নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(১২ ডিসেম্বর) :: পেকুয়ায় এক প্রতিবন্ধী ও তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে পুলিশ উপস্থিতি করাল কোটিপতি প্রতিবন্ধী। দেশের জন্য অকুতোভয় সংগ্রাম করে অসহায় এ প্রতিবন্ধীর পিতা। তবে সনদ মিলেনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও মহান সংগ্রামের অংশীদার এ প্রতিবন্ধীর গর্বিত পিতা। বর্তমানে মাথা গোজার একমাত্র ঠাইটুকু থেকে উচ্ছেদ করতে কোটিপতি প্রতিবন্ধী তার পিছুনে লেগেছে।
উপজেলা পেকুয়ায় সদর ইউনিয়নে ১০ শতক বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে দুই প্রতিবন্ধীর মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারন করেছে। আদালত ও থানায় মামলা ও অভিযোগের ছুটাছুটি দেখা দিয়েছে। অধিক দরিদ্র নি:স্বার্থবান ভূমিহীন ও সমাজের সুবিধা বঞ্চিত এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে একমাত্র বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে কোটিপতি খর্বকার অপর শারীরিক প্রতিবন্ধী জোরালো প্রচেষ্টায় মেতেছে।
পেকুয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ উপস্থিতিতে স্থানীয়রা জায়গার প্রকৃত বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছে। তারা পুলিশ কর্মকর্তাকে জায়গাটি কোটিপতি প্রতিবন্ধীর নয় বলে সাব জানিয়ে দেয়। জানা গেছে, সদর ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া এলাকায় ১০ শতক জায়গা নিয়ে মৃত ইসলাম মিয়ার ছেলে আবুল বশর ও সাবেকগুলদি এলাকার মৃত সাচি মিয়ার ছেলে নুরুল হোসেন এর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। জায়গার বসতবাড়ির অংশ। বারবাকিয়া ওয়ারেচী পরিবারের খামার বাড়ি ছিল।
একদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো মালিক। অপরদিকে ডেপুটি কমিশন ভূমির মালিকানাধীন এ যৌথ মালিকানাধীন ১০ শতক জমিতে ইসলাম মিয়ার ছেলে আবুল বশর ১০ বছর আগে থেকে বসবাস করছিলেন পরিবার নিয়ে। ছাদেকুর রহমান ওয়ারেচী দখল অংশ বিগত ৩০ বছর আগে বিক্রি করেন একই এলাকার মৃত ফুরুক আহমদের ছেলে বাহারকে। নুরুল আলমের ছেলে ফোরকানকে বিক্রি করেন বাহার। ফোরকান বিক্রি করেন আবুল বশরকে। ৪র্থ মালিক হিসেবে আবুল বশর জায়গাটি ক্রয় করেন। স্থানীয়রা জানায়, নুরুল হোসাইন ঘরভিটার অংশটি লীজ নেয়।
মৌলভীপাড়ার লোকজন জানায়, আবুল বশর শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি অত্যন্ত দরিদ্র। তিন মেয়ে, দুই ছেলে স্ত্রীসহ মাথা গোজার ঠাই শুধুমাত্র এ জায়গাটুকু।
অপরদিকে নুরুল হোসাইনও প্রতিবন্ধী। তবে তিনি বিপুল জায়গা সম্পদ ও টাকা পয়সার মালিক। বারবাকিয়া বাজারে কোটি টাকায় মুলধনে মুদির দোকান আছে। পাহাড়েও বিভিন্ন বিলে তার স্থাবর সম্পত্তি আছে। এ জায়গাটি লীজ নিয়ে ফ্যাসাদে জড়ান।
আবুল বশরের স্ত্রী জানায়, আমার তিন মেয়ে পড়ালেখা করে। স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী। এটি কেড়ে নেওয়া হলে যাব কোথায়।
মৌলভীপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন জানায়, আবুল বশর একজন অ্ক্ষম ব্যক্তি। অত্যন্ত সৎ। সমাজ কমিটিতে সে দায়িত্বে আছে। তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। অথচ এমন এক অসহায় মানুষকে বিতাড়িত করতে চক্রান্ত করা হচ্ছে। সে ভালভাবে হাটা চলা ফেরা করতে পারে না।
বসতবাড়ি মানুষের মৌলিক অধিকার। জায়গা সরকারী সেখানে অসহায় এ পরিবারটি আছে। আবুল বশর তার বসতঘর সংষ্কার করছিলেন। পুলিশ এনে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। আসলে পুলিশ বিষয়টি অনুধাবন করেছে।
পেকুয়া থানা পুলিশ জানায়, আমরা বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে গিয়েছিলাম। আদালতে মামলা আছে। সেহেতু শান্তি ভঙ্গ না করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
Posted ১১:২৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta