নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৬ নভেম্বর) :: পেকুয়ায় দুবৃর্ত্তের ছুরিকাঘাতে জাতীয় শ্রমিকলীগ পেকুয়া উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এস,এম শাহাদাত হোছাইন(৩৮) গুরুতর জখম হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পেকুয়া নুর ডায়গনষ্টিক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে চমেক হাসপাতালে রেফার করে।
এর সুত্র ধরে ঘটনার ১ ঘন্টা পর একদল উত্তেজিত লোকজন কলেজ গেইট চৌমুহনীতে তাঁতীলীগ কার্যালয়ে হানা দেয়।
এ সময় তারা অফিসে আসবাবপত্র ভাংচুরসহ ব্যাপক তান্ডব চালায়। ঘটনার জের ধরে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের কলেজ গেইট চৌমুহনীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে জখমী শাহাদাত হোছাইনের অনুসারীরা সড়কে নেমে পড়ে। এ সময় তারা চরম বিক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হন। খবর পেয়ে পেকুয়া থানা পুলিশ দ্রুত ওই স্থানে আসে। এ সময় পুলিশ কিছুক্ষনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
৫ নভেম্বর (সোমবার) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সদর ইউনিয়নের কলেজ গেইট চৌমুহনী আহমদ শফি মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। আহত শাহাদাত হোছাইন সদর ইউনিয়নের আন্নরআলী মাতবরপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৈনন্দিন পত্রিকার পেকুয়া প্রতিনিধি।
পারিবারিক সুত্র জানায়, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এস,এম শাহাদাত হোছাইন এর অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরন হয়েছে। কৃত্রিম রক্তের সঞ্চালন দেয়া হয়েছে শরীরে। চট্রগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালেও তাকে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের নিবীড় পর্যবেক্ষন (আইসিও)তে স্থানান্তর করা হয়।
তার ছোট ভাই শাহীনুল করিম আপেল জানায়, বড় ভাইয়ের অবস্থা অত্যন্ত সংকটময়। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই দিন সন্ধ্যার দিকে শাহাদাত হোছাইন কলেজ গেইট চৌমুহনী আহমদ শফি মার্কেটে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিন যুবক তাকে অতর্কিত ভাবে ছুরিকাঘাত করে। প্রান বাঁচাতে শ্রমিকলীগের এ নেতা ওই স্থান থেকে পার্শ্ববর্তী একটি সেলুনে ঢুকে পড়ে। উত্তেজিত এ ৩ যুবক ওই সেলুনে গিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্র জানায়, মাতবরপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে রাজু ও এস,এম শাহাদাত হোছাইনের ছোট ভাই শাহীনুল করিম আপেলের মধ্যে গত ২ দিনে উচ্চ বাক্য বিনিময় ও হাতাহাতি হয়েছে। পেকুয়ায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল উন্নীতকরনে ভবন নির্মাণ কাজ চলছিল। ওই কাজে দেখভাল করছিলেন শাহাদাত হোছাইন। পাওনা লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে আপেল ও রাজুর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এর সুত্র ধরে ওই দিন রাজুসহ ৩ যুবক এস,এম শাহাদাত হোছাইনকে ছুরিকাঘাত করে। ঘটনার জের ধরে চৌমুহনী কলেজ গেইট এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই দিন রাতে উত্তেজিত লোকজন তাঁতীলীগ পেকুয়া উপজেলা শাখার কার্যালয়ে ভাংচুর ও তান্ডব চালায়।
ছুরিকাঘাতের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারন করছে। পেকুয়া থানায় পাল্টাপাল্টি এজাহার দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। এস,এম শাহাদাত হোছাইনের পক্ষে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এজাহারসহ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পেকুয়া থানায় যায়।
অপরদিকে তাঁতীলীগ পেকুয়া উপজেলা শাখার পক্ষ থেকেও পাল্টা এজাহার থানায় পৌছায়। অফিস ভাংচুরের অভিযোগে তাঁতীলীগ এ এজাহারটি থানায় পৌছায়।
অপরদিকে শাহাদাত হোছাইনের পক্ষে প্রেরিত ওই এজাহারে উপজেলা তাঁতীলীগের সভাপতি এ,টিএম জায়েদ মোর্শেদ ও সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ ইসমাইলসহ এ সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতাদের আসামী করে এজাহার প্রেরন করা হয়েছে।
তাঁতীলীগ পেকুয়ার সভাপতি জায়েদ মোর্শেদ জানায়, এ ঘটনার সাথে তাঁতীলীগের কোন ধরনের সম্পর্ক নেই। প্রকাশ্যে ঘটনা হয়েছে। কারা এ ঘটনা সংঘটিত করেছে সেটি স্পষ্ট। বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের ইশারায় অহেতুক ওই মামলায় আমি ও সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের জড়ানোর পায়তারা চলছে।
যারা চৌমুহনীতে তাঁতীলীগকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসের সমাবেশ করতে দেয়নি ওই প্রভাবশালী ব্যক্তি বিষয়টিকে রাজনৈতিক দলের দিকে ধাবিত করছে। আমাদের অফিস ভাংচুর হয়েছে। এ সব তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
Posted ১:৪৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta