নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(১ নভেম্বর) :: পেকুয়ায় পুলিশ ফাঁড়ির আইসি(এ,এস,আই)কে পিটিয়ে আসামী ছিনিয়ে নিল দুবৃর্ত্তরা। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশ ফাঁড়ির আইসিকে উদ্ধার করে নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে।
১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের সবুজ বাজারে পুলিশের উপর হামলা ও আসামী ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে।
পেকুয়া থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ দ্রুত রাজাখালীতে পৌছে। ঘটনার জের ধরে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের সবুজবাজার ও ছরিপাড়া, বদিউদ্দিনপাড়া, বামুলারপাড়া, উলুদিয়াপাড়াসহ এ ইউনিয়নের আরও বেশ কিছু লোকালয়ে এ রিপোর্ট লেখা বৃহস্পতিবার রাত ৮.৩০ পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ জোয়ানরা হামলাকারীদের হন্য হয়ে খোঁজছিলেন।
এ সময় বেশ কিছু এলাকায় তল্লাশী ও অভিযান জোরদার করা হয়েছে। হামলার শিকার পুলিশ কর্মকর্তার নাম এ,এস,আই শহিদুল ইসলাম(৪০)। তিনি উপজেলার রাজাখালী পুলিশ ফাঁড়ির কর্মরত আইসি(ইনচার্জ)।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই দিন আইসি শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে রাজাখালী পুলিশ ফাঁড়ির সঙ্গীয় ফোর্স সবুজ বাজার থেকে ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী একই ইউনিয়নের উলুদিয়াপাড়ার জামাল উদ্দিন প্রকাশ জামাইল্যা ডাকাতকে আটক করে।
এ সময় পুলিশ তাকে নিয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সবুজ বাজারের উত্তর অংশে পুলিশ ও আসামী জামাল উদ্দিনের সহযোগীদের মধ্যে তুমুল হট্রগোল হয়।
এ সময় উত্তেজিত ওই দুবৃর্ত্তরা লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র স্বস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে ওই দুবৃর্ত্তরা এলোপাতাড়ি হামলা ও পুলিশের উপর মারধরসহ আক্রমন চালায়।
এ সময় আটককৃত ওয়ারেন্টভূক্ত ওই আসামীকে তারা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ১৫/২০ জনের সংঘবদ্ধ অপরাধীরা পুলিশের উপর এলোপাতাড়ি হামলা ও মারধর চালায়। এতে রাজাখালী পুলিশ ফাঁড়ির ওই কর্মকর্তাকে পিটিয়ে জখম করে।
খবর পেয়ে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (প্রশাসন) জাকির হোসেন ভূইয়াসহ পুলিশ ওই স্থানে পৌছে। সন্ধ্যার দিকে উত্তেজনা সহ থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশসহ নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে। রাজাখালী পুলিশ ফাঁড়ির তরফ থেকে জানানো হয়েছে আসামী জামাল উদ্দিন প্রকাশ জামাইল্যা ডাকাতকে পুলিশ আটক করে। ওই ব্যক্তি ফেরারী আসামী। তাকে ছিনিয়ে নিতে ১৫/২০ জনের সন্ত্রাসীরা হামলা ও মারপিটে জড়িয়ে পড়ে।
দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বামুলারপাড়ার জয়নাল, সুন্দরীপাড়ার ইয়াবা ব্যবসায়ী আনসারুল ইসলাম টিপু, জালাল, জকির, বদিউদ্দিনপাড়ার আলিম্যা ডাকাত, বামুলাপাড়ার বদিউল আলমসহ এ সব দুবৃর্ত্তরা পুলিশের হামলা ও আসামী ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায়।
পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এ,এস,আই শহিদুল ইসলাম জানায়, ওয়ারেন্টভূক্ত আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে তার সহযোগীরা এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংঘটিত করেছে।
রাজাখালী ইউপির চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর জানায়, জামাইল্যা একজন দাগী আসামী ও দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। যারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়েছে এরা মাদক ও ইয়াবার স¤্রাট।
অস্ত্র ও মাদক পাচার ও বিক্রি করে। টিপু, জয়নাল ও জামাল ইয়াবা বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার মালিক। তারা মানুষকে জিম্মী করে মুক্তিপণ ও বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। রাজাখালীতে এ চক্রের ভয়ে মানুষ আতংকিত। কেউ মুখ খোলার সাহস পাইনি।
এ ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে জয়নাল আবদু রহমান নামের এক ব্যক্তিকে সবুজ বাজার থেকে জিম্মী করে মাছ ঘোনার বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। ওই ব্যক্তিকে অপহরন করছিল। পুলিশ এসে এ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে। এর কয়েক ঘন্টা পর জয়নাল ও তার অনুগতরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে ডাকাত জামাইল্যাকে ছিনিয়ে নেয়।
রাজাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম জানায়, জয়নালসহ ওই চক্রের সদস্যরা বিএনপি সমর্থিত। তারা রাজাখালীর স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এর ধারাবাহিকতায় পুলিশের উপর এ আক্রমনটি হয়েছে।
পেকুয়া থানার ওসি জাকির হোসেন ভূইয়া জানায়, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তাৎক্ষনিক পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে। আমি গিয়েছিলাম। অপরাধীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ রাজাখালীতে অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি প্রশমিত হয়েছে। পুলিশিং টহল জোরদার করা হয়েছে। যারা এ গর্হিত কাজ করেছে এদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তারা দাগী সন্ত্রাসী ও সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র।
Posted ১০:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta