নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৫ আগস্ট) :: পেকুয়ায় আটক ৩ জন সেই বন্দর শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা নিল পুলিশ। ৪ আগস্ট বিকেলে উপজেলার মগনামা জেটিঘাটে সন্দেহভাজন ৭ ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয়রা।
এ সময় গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় এদের মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে প্রেরন করে।
ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ওই ৭ ব্যক্তিকে পেকুয়া থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ আটককৃত ৭ জনের মধ্যে ৪ জনকে অব্যাহতি দেয়।
অপর ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় মামলা রেকর্ড করে। ওই দিন রাতে থানায় এ মামলা রেকর্ড হয়। যার নং-০২/১৮। মামলায় এ ৩ জনকে ফৌজধারী কার্যবিধির ধারায় মামলা রুজু করে।
পরদিন ৫ আগস্ট রবিবার আসামীদের আদালতে প্রেরন করে।
এদের জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নোয়াখালী জেলার চরজব্বর সুবর্ণচর এলাকার বাসিন্দা মো: ইয়াসিন বাদী হয়ে এ মামলাটি রেকর্ড করে। মামলায় আসামী করা হয়েছে- মোস্তাফিজুর রহমান(২৫), দেলোয়ার হোসেন(৩৩) ও ও মো: নুর উদ্দিন(৩৫)।
এ ৩ জন ভোলা নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা। এদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ির বটগ্রাম এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে।
দেলোয়ার হোসেন কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরং ইউনিয়নের মোশারফ আলী সিকদারপাড়ার আবদু সালামের ছেলে ও নুর উদ্দিন ভোলা জেলার দৌলতখান থানার ভবানীপুর গ্রামের মফিজ উল্লাহর ছেলে।
ওই দিন -মো: নুরুল ইসলাম(১৮), মো: ইয়াসিন(২৫), মো: ওমর ফারুক(১৫) ও মো: মাসুদ(২০) এ ৪ জনকে পুলিশ অব্যাহতি দেয়।
সুত্র জানায়, ওই দিন এ ৭ জনকে স্থানীয়রা আটক করে। অভিযোগ ছিল আসামীরা এ ৪ জনকে জিম্মী করে মালয়েশিয়ায় পাচার করছিলেন। সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি দেয়ার সময় তারা মগনামা জেটিঘাটে আসে। এ সময় এদের মধ্যে বনিবনা ও বাকবিতন্ডা হয়। এর সুত্র ধরে ওই ব্যক্তিদের পরিষদ কার্যালয়ে প্রেরন করে।
তবে অপর একটি সুত্র জানায়, আটককৃতরা চট্রগ্রাম বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত সদস্য। বন্দরে ঠিকাদার মালিক সমিতি রেজি: নং-১৪২৭ ও কোষ্টার এজ ঠিকাদার শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি; নং ১৪০৫ এর মধ্যে দ্বন্ধ চলছিল দীর্ঘদিন। আধিপত্য নিতে চট্রগ্রাম বন্দরে দু’পক্ষের বিরোধ তীব্রতর হয়।
এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা বিচারাধীন ছিল। মহামান্য হাইকোর্টে শ্রমিক কোস্টার এজ ঠিকাদার শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে রায় দেন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টেও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতেও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াবুল হক বাবুল জানায়, আটককৃতরা সবাই নির্দোষ। মালামালবাহী জাহাজ চট্রগ্রাম বন্দরের দূরবর্তী স্থান সাগরে বহি:নোঙ্গরে ছিল। ওই শ্রমিকরা সেখানে মালামাল উঠানামায় লিপ্ত ছিল। এ ৪ জন ছিল অবৈধ অনুপ্রবেশকারী শ্রমিক। আটককৃত এ ৩ জন বন্দর কোস্টার এজ ঠিকাদার শ্রমিক ইউনিয়নের বৈধ শ্রমিক। আমরা ওই জাহাজে এ ৩ জনকে প্রেরন করি। অবৈধদের কুলে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল।
চট্রগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল কাদের ও ইলিয়াছ নামের প্রভাবশালী ব্যক্তি আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী। এরা অবৈধ শ্রমিক সরবরাহ দেয়। পুলিশ এসপি সাহেবের বডিগার্ড সিহাব, আবদুল কাদের ও ইলিয়াসদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছেন।
এর সুত্র ধরে ওই দিন পেকুয়া থানার ওসি বৈধ এ ৩ শ্রমিককে আটকিয়ে মামলা রেকর্ড করে। আমরা জোরালো দাবী করছি আটককৃত এ ৩ জন নিরাপরাধ। এদের বিরুদ্ধে পুলিশের আইনী অবিচার হয়েছে। তারা মানবপাচারের সাথে মোটেই লিপ্ত নয়।
পেকুয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানায়, তারা যে সবাই শ্রমিক সেটি কাগজপত্রে প্রমাণিত হয়েছে। কম পারিশ্রমিকে অবৈধ শ্রমিকরা শ্রম দিচ্ছিল। এতে বৈধ শ্রমিকদের কর্মের হ্রাস পেয়েছিল। আসলে তারাত এদের আটকাতে পারে না। তাই পুলিশ মামলা নিয়েছে।
Posted ৮:০৭ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৫ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta