কক্সবাংলা ডটকম(১৩ জুলাই) :: পানামা দুর্নীতি মামলায় এবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের হাতে ধরা সুতোয় ঝুলছে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাগ্য। ওই মামলার তদন্তে গত ১৫ জুন জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন টিম বা জিট গঠন করেছিল ইসলামাবাদ।
গত সোমবার পাক সুপ্রিম কোর্টে তাদের রিপোর্ট জমা দেয় জিট। রিপোর্টে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জেরার পুরো সময়টাই তাঁদের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসহযোগিতা করেছিলেন শরিফ। অনেক প্রশ্নেরই জবাব দেননি বা এড়িয়ে গিয়েছেন। টাকা নয়ছয় করার প্রশ্নের জবাবে শরিফ দাবি করেছিলেন, তিনি সব ভুলে গিয়েছেন। উল্টে নিজের ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক জীবন নিয়ে কথা বলেছিলেন।
গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, শরিফ দাবি করেছেন, আয়কর বিভাগে উল্লেখ করা সম্পত্তি ছাড়া তাঁর আর কোনও সম্পত্তি নেই। ১৯৯৮ সালেই তিনি পারিবারিক ব্যবসা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
শরিফের মেয়ে মরিয়ম, জামাই অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মহম্মদ সফদর, ২ ছেলে হাসান এবং হুসেন নওয়াজের বিরুদ্ধেও তদন্তকারীদের ভুল নথি জমা দেওয়া এবং সুপ্রিম কোর্টকে বিপথে চালিত করতে মিথ্যা নথিতে স্বাক্ষরের অভিযোগ করেছে জিট। যা আইনত দণ্ডনীয়। শীর্ষ আদালতে ৬ সদস্যের জিট তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো বা ন্যাবের ১৯৯৯ সালের আইন অনুযায়ী নওয়াজ শরিফ এবং তাঁর পরিবারকে কাঠগড়ায় বসাতে। রিপোর্টে উল্লেখ, শরিফ পরিবারের সঙ্গে যুক্ত পাকিস্তানের সব কোম্পানিরই সম্পত্তি হিসেব বহির্ভূত।
শীর্ষ আদালতে জিট অভিযোগ করেছে, পাক সরকার তদন্তে বাধা দিচ্ছে।
অন্যদিকে, জিটের রিপোর্টকে নস্যাৎ করে পাক উন্নয়নমন্ত্রী তথা শরিফ ঘনিষ্ঠ আহসান ইকবাল বলেছেন, পুরো রিপোর্টই রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক এবং সর্বৈব মিথ্যা। তাঁরা রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। বিচারে সব সত্যি প্রকাশিত হবে। টুইটারে মরিয়ম শরিফ বলেন, ‘জিট রিপোর্ট ভুল। প্রতিটি বিতর্কিত কথা সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হবে। আম জনতার একটি পয়সাও নেওয়া হয়নি।’
সোমবার রিপোর্ট হাতে পেলেও এখনও প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর পরিবারকে বিচারের জন্য তলব করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। তাই এখনও শরিফের ভাগ্য সুপ্রিম কোর্টের হাতে ধরা সুতোতেই ঝুলছে। তবে যদি আদালতে বিচারের জন্য বসতেই হয় শরিফকে, তাহলে পাক রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। নিজের গদি বাঁচাতে শরিফ আপাতত ইস্তফা দিয়ে অস্থায়ীভাবে কাউকে কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য লড়তে পারেন। নতুন করে নির্বাচন হতে পারে।
এছাড়া যদি পাক সেনা মঞ্চে নামে তাহলে পুরো পরিস্থিতিটাই ঘুরে যেতে পারে। দেশের স্বার্থে পাকিস্তানের ডকট্রিন অফ নেসেসিটি বা প্রয়োজনীয় নীতি প্রয়োগ করে ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে পারে পাক সেনা। সে ক্ষেত্রে পাক প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী দু’জনকেই ইস্তফা দিতে হবে।
Posted ১১:০০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta