রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ফিরে দেখা-২০১৭ : দুর্যোগ ও রোহিঙ্গা সংকটে চাপের মুখে অর্থনীতি

মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭
519 ভিউ
ফিরে দেখা-২০১৭ : দুর্যোগ ও রোহিঙ্গা সংকটে চাপের মুখে অর্থনীতি

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ ডিসেম্বর) ::ভালো-মন্দের মিশেলে পেরিয়ে গেল আরো একটি বছর। কেমন কাটলো ২০১৭ সাল? সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, আইন ও বিচার, উন্নয়ন, দুর্যোগ, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন : ফিরে দেখা-২০১৭

নানামুখী চাপের মুখে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা, ফসলহানি, পাহাড় ধস ও অপ্রত্যাশিতভাবে রোহিঙ্গাদের প্রবেশের কারণে অর্থনীতি একটু বাড়তি চাপ অনুভব করছে। বন্যায় আমন ও আউশ ধানের চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবজির আবাদও মারাত্মকভাবে কমে গেছে। বেড়েছে ভোগ্যপণ্যের দাম। চাল ও পেঁয়াজের ঊর্ধ্বগতি এখনো টেনে ধরা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে রপ্তানির তুলনায় আমদানিজনিত ব্যয় বাড়ছে। আর্থিক সূচকগুলো নেতিবাচক অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার ওপর জোড় দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের দেশটিতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

জানা গেছে, গত মার্চ-এপ্রিলে হাওরের ছয় জেলায় আগাম বন্যায় ১০ লাখ ৩১ হাজার ৪০৫ পরিবারের ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। এতে ১৫ দশমিক ৮ লাখ টন বোরো ধানের উৎপাদন কম হয়েছে, যা বোরো ধানের মোট উৎপাদনের ৮ দশমিক ৩ শতাংশ এবং হাওরাঞ্চলের মোট উৎপাদনের ৫২ দশমিক ২ শতাংশ। এর আর্থিক মূল্য ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, যা সামগ্রিক কৃষি উৎপাদনের ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এর পাশাপাশি হাওর এলাকায় ৪৬০ হেক্টর জমির শাক-সবজি নষ্ট হয়েছে। এ অঞ্চলে ফসলের পাশাপাশি জীবনহানি, ঘরবাড়ি ও পশুসম্পদের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে সড়ক, বাঁধ ও কালভার্টের মতো অবকাঠামোর।

এদিকে, আগের মৌসুমি বন্যায় দেশের ৩২ জেলার ৮২ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এসব জেলার রোপা আমনের ৯ ভাগ জমি বন্যায় তলিয়ে যায়। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এছাড়া গত আগস্টের বন্যায় সড়ক, কালভার্ট ও বাঁধের যে ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য চার হাজার ৫০০ কোটি টাকা। বন্যাদুর্গত এলাকায় বাড়িঘরের যে ক্ষতি হয়েছে, তার আর্থিক পরিমাণ দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ৩২ জেলায় আগস্টের বন্যায় চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জিডিপির দশমিক ৩৫ শতাংশ থেকে দশমিক ৪৪ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা, ফসলহানি, পাহাড় ধসের ক্ষত শুকানোর আগেই অপ্রত্যাশিতভাবে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশে মিছিলের মতো প্রবেশ করতে থাকে। তাদের এই যাত্রা শুরু হয় গত আগস্ট থেকে। যা এখনো চলছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রাপ্ত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। রোহিঙ্গাদের কারণে অর্থনীতির ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে।

জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে। বর্তমানে চালের দাম বাড়ার পেছনে রোহিঙ্গা সমস্যার সম্পর্ক রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, একশ্রেণির মানুষ রোহিঙ্গাদের মুদ্রা কিনে নিচ্ছে। এসব মুদ্রা সরাসরি ব্যাংকে বিক্রি করা যায় না। ফলে ঘুরেফিরে তা চোরাকারবারিদের হাতে যাবে। এদিকেও নজর রাখতে বলেন তিনি।

নানামুখী সংকটে দেশে রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানির ব্যয় বাড়ছে। যার ফলে দেখা দিয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। চাহিদার তুলনায় কমেছে ডলারের জোগান। এ কারণে ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন ঘটছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, বর্তমানে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা ৭০ পয়সায়। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সা¤প্রতিক সময়ের রপ্তানি ও আমদানির ধারা দেখলে দেখা যায় এ দুটির মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্য হচ্ছে না।

তিনি বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে যেভাবে মূল্যপতন হচ্ছে আমদানির ক্ষেত্রে সেভাবে হচ্ছে না। এতে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। আমদানি-রপ্তানির নামে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে কিনা সে বিষয়টা খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে।

এদিকে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফিতি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে সরকারের সার্বিক মূল্যস্ফিতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফিতির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশ। শহরে এই হার ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমনিতেই দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। এরমধ্যে অতিমাত্রায় বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হিসাবে করে দেখেছে, বাংলাদেশে বর্তমান যে মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা আমদানি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। পেঁয়াজের এই সংকট সৃষ্টির জন্য শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।

519 ভিউ

Posted ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com