নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৬ সেপ্টেম্বর) :: পেকুয়ায় শ্রমিকলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে বোনের বসতবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাতবরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে ভাই বোনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বোন ও ভগ্নিপতি শিক্ষক দম্পতি। বিয়ের সময় পিতা ওই জায়গা মেয়েকে দিতে সম্মত হন। বিগত আট বছর ধরে জায়গায় বসতি স্থাপন করে বসবাস করে আসছিলেন।
পেকুয়ার প্রধান মোকামে ওই জায়গার অবস্থান। জায়গা মুল্যবান হয়েছে। এ সুবাধে ওই জায়গার প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আপন ভাইদের। এর সুত্র ধরে ওইদিন সকালে উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নুরুল আবছারের ইন্ধনে অপর ভাইরা জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে বোনের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তারা বাড়ি ভাংচুর করে।
উত্তেজিত লোকজন বসতঘরে অনুপ্রবেশ করে মালামাল, আসবাবপত্র ভাংচুর করে। মেয়ের বাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদ করছিলেন মা। এ সময় ছেলেরা ক্ষিপ্ত হয়ে মাকেও অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। এক প্রকার বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে দেয় তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে স্বয়ং মেয়ের উপর ছেলেদের এ নির্যাতন মেনে নেয়নি মা। বর্তমানে মা বাপের বাড়িতে অবস্থান করছে।
এ খবর পেকুয়ায় চাউর হয়। খবর পেয়ে সমাজপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায় ৬শতক পৈত্রিক জায়গা নিয়ে মাতবরপাড়া এলাকার মনজুর আলমের ছয় ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। মনজুর আলমের একমাত্র মেয়ে পারভিন আকতার বেবীকে তার বসতভিটায় ওয়ারিশ অংশ দিয়ে দেয়। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে মেয়েদেরকে জায়গা বন্টন করে দেয়। পারভিন আকতার বেবি ছয় শতক জায়গায় বসবাস করছিলেন ২০১০সাল থেকে। পারভিন আকতার পেশায় একজন শিক্ষিকা।
তার স্বামীও পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। পারভিন আকতার জানায় জায়গাটি বিগত ৮বছর আগে বাবা আমাকে ওয়ারিশ অংশ দিয়ে দেয়। আমার ভাইদেরকেও পৃথক জায়গা বন্টন করে দেয়া হয়েছে। তারা আলাদা করে বাড়ি ঘর করে বসবাস করছেন। টিনের ঘর করে স্বামী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে ওই সময় থেকে এখানে বসবাস করছি। জায়গাটির অবস্থান চৌমুহনী হওয়ায় প্রচুর মুল্যবান হয়েছে।
সম্প্রতি আমার ভাই নুরুল আবছর, নুরুল হুদা প্রকাশ মাঝু , কাইছার প্রকাশ ভুট্টো গং আমাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছে। ঘটনার দিন তারা বাড়ি ভাংচুর করে। আমি ঈদে শাশুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। অনুপস্থিতির সুযোগে বড় ভাই নুরুল আবছারের ইন্ধনে এ কান্ড সংঘটিত করে। এর আগেও তারা অনেকবার নির্যাতন করে। স্বামীকে না আসতে বারন করে। পথে ঘাটে গালি গালাজসহ অনেকবার লাঞ্চিত করে। আমার মা, বাবা ও ভাই বাহার উদ্দিন এদের বিরুদ্ধে অনেক প্রতিবাদ করেছে। বিয়ের সময় ওই জায়গা আমাকে দেয়ার মৌখিক প্রতিশ্রতি দেয় বাবা। এখন ঘর করার পর কিভাবে উচ্ছেদ করা যায় সে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
সমাজপতিরা বিষয়টি সরেজমিনে দেখেছেন। মা এ সবের প্রতিবাদ করছিল। তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমার স্বামীকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। মাতবরপাড়া সমাজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনছার উদ্দিন, সদস্য জয়নাল আবেদিন, জিয়া উদ্দিন জানায় আমরা গিয়েছি।
অন্যায় করা হয়েছে বেবির উপর। মেয়েটি দরখাস্ত দিয়েছে। তাদের পিতাকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সংযম আচরন করতে বলেছি। জিনিসপত্র আপাতত বাবার হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে নুরুল আবছারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বক্তব্য নেয়া যায়ান।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মাহাবুল করিম জানায়, মেয়েটি আমাকে ফোন করছিল। যতটুকু জানি ওই মহিলার একটি ছোট্ট ঘর ছিল। সমাজপতিরা ঘটনাস্থলে গিয়েছে। পেকুয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ জহিরুল ইসলাম খান জানায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta