মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রতিবাদের মুখে : শেখ হাসিনার পর কে ?

রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
151 ভিউ
প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত প্রতিবাদের মুখে : শেখ হাসিনার পর কে ?

কক্সবাংলা ডটকম(১৬ ফেব্রুয়ারী) ::  আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর অবসরের সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে প্রতিবাদের মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি সফরে গিয়ে ডয়চে ভেলে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তার শেষ মেয়াদ। প্রত্যেকেরই অবসরের একটা সময় আছে। তিনিও অবসর নিতে চান। তার এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দলের তৃণমূল ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতত্ব ছেড়ে দেয়া বা আর প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই।

প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পর যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনার এখন কোন বিকল্প নেই। আমরা মনে করি না যে এখনই রাজনীতি থেকে তার অবসরের সময় হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন তার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটছে, সেটা ৫ বছরেও সমাপ্ত হবে না। আরও সময় দরকার। তিনি যদি অবসরে যান, তাহলে এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বলা হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। তার হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না-এমন সিদ্ধান্ত জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হতে পারে না। তারা মনে করেন, শেখ হাসিনা যেহেতু জনগণের নেতা কাজেই তিনি জনগণের কণ্ঠস্বর শুনবেন এবং জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে মূল্য দেবেন।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার এরকম অবসরের সিদ্ধান্ত এটাই প্রথম নয়। যতবারই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ততবারই তিনি দলের নেতাকর্মীদের তীব্র প্রতিরোধ ও বাধার মুখে পড়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগের অপ্রত্যাশিত পরাজয় হয়, সেসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীরা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর অবরোধ করে রাখে এবং আত্মহননসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে শেখ হাসিনা দলের তৃণমূলের অনুরোধে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের গত তিনটি কাউন্সিলে দলের সভাপতি পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এসময় তীব্র প্রতিবাদ, ‘না’ ধ্বনির মধ্য দিয়ে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়ে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।

ধারণা করা হচ্ছে, এবারও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত এরকম প্রতিবাদের মুখে পড়বে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন। তাদের ভাষ্য, শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগ কল্পনাও করা যায় না। বিশেষ করে ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে পর যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন, তারা আওয়ামী লীগের দুঃসময় দেখেছেন। শেখ হাসিনা কিভাবে দল ও সংগঠন তিল তিল করে গড়ে তুলে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, সেই বিবেচনা থেকে তারা মনে করেন যে, শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত শুধু দলের জন্যই নয়, দেশের জন্যও অগ্রহণযোগ্য। জাতির পিতার স্বপ্নের যে সোনার বাংলা তিনি গড়তে চান, তার জন্য আরও কিছু সময় তার নেতৃত্বে থাকা প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে সুযোগ ও সময়মতো সবাই এ ব্যাপারে তাদের মনোভাব এবং জনগণের চাওয়া তাকে জানাবেন। জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে শেষ পর্যন্ত তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেই পারেন।

শেখ হাসিনার পর কে 

জার্মান সফরে গিয়ে ডয়েচে ভেলে’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁর অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে চান না। এটাই তাঁর শেষ মেয়াদ।

প্রধানমন্ত্রীর এই সাক্ষাৎকারের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন মহল আর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে আলাপ-আলোচনা, জল্পনা-কল্পনা। ২০২৩ সাল পর্যন্ত রয়েছে বর্তমান সরকারের মেয়াদ। এই মেয়াদের পর তাহলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন- তা নিয়ে এখনই আওয়ামী লীগে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচন তো অনেক পরের বিষয়। নির্বাচনের আগেই আগামী অক্টোবরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দলের সভাপতি বিভিন্ন নেতাদের কাছে খোলামেলা ভাবেই বলেছেন যে এই অক্টোবরে কাউন্সিল অধিবেশনেই তিনি সভাপতির পদ ছাড়তে চান এবং দলে আনতে চান নতুন নেতৃত্ব। যদিও এমন অভিপ্রায় তিনি আগেও করেছিলেন। কিন্তু দলের নেতাকর্মী এবং কাউন্সিলরদের আবেগ আর আপত্তির মুখে তিনি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন। এবার তিনি তাঁর অবস্থানে অনঢ় বলেই জানা গেছে।

তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলছেন, আগামী কাউন্সিলেই শেখ হাসিনা হয়তো সভাপতির পদ ছাড়বে না। তিনি সভাপতির পদে থাকলেও ২০২৩ এর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। তিনি যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করেন তবে আওয়ামী লীগের দল পরিচালনা বা সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী সংসদে দল বিজয়ী বা পরাজিত যাই হোক- সংসদ নেতা বা নির্বাচনে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো নেতা প্রয়োজন হবে। সেই নেতা কে হবেন তা নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা মত ও চিন্তাভাবনা শোনা যাচ্ছে।

দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন, আগামী অক্টোবরে কাউন্সিলের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ নতুন পথযাত্রা শুরু করবে। ঐ নেতা বলেছেন, অক্টোবরের কাউন্সিলে তিনি হয়তো সভাপতির পদ ছেড়ে নতুন নেতৃত্ব আনবেন। এই নেতৃত্বই ২০২৩ সালের নির্বাচনের জন্য দলকে নেতৃত্ব দেবে। এবং এখান থেকেই নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পথচলা শুরু হতে পারে।

সেক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হচ্ছে যে, ২০২৩ এর নির্বাচনের আগেই যদি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচন না করেন, তখন হঠাৎ করে নতুন একজন নেতা দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা এবং দলের পুরো নেতৃত্বকে গ্রহণ করা কিছুটা সমস্যা হতেই পারে। এ কারণেই তারা চিন্তা করছেন যে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী হয়তো অক্টোবরেই নতুন নেতৃত্বের একটা ইঙ্গিত দেবেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কে হবেন আওয়ামী লীগের নতুন নেতা। এ নিয়ে দলের মধ্যে নানারকম মত আর চিন্তাভাবনা আছে। তবে একটা ব্যাপারে সবাই একমত যে, বঙ্গবন্ধুর কোনো উত্তরাধিকারেরই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসা উচিৎ। কারণ আওয়ামী লীগ খুবই আবেগঘন এবং স্পর্শকাতর একটি রাজনৈতিক দল। এখানে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের বাইরে অন্যকেউ নেতৃত্বে আসেল দলের অখণ্ড ঐক্য আর শৃঙ্খলা রাখা কঠিন হযে পড়বে। এবং এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতাই মোটামুটি নিশ্চিত যে দলের নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুর পরিবার থেকেই আসছে। এক্ষেত্রে কে দলের নেতৃত্ব দেবেন এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, আগামী কাউন্সিলে হয়তো আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনা নতুন নেতৃত্ব আনবেন। এক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের পছন্দের ওপর তিনি বিষয়টি ছেড়ে দেবেন।

তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলছেন যে, সজীব ওয়াজেদ জয় যেহেতু গত ১০ বছর ধরে সরকার পরিচালনা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রণয়নে বিভিন্নভাবে অবদান রাখছেন- তিনিই হয়তো আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন। এর বিকল্প চিন্তাও আছে যে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও নেতৃত্বে আসতে পারেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মনোবিজ্ঞানী এবং এবং অটিজম বিষয়ে বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনিও দলকে সূচারুভাবে পরিচালনা করতে পারবেন বলে ধারণা অনেকের।

কেউ আবার দল পরিচালনায় শেখ রেহানার নামও নিচ্ছেন। তার নেতৃত্বেই হয়তো ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ আবার দল গঠন করবে। তবে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সরাসরি রাজনীতিতে জড়ানোর ইচ্ছা শেখ রেহানার নেই। বরং তিনি বড়বোনের পাশে থেকেই তাকে সহযোগীতা করতে চান। এছাড়াও রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববির নামও আসছে পরবর্তী নেতৃত্বের জন্য।

তবে শেষপর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা কে হবেন বা আদৌ শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ছাড়বেন কিনা এ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। একপক্ষ মনে করছেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণ এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব না করলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঐ নির্বাচন হবে এবং তাঁর পছন্দের কাউকেই প্রধানমন্ত্রী করা হবে। তাদের মতে, শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগ একে অন্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।

২০২৩ এর পরে হয়তো তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকবেন না। কিন্তু আমৃত্যু তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিত্ব করে যাবেন বলে তারা প্রত্যাশা করেন। অনেকের ধারণা শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের এই জনপ্রিয়তা এবং অগ্রযাত্রা ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে হয়তো অন্য কেউ আসবে, কিন্তু যতদিন শেখ হাসিনা বেঁচে থাকবেন, তার নেতৃত্বেই এই দল পরিচালনা হবে।

151 ভিউ

Posted ২:২২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com