণের সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি প্রকৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে সামগ্রিক সম্প্রদায়ভিত্তিক যত্ন ও সহায়তা বৃদ্ধি করা।

দিনটা উদযাপন আর এনজয় করাও উদ্দেশ্য

পর্যবেক্ষক হতে আগ্রহী ঢাকার বাইরের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে কারণ জানতে চাইলে তারা— নির্বাচনের দিনটি উদযাপন করতে চান, এনজয় করার জন্য, কখনও কোনও ডোনার না পেয়েও বারবার আবেদন করেছেন, ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে ঘুরে ঘুরে দিনটা কাটাতে পর্যবেক্ষক হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।

নরসিংদীর ‘অগ্রগতি সেবা সংস্থা’ নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক নিবন্ধন তালিকায় রয়েছে।

সংগঠনটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জামাল হোসেনের কাছে তাদের পর্যবেক্ষক হতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এটা আনন্দে করি। একটা উৎসব, নির্বাচন কেমন হচ্ছে দেখবো।’’

তিনি জানান, তারা গত বছরও পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন। কোনও ডোনার ছিল না, এবার ডোনার পেতে চেষ্টা করছেন। নিজ অর্থে কেন এই কাজ করতে চান প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘এনজিও স্বেচ্ছাশ্রম দেয়। আমরা রাজনীতির বাইরে থাকি, নির্বাচনের দিন ঘুরে ঘুরে নির্বাচন দেখি।’’

বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মনির হোসেন বলেন, ‘‘দিনটা উদযাপনের জন্য সঙ্গে থাকতে চাই।’’ তিনি জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনে পর্যবেক্ষকের তালিকায় ছিলেন, ২০২৪ সালে নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় তিনি পর্যবেক্ষণ করেননি। এবার আবারও থাকতে চান। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় দফায় যাচাই-বাছাই করতে তার কাগজ চাওয়া হয়েছে।

মনির হোসেন বলেন, ‘‘কোন কারণে আবারও তদন্ত করতে আমার অফিসে লোক এসেছিল, আমি সব কাগজ দিয়েছি, এখন দেখা যাক।’’ তিনি নিজ অর্থায়নে কাজটি করেন বলে দাবি করেন।

কেন সবাই পর্যবেক্ষক হতে চায় প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘আগে এসবে টাকা পয়সা ছিল, এখন সেটা আছে বলে মনে হয় না। এটা সাধারণত দেশর স্বার্থে করার কথা, যাতে নির্বাচনে কারচুপি না হয়।

কিন্তু কেউ কেউ দলীয় প্রার্থীদের পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, সেটা যদিও কাম্য নয়। নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে যেন এসব বিষয়ে খেয়াল রাখে।’’

তিনি বলেন, ‘‘পর্যবেক্ষকের যথেচ্ছাচারের ব্যাপারটা এরশাদের আমলে শুরু হলেও ধীরে ধীরে পরবর্তীকালে তার গুণগত মান আরও কমেছে। এটাকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’’

উল্লেখ্য, জাতীয় নির্বাচনে কতজন নির্বাচনি পর্যবেক্ষক দরকার হবে—তার নির্দিষ্ট কোনও স্থায়ী সংখ্যা বলে দেওয়া হয় না। এটি জনসংখ্যা ও ভোটারের সংখ্যা, ভৌগোলিক এলাকা, নির্বাচনের ধরন (জাতীয়, স্থানীয়, উপনির্বাচন ইত্যাদি) এসবের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশীয় পর্যবেক্ষক ছিলেন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার জন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক ছিলেন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষক অনুমোদন দেয় ইসি।

এদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্ব পান।

23 ভিউ

Posted ২:১০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30 

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com