কক্সবাংলা ডটকম(১৩ নভেম্বর) :: অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশী পণ্যের অন্যতম বৃহৎ রফতানি বাজার ইউরোপ। এ অঞ্চলেও কমেছে বাংলাদেশী পণ্য রফতানি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ইউরোপের ২৮টি দেশের মধ্যে ২১টিতে রফতানি কমেছে ৮ শতাংশের বেশি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যের ভিত্তিতে রফতানি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রফতানির অন্যতম প্রধান বাজার জার্মানি। চলতি অর্থবছরের চার মাসে জার্মানিসহ ইউরোপের ২১টি দেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি হয়েছে ৬৬৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৫ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে ২১টি দেশে রফতানি হয়েছিল ৭৩০ কোটি ১৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩২১ ডলারের। এ হিসাবে ২১ দেশে পণ্য রফতানি কমেছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ।
আর সার্বিকভাবে ইউরোপের ২৮ দেশে বাংলাদেশের রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ইপিবির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ইউরোপের ২৮টি দেশে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি হয়েছিল ৭১২ কোটি ৯৬ লাখ ২৬ হাজার ৩৩৭ ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রফতানি হয়েছিল ৭৬৯ কোটি ৬২ লাখ ৬৪ হাজার ৫০৯ ডলারের।
জার্মানি ছাড়া ইউরোপের যেসব দেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি কমেছে সেগুলো হলো অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, সাইপ্রাস, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, স্পেন, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ক্রোয়েশিয়া, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সুইডেন ও স্লোভাকিয়া। এর মধ্যে জার্মানিতে কমেছে ১০ শতাংশ। এছাড়া আলোচ্য সময়ে যুক্তরাজ্যে ২ ও নেদারল্যান্ডসে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ কমেছে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি।
বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া পণ্যের ৮০ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক। ইউরোপের ২১টি দেশে রফতানি কমে যাওয়ার কারণও তৈরি পোশাকের রফতানির পতন। ইপিবির রফতানি পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বড় বাজারগুলোর মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যে পোশাক রফতানি কমেছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৯৯, ৩ দশমিক ৭৮, ৪ দশমিক ৭৪ ও ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আর গোটা ইউরোপে পোশাকপণ্য রফতানি কমেছে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরেও পোশাকপণ্যের রফতানি কম ছিল। আর চার মাসেও সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে পোশাক রফতানি হয়েছে ১৩৯ কোটি ২০ লাখ ৪০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ১৫০ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাকপণ্য।
ইতালিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে পোশাক রফতানি হয়েছে ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। গত অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ৩৫ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলারের পোশাক। স্পেনে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রফতানি হয়েছে ৬০ কোটি ৮৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পোশাক। গত অর্থবছরের একই সময়ে দেশটিতে পোশাক রফতানি হয়েছিল ৬২ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলারের।
ইউরোপের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও অপ্রচলিত বাজারেও পোশাক রফতানি কমেছে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ শতাংশেরও কম। আর কানাডায় রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
নিট পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ইউরোপসহ বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মোট রফতানি কমে যাওয়ার মূল কারণ পোশাকের রফতানি কমে যাওয়া। আর পোশাকের রফতানি কমে গেছে মূলত বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা দুর্বল হওয়ায়। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা দুর্বল হয়েছে মূলত মুদ্রাবিনিময় হারের কারণে। মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে নিট পণ্যের অধিকাংশ ক্রয়াদেশ অন্যত্র চলে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে রফতানিতে।
Posted ১১:৩৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta