মোঃ ফারুক,পেকুয়া(২৪ জুলাই) :: ককক্সবাজারের পেকুয়ায় সারারাত আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর তিনদিন পর নির্যাতিত অটোরিকশা চালক আব্দুল মোকাদ্দেসের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪জুলাই) সকালে টইটং সীমান্ত ব্রীজ সংস্কার প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ ওবাইদুল হক বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় লিখিত এ এজাহার দায়ের করেন। এর আগে ২২জুলাই সকালে তার উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালান টইটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নেতা জাহেদুল ইসলাম।
থানায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের নতুন পাড়া এলাকার আব্দু সালামের ছেলে মাহমুদুল করিম, আলেকদিয়া কাটা এলাকার হোসাইন আলীর ছেলে মোঃ মোকাদ্দেস ও মাহমুদের ছেলে কায়সার টইটং সীমান্ত ব্রীজ প্রকল্পের জন্য আনা লোহা চুরি করছিল।
রাত সাড়ে ৪টার দিকে ছৈয়দ নূর নামের পার্শ্ববর্তী এক দোকান মালিক বিষয়টি দেখতে পেয়ে প্রকল্পের পাহারাদার মোঃ বাদশাকে মুঠোফোনে অবহিত করেন। কিন্তু পাহারাদার বাদশা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই চোরের দল অন্তত ২০হাজার টাকা মূল্যমানের লোহা নিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে সটকে পড়েন।
এদিকে টইটং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম কর্তৃক নির্যাতনের শিকার অটোরিকশা চালক মোকাদ্দেসকে চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত করা ‘গোলা পানিতে মাছ শিকার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তারা বলেন, ঘটনার তিনদিন পর নির্যাতিতের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অপকৌশল নয় কি ?
উল্লেখ, গত রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে লোহা চুরির অভিযোগ তুলে অটোরিকশা চালক আব্দুল মোকাদ্দেসকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালান ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী। লাঠি বেত ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তার টর্চার হোম (গোল ঘরে) ফেলে রাখা হয় নিরহ মোকাদ্দেসকে।
নির্যাতিতের মা শাকেরা বেগম বলেন, আমার নির্দোষ ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান জাহেদ। এ অপরাধ ঢাকতে ইতিমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে সে। নিজেকে রক্ষায় আমার ছেলের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়েরের অপচেষ্টাও চালাচ্ছেন সে। যা সচেতন মানুষকে হতবাক করেছে।
আক্ষেপের সুরে তিনি আরো বলেন, কোন দেশে আমাদের বসবাস। গরীব অসহায় বলে কি নিষ্টুর নির্যাতন আমাদের কপালের লিখন ? আমাদের জন্য কি আইন আদালত নেই ? ইতিপূর্বে একই কায়দায় সে অনেক নিরহ মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কখনো কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তাই তার কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি।
এজাহারের সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করতেছি। তদন্ত সাপেক্ষে এব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওসি আরো বলেন, অটোরিকশা চালক আব্দুল মোকাদ্দেসের উপর চালানো নির্যাতনের ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সে অভিযোগ পেলেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ১:১০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৫ জুলাই ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta