কক্সবাংলা ডটকম(৫ এপ্রিল) :: রাজধানী রিয়াদের কিং আবদুল আজিজ শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি পরমাণু চুল্লি নির্মাণ করছে সৌদি আরব। দীর্ঘদিন কেউ এ খবর জানতে না পারলেও সম্প্রতি ‘গুগল আর্থ’-এর স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে তা ধরা পড়েছে। সেই ছবি প্রকাশও করা হয়েছে। আর তার পরেই বিষয়টি নজরে এসেছে পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-র।
এই তথ্য জানার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কী উদ্দেশে গোপনে পরমাণু চুল্লি বানাচ্ছে সৌদি আরব? কেন বিষয়টি আগে থেকে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থাকে জানায়নি সৌদি সরকার?
এদিকে, সৌদি আরবের এমন প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর অতিসত্বর সেখানে পরিদর্শক পাঠানোর দাবি জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেস।
গুগল আর্থ-এর স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ওই পরমাণু চুল্লি বানানোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সেই চুল্লিতে পারমাণবিক জ্বালানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বড় মাপের ‘ভেসেল’ বা পাত্র বানানোর কাজও শেষ হয়েছে।
রিয়াদে গিয়ে সৌদি আরবকে ওই ভেসেল বানানোর কাজ করেছে আর্জেন্টিনার সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘ইনভ্যাপ সে’। ভেসেলটির উচ্চতা প্রায় ৩৩ ফুট। ব্যাস ২.৭ মিটার। উল্লেখ্য, অনেক দেশেই এই ধরনের ভেসেল বানানোর কাজ করেছে আর্জেন্টিনা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতারাতি পরমাণু চুল্লি বানানো সম্ভব নয়। প্রস্তুতি ও নির্মাণকাজ মিলিয়ে এক্ষেত্রে অন্তত ৫ থেকে ৭ বছর সময় লাগে। অথচ, আইএইএ-র এক সাবেক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে এতদিন অন্ধকারেই ছিল আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থাটি।
আইএইএ-র সাবেক কর্মকর্তা রবার্ট কেলি বলেছেন, ‘‘উপগ্রহের পাঠানো ওই সব ছবি পরমাণু চুল্লির সম্ভাবনাই জোরালো করে তুলেছে।’’
উল্লেখ্য, ইরানের পরমাণু অস্ত্র কার্যক্রমের কথা জানার পর গত বছরই পরমাণু বোমা বানানোর হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
গুগল আর্থ সেই নির্মীয়মাণ পরমাণু চুল্লির ছবি প্রকাশ করার পর থেকেই আলোড়ন শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, পরমাণু চুল্লি বানানোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-কে সব কিছু জানাতে বাধ্য থাকে দেশগুলো। যে কোনও পরমাণু চুল্লি বানানোর আগে তার নকশা, উদ্দেশ্য, মেয়াদ, ক্ষমতা, সবকিছুই আইএইএ-কে জানাতে বাধ্য থাকে চুক্তিবদ্ধ পরমাণু শক্তিধর দেশগুলি। কেউ সেই চুক্তি ভেঙে গোপনে পরমাণু চুল্লি বানালে তা আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন বলে গণ্য করা হয়। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি-সহ নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি না করলে কোনও দেশের পক্ষেই পরমাণু চুল্লির জ্বালানি আমদানি করা সম্ভব নয়।
তাই প্রশ্ন উঠেছে, সৌদি কি তার গোপন ইউরেনিয়াম খনিকে জ্বালানির প্রয়োজন মেটানোর জন্য কাজে না লাগিয়ে অন্য কোনও দেশ থেকে ইউরেনিয়াম কেনার চেষ্টা করছে?
Posted ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta