সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পুরনো মিত্র জামায়াতকে ছাড়তে চাইছে না বিএনপি

রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
313 ভিউ
পুরনো মিত্র জামায়াতকে ছাড়তে চাইছে না বিএনপি

কক্সবাংলা ডটকম(১৬ সেপ্টেম্বর) :: নানা সমালোচনার মুখেও ১৯ বছরের পুরনো মিত্র জামায়াতকে ছাড়তে চাইছে না বিএনপি। আগামী নির্বাচনে জোট গঠনে জামায়াতকে বাদ দিয়ে নানা সমীকরণকেও উপেক্ষা করছে দলটি। বিএনপি মনে করে, রাজপথের শক্তি ও ভোটের হিসাবে জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র। তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছেন না দলটির শীর্ষ নেতারা।

দলের দুর্নীতির দণ্ড মাথায় নিয়ে যুক্তরাজ্যে পলাতক তারেক রহমানের ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার পর থেকেই দলের ভেতরে-বাইরে এবং দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে বিএনপি। জবাবে দলটি বলছিল, এই মিত্রতা আদর্শিক নয় শুধুই নির্বাচনী জোট। সম্প্রতি নির্বাচনী জোট ঐক্যফ্রন্ট গঠন নিয়ে জামায়াত ছাড়ার ইস্যুতে আবারো টানাপড়েনের মুখে পড়ে দলটি। কারণ, ঐক্য প্রক্রিয়ার উদ্যোক্তারা ৭ দফার ভিত্তিতে ঐক্য গড়তে চায়।

আর সেই দফার প্রথম শর্ত বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে। বিএনপিসহ যুক্তফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে নিজের দফাগুলো নিয়ে ড. কামাল হোসেন একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

ওই দফার শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামী ও স্বাধীনতাবিরোধী দলের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো অংশগ্রহণ থাকতে পারবে না। এ নিয়ে মহা বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। তবে জামায়াত ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে কৌশলে ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দলীয় সূত্র জানায়, ঐক্য প্রক্রিয়ায় জামায়াতকে নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ড কৌশলী হলেও দলের নেতাকর্মীরা যুক্তফ্রন্টের দাবি মেনে নিতে পারছেন না। তারা বলছেন, যারা ১৫০ আসন দাবি করছেন তাদের ১৫০ জন কর্মীও নেই। এসব বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করতে না পারলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা জাতীয় ঐক্যের নেতাদের সমালোচনা করছেন। এই ঐক্যের বিরোধিতা করছেন। তারা প্রকাশ্যেই বলছেন, এরা সরকারের বুদ্ধিতে চলে, এদের দ্বারা বিএনপিকে অযথা ব্যস্ত রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় জামায়াত থাকলে তিনি থাকবেন না। তবে জামায়াত এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিএনপিকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ঐক্য প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জামায়াতের উপস্থিতি বোঝা গেলেই তিনি সেখানে থাকবেন না। বিকল্প ধারা মহাসচিব মাহি বি চৌধুরী বলেন, জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হলে বিএনপিকে পরিষ্কার করতে হবে এ প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই জামায়াত নেই। তা না হলে অন্যরা থাকলেও বিকল্প ধারা থাকবে না।

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, পারিপার্শ্বিক চাপ আর নানা সমালোচনার মধ্যেও বহুদিনের জোটসঙ্গী জামায়াতকে ছাড়ার বিষয়টি মাথায় আনতে পারছেন না বিএনপির নেতারা। এ নিয়ে সিনিয়র নেতারা কয়েকদফা বৈঠকও করেছেন। কিন্তু লাভ ক্ষতির হিসাব কষে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেননি তারা। সম্প্রতি সারা দেশের তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন দলটির সিনিয়র নেতারা।

অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলাপের পাশাপাশি সেই বৈঠকে জামায়াত ছাড়ার বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হলে জামায়াতকে নির্বাচনের আগে জোট থেকে বাদ দেয়ার বিপক্ষে মত দেন তৃণমূল নেতারা। এমনকি ২০ দলের শরিক নেতারাও জামায়াতের পক্ষে বিএনপি নেতাদের কাছে সাফাই গাইছেন। শুধু তাই নয় জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দেয়া হলে অনেকেই জোট ছেড়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্য গঠনের পাশাপাশি নির্বাচন সামনে রেখে জামায়াতের ভোট ব্যাংকের বিষয়টি বিবেচনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। তারা মনে করছেন, দেশের রাজনীতিতে ইসলামপন্থী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী সব সময় সুবিধাবাদী অবস্থানে রয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী এই দলটি প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে কৌশলে ব্যবহার করে দেশের রাজনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান করে নেয়।

স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশ নেয় জামায়াত। পরবর্তী সময়ে এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯১ সালের নির্বাচনেও জামায়াত অংশ নেয়। সেই নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করায় জামায়াতের সহযোগিতায় বিএনপি সরকার গঠন করে।

বিএনপির নেতাদের দাবি, জামায়াতের সাংগঠনিক কাঠামো অনেক বেশি মজবুত যা নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির জন্য বড় ধরনের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। তাদের সাংগঠনিক শক্তির পাশাপাশি নির্দিষ্ট ভোটব্যাংকও রয়েছে।

তাই এই মুহূর্তে জামায়াতকে দল থেকে বাদ দিলে ভোটের হিসাবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বিএনপি। তাছাড়া দলের নেতাদের ধারণা, সরকার নানা কৌশলে জামায়াতকে বিএনপির থেকে ভাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

এটা টের পেয়েই জামায়াত ইস্যুতে প্রকাশ্যে কোনো নেতিবাচক কথা না বলতে নেতাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এমনকি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে জোটসঙ্গী জামায়াতকে নিয়ে একান্ত কথা বলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, জামায়াত ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি না। কারণ আমরা এখনো একটা জোটের মধ্যে আছি। তাদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক বেশ পুরনো। তাই তাদের আলাদা চিন্তা করতে পারছি না আপাতত।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, জামায়াত একটি রাজনৈতিক দল। আর আমরা বাদ দিলে ক্ষমতাসীনরা জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক করবেন না এই গ্যারান্টি কী? তিনি বলেন, অতীত বলে রাজনৈতিক সখ্যতা জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বেশি।

অন্যদিকে, বিভিন্ন বিষয়ে ভেতরে ভেতরে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও জোটের বাইরের দলগুলো তাদের নিয়ে কী বলছে এটা আমলে নিচ্ছে না জামায়াতও। সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াত প্রার্থীর ভরাডুবি এবং সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাদের জোটে রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা হয় ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে।

এ সময় বিএনপির সিনিয়র নেতারা ক্ষোভ ঝাড়লে জামায়াত নেতারা অতীতের মতো বিএনপির পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।

তার প্রতিফল ঘটে গত ১২ সেপ্টেম্বর বুধবার খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপির অনশন। এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে খালেদা জিয়াকে ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পারোয়ার।

আগামীদিনে সকল সংগ্রামে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে জামায়াত ইসলামী থাকবে জানিয়ে গোলাম পারোয়ার বলেন, অতীতের মতো আগামী দিনের সকল আন্দোলনেও জামায়াত ২০ দলীয় জোটের পাশে থাকবে।

তবে বিএনপির ঐক্যগঠন পক্রিয়াকে মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না জামায়াত নেতারা। তারা জানান, ২০১৪ সালে বিএনপি যে ভুল করেছিল, এবার বিএনপি তারচেয়ে বড় ভুল করছে। নিজেরাই নিজেদের অস্তিত্বহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিএনপি।

যুক্তফ্রন্ট ও ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যে গেলে যে ভুল হবে তার মাশুল বিএনপিকেই গুনতে হবে।

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ঐক্যে যাওয়ার ফলে যে ভুল হবে এর মাশুল বিএনপিকেই নিতে হবে। এর মাশুল ২০ দল নেবে না। তিনি বলেন, বিএনপি এখন ধ্বংসের পথে এগুচ্ছে।

313 ভিউ

Posted ৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com