নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৩০ ডিসেম্বর) :: পেকুয়ায় উপজেলা যুবলীগ সহসভাপতি জিয়াবুল হক জিকু সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর জখম হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে।
৩০ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত জিয়াবুল হক জিকু করিয়ারদিয়ার মৃত আনসারুল করিমের ছেলে।
খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা আ’লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ড.আশরাফুল ইসলাম সজীব ও উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ বারেকসহ ২শতাধিক যুবলীগ,ছাত্রলীগ ও ক্ষমতাসীনদলের নেতা-কর্মীরা তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান।
ঘটনার জের ধরে পেকুয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ছে খোদ ক্ষমতাসীনদল আ’লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগে।
হামলার এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে যুবলীগ পেকুয়া উপজেলা শাখা। তারা এ ঘটনাকে অমানবিক ও নিষ্টুর বর্বরতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। ঘটনার দিন বিকেলে উপজেলা যুবলীগ এক জরুরী বৈঠক আহবান করে। দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকে যুবলীগের উপজেলার গুরুত্বপূর্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রতিক্রিয়ায় উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ বারেক জানায়, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যারা আমাদের নেতাকে হামলা চালায় এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলুক শাস্তি দাবী করছি। আগামী সোমবার বিক্ষোভ কর্মসুচী ঘোষনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসুচীর দিকে এগোবে যুবলীগ।
স্থানীয়রা জানায়, ওই দিন সকালে জিয়াবুল হক জিকু করিয়ারদিয়ায় তার চিংড়িঘের থেকে বাইন্নাপাড়া নিজ বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। এ সময় পুরানঘোনার দক্ষিনদিকে নির্জন বিলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। জিকুর স্ত্রী জানায়, আজিজুল হক প্রকাশ কালু, হারুন, মামুন, কাদের, ওয়াহিদ, ইউসুফ, রহিম, আনসারসহ ১০/১৫ জনের স্বশস্ত্র অস্ত্রধারীরা আমার স্বামীকে আক্রমন করে।
এ সময় কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। স্বামী প্রায় ১ ঘন্টা অজ্ঞান থাকে। মাথায় ৪/৫ টি কুপের আঘাত রয়েছে। সর্বশরীর ফুলা জখম করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরন হয়েছে। নগদ টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
ওই নারী জানায়, সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পিত। ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি তোফাজ্জল করিম আমার স্বামীকে হামলা চালাতে সন্ত্রাসীদের উস্কানি দেয়। এ ঘটনা তার ইন্দনে হয়েছে।
যুবলীগের সভায় হামলাকারীদের শাস্তি দাবী
————————————–
পেকুয়ায় জরুরী সভায় মিলিত হয়েছে উপজেলা যুবলীগ। ৩০ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে পেকুয়া বাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুুিষ্টত হয়।সকালে যুবলীগ পেকুয়া উপজেলা শাখার সহসভাপতি জিয়াবুল হক জিকু সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে। হামলার প্রতিবাদে এ জরুরী বৈঠক আহবান করে।
বৈঠকে উপজেলা যুবলীগ, ইউনিয়ন যুবলীগ ও তৃনমুল যুবলীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১ জানুয়ারী বিক্ষোভ সমাবেশ ও কর্মসুচী ঘোষনা করে যুবলীগ। ওই দিনের কর্মসূচীকে সফল ও সার্থক করতে গতকাল প্রস্তুতি সভা করেছে।
এ সময় বক্তারা বলেন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতা জিয়াউল হক জিকুকে কুপিয়ে জখম করে। কিছু অপশক্তি আমাদের সংগঠনের নিবেদিত প্রান ও ত্যাগী নেতা জিকুকে প্রাণনাশ চেষ্টা করছে। তারা তার চলাফেরা ও স্বাভাবিক জীবন যাপনে অন্তরায় হয়েছে। সে দিন একটি চিহ্নিত দালাল ও খন্দকার মোস্তাকের অনুসারী জিকুকে হত্যা করতে সন্ত্রাসীদের উস্কানী দেয়। এ ঘটনা তারই ইঙ্গিত বহন করে। তাকে নিষ্টুরভাবে কুপানো হয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে বর্বর নির্যাতন করা হয়েছে। মুমুর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
যুবলীগ এ ধরনের বর্বর হামলায় উদ্বিগ্ন। আমরা এ হামলার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছি। জিকু অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন যুবনেতা। তিনি মুজিব আদর্শের অনুসারী। প্রতিবাদ করেন অন্যায় ও পেশীশক্তির বিরুদ্ধে কখনও আপোষ করেননি। বিএনপি জামায়াতের কিছু বিপদগামী অস্ত্রধারী তাকে আঘাত করেছে। একটি নেপথ্য শক্তি তাকে মেরে ফেলতে এ ঘটনায় উস্কানি দিয়েছে। আমরা যুবলীগ শেষ হয়ে যায়নি। এমন ঘটনার জবাব দিতে প্রয়োজনে রাজপথে থাকবে যুবলীগ।
প্রশাসনকে আহবান করছি হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক মোহাম্মদ বারেক, সহসভাপতি মোহাম্মদ হোসাইন, যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হাসেম, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তারেকুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক আবদুল করিম, মহিউদ্দিন, সদস্য হোসাইন মোহাম্মদ বাদশা, মনছুর, জয়নাল আবেদীন, আলতাফ, মনজুর আলম, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম শাহেদ, সহসভাপতি জাকারিয়া, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রশিদ, শাহজাহান মিয়া,মইন উদ্দিন, আরফাত, রবি, মোক্তার, আ’লীগ নেতা আবু তৈয়ব, এলাহাদাদ, আবুল কালাম, নাছির উদ্দিন, আ’লীগ নেতা নেজাম উদ্দিন, শ্রমিকলীগ নেতা খালেদ নেওয়াজ, ফরিদুল আলম, নুুরুল আজিম, দিদার, সৈনিকলীগ নেতা হারুন, রাশেদ, দিদারুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা সাহাব উদ্দিন, শহিদুল্লাহ, মো: নেছার প্রমুখ।
Posted ১:০১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta