মো: ফারুক,পেকুয়া(২৬ আগস্ট) :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় মাছ চুরির অভিযোগ তুলে ৭ জেলেকে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। এসময় জেলেদের মাথা ন্যাড়াসহ শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
এ রকম একটি ভিড়িও ভাইরাল হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দাবী ওঠে।
শুক্রবার (২৪আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বদি উদ্দিন পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিত জেলেরা হলেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার দলঘাট ইউনিয়নের জালিয়া পাড়া এলাকার জতিন্দ্র দাসের ছেলে লেদু মিয়া সর্দার, একই এলাকার মনাত সর্দারের ছেলে গোপাল সর্দার, তার ছেলে লিটন সর্দার, দিলিপ সর্দারের ছেলে জুমুর সর্দার, বাবুল সর্দারের ছেলে লিটন, মৃত বরদ্দারের ছেলে অরুণ সর্দার ও বোয়ালখালী উপজেলার গৌর নন্দী এলাকার হাসির ছেলে দুলাল।
এদিকে এসব নির্যাতন সহ অবমাননাকর বক্তব্যের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ব্যাপক ঝড় উঠে উপজেলাজুড়ে। এসব জেলেদের এমন নির্যাতনের ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। কিন্তু নির্যাতনের খবর চাউর সহ ভিডিও প্রকাশ হলেও এব্যাপারে দৃশ্যত কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। তাই বুক চেপে নির্যাতন সয়ে নিজেদের বাড়ী ফিরেছে অসহায় জেলেরা।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় পেচু মিয়া বাড়ীর পুকুরে মাছ ধরার জন্য চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে মজুরিভিত্তিক একদল জলদাস আনেন মিয়া বাড়ীর কারবারি ও রাজাখালী ইউনিয়নের বদি উদ্দীন পাড়া এলাকার মৃত কাচিম আলীর ছেলে নুরুল আবছার প্রকাশ বদু মেম্বার। মাছ ধরা শেষে জেলেরা তাদের জালসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম নিয়ে পটিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন।
ইউনিয়নের মগনামা সীমান্ত ব্রীজ এলাকায় পৌঁছালে বদু মেম্বারের নির্দেশে একদল ব্যক্তি তাদের আটক করে ফের বদি উদ্দিন পাড়ায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের আটকে রেখে নির্যাতন চালায় একই এলাকায় আতিক, আব্দুল কাদের, ওসমান গণিসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। মাথাও ন্যাড়া করে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ঘুরানো হয় জেলেদের। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় নির্যাতিত জেলেরা মুক্তি পায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল আবছার বদু বলেন, এরা জেলে নয়। পুকুর থেকে মাছ ধরার জন্য জলদাস নাম করণ করে আনলেও বেশ কিছু মাছ চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা তাদেরকে ধরে গণধোলায় দিয়েছে। মাথা ন্যাড়া তারা নিজেরা করেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ না পাওয়ায় আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।
Posted ১০:১৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta