কক্সবাংলা ডটকম(২৯ জুলাই) :: পাকিস্তানের সুপ্রিমকোর্টের রায়ে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণার পর তিনি পদত্যাগ করেছেন। ফলে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব শেষ করার প্রায় এক বছর আগে থমকে গেল নওয়াজের প্রধানমন্ত্রিত্ব। আগামী বছর দেশটির পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রীই ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। অধিকাংশই সামরিক হস্তক্ষেপের শিকার হয়েছেন।
অনেকের পদ থেমে গেছে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে। বাকিরা নিজের দলের মধ্যে আস্থা হারিয়ে, পদত্যাগে বাধ্য হয়ে বা ঘাতকদের হাতে খুন হয়েছেন। নওয়াজের পদত্যাগের পর পাকিস্তানে এখন কী ঘটতে পারে, শুক্রবার তা নিয়ে এএফপি এক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে।
এখন কী ঘটবে :
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যদিও অযোগ্য হয়েছেন নওয়াজ, তবুও তার দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান হিসেবেই থাকবেন তিনি। পিএমএল দেশটির জাতীয় অ্যাসেম্বলিতে বৃহত্তম দল। এখন নওয়াজের একমাত্র কাজ হবে তার অনুগত কাউকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসানো, যাকে পার্লামেন্টের ভোটে অনুমোদিত হতে হবে। পার্লামেন্টের ৩৪২টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ২০৯টি আসনের দখলে রেখেছে নওয়াজের দল ও শরিক দলগুলো। বিরোধীরাও তাদের প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারে। তবে পার্লামেন্ট ভোটে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ভোট হতে কয়েক দিন সময় লেগে যাবে।
কোনো নজির আছে কি :
হ্যাঁ, ২০১২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিও সুপ্রিমকোর্টের রায়ে অযোগ্য ঘোষিত হয়েছিলেন। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা পুনরায় চালু না করায় তার বিরুদ্ধে এ রায় আসে। গিলানির পদত্যাগের পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান হন জারদারি। তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্য কাউকে খোঁজার কাজে নেতৃত্ব দিতে হয়। পরে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে অনুষ্ঠিত ভোটে পিপিপি প্রার্থী রাজা পারভেজ আশরাফ বিজয়ী হন।
আদালতের রায় কি চ্যালেঞ্জ হতে পারে :
জোর সম্ভাবনা রয়েছে এমনটা হওয়ার। নওয়াজের আইনি পরামর্শক দল রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে পারেন। তবে সেটি খুব সীমিত পরিসরে। যেমন- সুপ্রিমকোর্ট ভুল রায় দিয়েছেন, এমন দাবি থেকে এটি হতে পারে। সাংবিধানিক আইনজীবী ইয়াসির লতিফ হামদানি বলেন, ‘সংবিধানের মূল ব্যাখ্যাকর্তা হলেন সুপ্রিমকোর্ট। তাই সুপ্রিমকোর্ট যদি বলেন এটা হবে, তবে সেটাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’
আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা কতটুকু :
এর সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ সাংবিধানিক মতে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন। তবে তার আগে প্রধানমন্ত্রী তার উত্তরসূরি পছন্দ করবেন। তাই ২০১৮ সালের নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে।
সেনা হস্তক্ষেপ কি হতে পারে :
পাকিস্তান জন্মের ৭০ বছরের ইতিহাসে প্রায় অর্ধেক সময়ই দেশটি সামরিক নেতৃত্বের দখলে ছিল। কিন্তু খুব কম ব্যক্তিই প্রত্যাশা করছেন, এবারও সামরিক হস্তক্ষেপ হতে পারে। এরই মধ্যে দেশটির প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতির নিয়ন্ত্রণ করে পাক সেনাবাহিনী। ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক উইলসন সেন্টারের এশিয়ার প্রোগ্রামের ডেপুটি পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘সেনাবাহিনীর এখন আর ক্ষমতা দখলের কোনো ইচ্ছাই নেই।
Posted ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৯ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta