শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নৌকার প্রার্থীদের ঘুম হারাম : ‘দলীয়’ স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় বিশৃঙ্খলার শঙ্কা

মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
36 ভিউ
নৌকার প্রার্থীদের ঘুম হারাম : ‘দলীয়’ স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় বিশৃঙ্খলার শঙ্কা

কক্সবাংলা ডটকম(২৮ নভেম্বর) :: বিএনপি ও তাদের মিত্ররা ভোটে না আসার সিদ্ধান্তে অনড়। এ কারণে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়াতে এবং ভোটের আমেজ ধরে রাখতে নির্বাচনে কৌশলী অবস্থানে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে দলটি প্রতি আসনে ডামি প্রার্থী রাখার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছে।

দলের হাইকমান্ডের এমন অবস্থানের কারণে এবার ভোটের মাঠ ছাড়তে নারাজ মনোনয়নবঞ্চিতরা। ইতোমধ্যে দলের মনোনয়নবঞ্চিত দুই ডজন বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখা এমপিদের বিরুদ্ধে লড়তে অনড় অনেক প্রার্থী। সব মিলিয়ে সারা দেশের প্রায় প্রতিটি আসনেই ক্ষমতাসীন দল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইসি থেকে মনোনয়নপত্রও কিনতে শুরু করেছেন অনেকেই।

ফলে প্রধান প্রতিপক্ষ মাঠে না থাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এবার নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ঘরের প্রার্থীরাই। এ নিয়ে টেনশনে আছেন দলের অনেক প্রার্থী।

এছাড়া আওয়ামী লীগ যে ২৯৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, তাদের সবাই যে শেষ পর্যন্ত নৌকা নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন এমন নয়। কারণ, জোট শরিক ও অন্য দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা ও ছাড় দেওয়ার বিষয়টি এখনো ফয়সালা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে, তারা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করবে। এর সঙ্গে রয়েছে তাদের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টি। ভোটে আনার সমীকরণে নতুন ও ছোট কয়েকটি দলকেও আওয়ামী লীগ আসন ছাড়তে পারে বলে আলোচনা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ফয়সালা করবেন। শরিক ও মিত্রদের সঙ্গে আসন ছাড়ের এই অঙ্কেও ছাড় দিতে হবে অনেককেই। সব মিলিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেয়েও টেনশন কাটছে না আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। তারা যত সহজে নির্বাচনে পাশের চিন্তা করেছিলেন বাস্তবে ততটা সহজ হবে না বলে অনেকেই মনে করছেন।

সবমিলিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলের হয়ে লড়তে প্রতীক পেলেও স্বস্তিতে নেই তারা। অনেক আসনেই বিদ্রোহী প্রার্থীর চোখ রাঙানিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন না মনোনয়ন পাওয়া অনেক মন্ত্রী-এমপি। এ ছাড়া যারা নৌকা পেয়েছেন বিশেষ করে ১৪-দলীয় জোটের শক্তিশালী প্রার্থীদের আসনে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন সমঝোতার কারণে তাদের নৌকা ছাড়তে হতে পারে।

আবার বিএনপি যদি ভোটে আসার ঘোষণা দেয় সে ক্ষেত্রে যে কোনো মুহূর্তে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হয়ে যাওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রেও নৌকা থেকে নামতে হতে পারে অনেক প্রার্থীর। সব মিলে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী ও জোটের ছাড়ের শঙ্কার কারণে টেনশনে রয়েছেন নৌকার মাঝিরা।

গত রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৮টির দলীয় চূড়ান্ত প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। গত দুই নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় ১০৪ আসনেই নতুন মুখ আনা হয়েছে। বাদ পড়েছেন তিন প্রতিমন্ত্রীসহ বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের সর্বাধিক ৭১ জন সদস্য। গতকাল চূড়ান্ত প্রার্থীদের ‘নৌকা’ প্রতীক বরাদ্দের চিঠি বিতরণ করা হয়েছে। নৌকা প্রতীকের চিঠি হাতে পেয়ে নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় ছুটছেন।

কিন্তু অনেক প্রার্থীরই নতুন করে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মনোনয়নবঞ্চিত এমপি-নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায়।

জানা গেছে, অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকলেও এবারের বাস্তবতার কারণে বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রে কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখাবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতেই কৌশলী অবস্থান থেকে এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে দলের মনোনয়নবঞ্চিত দুই ডজন বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখা এমপিদের বিরুদ্ধে লড়তে অনড় অনেক প্রার্থী। বিশেষ করে এমপিদের পরিবারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন খোদ দলীয় নেতা-কর্মীরা। কিছু কিছু এমপি-মন্ত্রী এলাকায় নিজস্ব ‘শাসনতন্ত্র’ কায়েম করেছেন। এ শাসনতন্ত্র থেকে মুক্ত হতে এবার নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করছেন একাধিক নেতা।

অন্যদিকে বিএনপি যদি ভোটে না আসে তাহলে প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াতে পারে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। শেষ পর্যন্ত দল কঠোর না হলে অনেক হেভিওয়েট এমপি-মন্ত্রীর কপাল পুড়বে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জয়ের রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে বলে মাঠ পর্যায়ে আভাস পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ‘১৪-দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করব। আমরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছি। এটা আমাদের দলের প্রার্থী তালিকা। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুব তাড়াতাড়ি জোট শরিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।’

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শাহজাহান ভূইয়া। গতকাল তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি ওই পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।

এ ব্যাপারে শাহজাহান ভূইয়া বলেন, রূপগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের আশা রূপগঞ্জের সন্তান রূপগঞ্জের এমপি হবেন। রূপগঞ্জবাসীর আশা-আকাক্সক্ষার মূল্য দিতেই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব। এ ছাড়া মাঠে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় যে কোনো ব্যক্তিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে দলীয় নির্দেশনাও রয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে কুমিল্লা-১ আসনের বর্তমান এমপ সুবিদ আলী ভুইয়া স্বতন্ত্র ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন। এ আসনে নৌকা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর।

হবিগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি মাহাবুব আলী।

ঢাকা-১৯ আসনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

ঢাকা-১৯ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

গাইবান্ধা-২ আসনে এবার নৌকা পেয়েছেন বর্তমান এমপি মাহবুব আরা গিনি। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর।

ঢাকা-২ আসনে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীন আহমেদ। গতকাল তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এ আসনে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

চট্টগ্রাম-১০ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মহিউদ্দিন বাচ্চু। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন মনজুর আলম।

ঢাকা-৫ আসনের বর্তমান এমপি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু স্বতন্ত্র ভোট করবেন বলে জানা গেছে। এ আসনে নৌকা পেয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মুন্না। তাঁর বিরুদ্ধে আরও স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন।

কুমিল্লা-৪ আসনে নৌকা পেয়েছেন বর্তমান এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। এ আসনে তাকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিতে নারাজ দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন।

ঝিনাইদহ-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আবদুল হাই। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল।

ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। এ আসনে স্বতন্ত্র ভোট করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সাবিনা আকতার তুহিন।

ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে যাচ্ছেন শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক খসরু চৌধুরী।

রংপুর-২ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুমনা আকতার লিলি। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী।

ঝালকাঠি-১ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম মনিরুজ্জামন মনির। এ আসনে নৌকা পেয়েছেন বজলুল হক হারুন।

ঝিনাইদহ-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী। এ আসনের বর্তমান এমপি শফিকুল আজম খান চঞ্চল স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঝিনাইদহ-৪ আসনে বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন। এবার এ আসনে স্বতন্ত্র ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব হোসেন। ঝিনাইদহ জেলার চারটি সংসদীয় আসনেই রয়েছে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী। কেন্দ্র থেকে বিদ্রোহীদের চাপ প্রয়োগ না করলে নৌকার মাঝিদের জন্য কঠিন হবে বৈতরণী পার হওয়া।

রাজশাহী-৪ আসনের বর্তমান এমপি এনামুল হক মনোনয়ন না পেয়ে ফেসবুক লাইভে এসে কাঁদলেন। একই সঙ্গে নির্বাচনের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র তুলেছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এর আগে এই অভিনেত্রী নৌকার মাঝি হতে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

আসন দুটির কোনোটিতেই মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাজশাহী-১ আসনে মনোনয়নপত্র তুলেছেন তিনি। সুনামগঞ্জ-১ আসনে বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবার দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া এ আসনে স্বতন্ত্র লড়তে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফরম সংগ্রহ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম আহমদ। এ আসনে এবার নৌকা পেয়েছেন জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জিত সরকার।

সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সচিব ও পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান। এ আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। জোটের হিসেবে এ আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিতে বলে পারে আলোচনা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান।

সুনামগঞ্জ-৫ আসনে এবারও নৌকা পেয়েছেন বর্তমান এমপি মহিবুর রহমান মানিক। এবার স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ চৌধুরী।

নেত্রকোনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি এক সময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মোশতাক আহমেদ রুহী। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সদ্য পদত্যাগী দুর্গাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে ঝুমা তালুকদার।

বাগেরহাট-৩ আসনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন নায়ক শাকিল খান। এ আসনের বর্তমান এমপি উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহ-৩ বর্তমান এমপি নাজিম উদ্দিন আহমেদ এবার মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন। আসনটিতে নৌকার কাণ্ডারি হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলুফার আনজুম পপি। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক বিশেষ সহকারী প্রয়াত মাহবুবুল হক শাকিলের স্ত্রী। নৌকাবঞ্চিত সমালোচিত নাজিম উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রউফ। তারা স্থানীয় নির্বাচন অফিস থেকে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন।

কুষ্টিয়া-১ আসনে নৌকা পেয়েছেন সরওয়ার জাহান ও কুষ্টিয়া-৪ আসনে সেলিম আলতাফ জর্জ।

কক্সবাজার-১ বর্তমান এমপি জাফর আলম মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপিকে।

জামালপুর-৪ আসনে বর্তমান এমপি ডা. মুরাদ হাসান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার পক্ষে গতকাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। তার পক্ষে উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মুখলেছুর রহমান মিশু মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।

নাটোর-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ। নাটোর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুল।

কুমিল্লা-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি সেলিমা আহমেদ মেরী। ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এমপি আবদুল মজিদ।

কুমিল্লা-৫ আসনে এমপি আবুল হাসেম খান এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিপরীতে নির্বাচন করবেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন।

কুমিল্লা-৭ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। সেখানে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু।

বাগেরহাট-৪ আসনে নৌকা পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ। এ আসনে নৌকাবঞ্চিত হয়ে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি এম আর জামিল হোসাইন। জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তিনি।

চট্টগ্রাম-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মাহবুব উর রহমান রুহেল। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন। চট্টগ্রাম-৫ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইউনুস গণি চৌধুরী। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুস সালাম।

চট্টগ্রাম-১১ নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি এম এ লতিফ। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের দুইবারের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।

চট্টগ্রাম-১৫ বর্তমান এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি মোস্তাফিজুর রহমান। এই আসনে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম-২ আসনে ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়ব, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন উপকমিটির মেম্বার মো. শাহজাহান স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখানে নৌকা পেয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার। এখানে ১৪ দলীয় জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি নৌকা নিয়ে এমপি হয়েছেন। জোটের অংকে ছাড় দেওয়া হতে পারে আসনটি।

রাজশাহী-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনবারের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আয়েশা আকতার জাহান ডালিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আকতারুজ্জামান।

রাজশাহী-৩ আসনের বর্তমান এমপি মো. আয়েন উদ্দিন মনোনয়ন পাননি। এ আসনটিতে দল মনোনয়ন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে। ফলে ওই আসনটিতে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বর্তমান এমপি আয়েন উদ্দিন।

রাজশাহী-৫ আসনে মনোনয়ন পাননি বর্তমান এমপি ডা. মনসুর রহমান। ওই আসনটিতে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারাকে। এ আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক মাসুদ।

পিরোজপুর-২ আসনে দলীয় মনেনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কানাই লাল বিশ্বাস। তার মনোনয়ন পরিবর্তন করে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে রবিবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ আসনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে অনেকটাই নিশ্চিত। সংসদীয় আসনের ৩ উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীরা প্রায় সবাই তার পক্ষে একাট্টা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন নব্বইয়ের ছাত্র আন্দোলনের নেতা শফী আহমেদ। ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি সাজ্জাদুল হাসান।  জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকতার কার্যালয় থেকে তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। তার অনুসারীরা এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে নৌকা পেয়েছেন সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি বর্তমানে জামিনে থাকা বহিষ্কৃত পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা হালিমুল হক মিরু।

জানা গেছে, সারাদেশে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এরই মধ্যে মাঠে নেমে গেছে। কোথাও কোথাও মুখোমুখি সংঘর্ষও হয়েছে। একে অন্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মাঠে নামতেও দেখা গেছে। এমতাবস্থায় চৌদ্দ দলের শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন এবং জাপাসহ অন্য বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে সমঝোতা কীভাবে হবে এমন প্রশ্ন তুলেছেন খোদ শরিক দলের নেতারাও। আবার আসনের সমঝোতা হলে বর্তমান প্রার্থীরা মাঠ ছেড়ে চলে গিয়ে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবেন কিনা সে শঙ্কাও করছেন অনেকে।

এর মধ্যে সারাদেশের প্রায় প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নেমে গেছেন। শোডাউন ও পথে পথে সংবর্ধনাও নিচ্ছেন অনেকে। অনেক প্রার্থী জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনও করছেন। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ভোটের মাঠে নেমে গেছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে চৌদ্দ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে সমন্বয় হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জোটের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন দেওয়া আওয়ামী লীগের নিজস্ব এখতিয়ার। কিন্তু চৌদ্দ দল টিকিয়ে রাখতে হলে জোটের মধ্যে আসন বণ্টনের প্রয়োজন রয়েছে।’ তিনি জানান, আসন বণ্টন নিয়ে এখনো আওয়ামী লীগ থেকে প্রস্তাব আসেনি।

এর আগে বাসদ থেকে আওয়ামী লীগের তিনটি ফরম এবং গণ-আজাদী লীগ থেকে একটি সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা এখনও কোনো নিশ্চয়তা পাননি বলে জানা গেছে। জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ যে দুটি আসন বাকি রেখে মনোনয়ন ঘোষণা করেছে তার মধ্যে একটি কুষ্টিয়া-২ আসন। সেখানে হাসানুল হক ইনুকে মনোনয়ন দেওয়া হয় কিনা সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন খালি রেখেছে আওয়ামী লীগ। সেখানে জাতীয় পার্টি নাকি অন্য সব সমমনা দলকে মনোয়ন দেওয়া হবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে, এটা দিতেই পারে। তবে পরবর্তীতে জোটে আসন বণ্টন হলে যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলে ভোটের মাঠে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এদিকে জাতীয় পার্টিসহ অন্যসব দলের মধ্যে এখনো সমঝেতা হয়নি বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, জাতীয় পার্টি একশ আসনের প্রত্যাশা জানিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে বিশটির মতো আসনের সমঝোতায় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এতে তুষ্ট নয় জাপা। তবে যেকোনো সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার একটা সমঝোতা বৈঠক হতে পারে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, আমরা ১৪ দলীয় জোটগতভাবেই নির্বাচন করব। আমরা (আওয়ামী লীগ) আমাদের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছি। এটা আমাদের দলের প্রার্থী তালিকা। এখন শিগগিরই আমাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) জোট শরিকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়াতে ডামি প্রার্থীর কথা বলা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে যেন ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ে।

এমন সিদ্ধান্তে দলের প্রার্থীরা টেনশনে পড়ে গেল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের প্রার্থীদের অসুবিধার বিষয়টি অবশ্যই আমরা দেখব। এখনো তো সময় আছে। ৩০ তারিখ মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। এরপর যাচাই-বাছাই চলবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধন্ত নেব। ফলে এই মুহূর্তে এত চিন্তা করার কিছু নেই। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই লক্ষ্য রাখব।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি ও শরিকরা ভোট বর্জন করায় ওই নির্বাচনে ১৫১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন মহাজোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ১২৭টি আসন, জাতীয় পার্টি ১৮টি, জেপি একটি, জাসদ তিনটি এবং ওয়ার্কার্স পার্টি দুটি আসন পেয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা মহলের সমালোচনা শুনতে হয়েছিল আওয়ামী লীগকে।

ফলে এবার আর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চায় না ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি না এলেও ভোটের মাঠে যত বেশি সম্ভব দল ও প্রার্থীদের আনার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এছাড়া দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করলেও কৌশল হিসাবে স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থীদের মাঠে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এবার ৩০০ আসনের বিপরীতে ৩৩৬২টি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছিল আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড বৈঠক করে দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে।

রোববার বিকালে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার আগে গণভবনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় তিনি বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ পাশ করে আসতে পারবেন না। প্রত্যেক প্রার্থীকেই একজন করে দলীয় ডামি প্রার্থী রাখতে হবে। দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি দলের যে কোনো নেতা বা ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন। কারণ নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুমতি দলের প্রয়োজনে কৌশলগত সিদ্ধান্ত। তিনি আরও বলেন, দল দলের কৌশল ঠিক করে। দলের অবস্থান অনুযায়ী দলের ভবিষ্যৎকে মাথায় রেখে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন এবং সিদ্ধান্ত দেন। নতুন সময়ে নতুন কৌশলও দলকে গ্রহণ করতে হবে। এ সময় যে কৌশল দরকার আমাদের নেত্রী সে কৌশলই ঠিক করেছেন এবং গতকাল (রোববার) তার বক্তব্যে প্রকাশ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের অনেকেই নির্বাচনি মাঠে থেকে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে যারা এবার দলের সমর্থন পাননি তারাও দলের ইতিবাচক অবস্থানের কারণে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্রও কিনেছেন অনেকেই। মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পরেও অনেক নেতার কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করছেন। প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিও করেছেন অনেকেই।

36 ভিউ

Posted ১:৩২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com