সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশে এত স্বর্ণ আসে কোন পথে?

শুক্রবার, ২৬ মে ২০১৭
542 ভিউ
বাংলাদেশে এত স্বর্ণ আসে কোন পথে?

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ মে) :: বাণিজ্যিকভাবে আমদানির অনুমতি না থাকলেও জুয়েলারি দোকানে অভাব নেই স্বর্ণের। এরপরও এত আসে কোন পথে—এ নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। কেউ বলছেন, জুয়েলারি দোকানগুলোর খুব সামান্য পরিমাণই বৈধ পথে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোরাই পথে আসা বিক্রি হয় জুয়েলারি দোকানগুলোতে।

তবে  ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা অবৈধ পথে আসা দিয়ে ব্যবসা করেন না। লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) ও স্থানীয়ভাবে পোদ্দার ও প্রবাসীদের কাছ থেকে তারা কিনে বিক্রি করেন। তবে বর্তমানে এলসি খুলে  আমদানি খুবই জটিল। তাই তারা এরইমধ্যে আমদানি নীতিমালা সহজ করাসহ আমদানি শুল্ক কমানোর দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জুয়েলারি দোকানগুলোর স্বর্ণের বড় অংশই চোরাই পথে আসে। সামান্য পরিমাণ স্থানীয় বাজার থেকে সংগ্রহ করা হয়। অস্ত্র ও মাদক পাচারের অর্থের বিনিময়ও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিয়ে হয়। প্রায়ই দেশের বিমান ও স্থলবন্দর কিংবা বিভিন্ন চোরাই পথে আসা জব্দ হচ্ছে এই পণ্য। কাস্টম্‌স ও শুল্ক গোয়েন্দারা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও প্রায় জব্দ করছেন। চোরাই পথে আসা যেসব ধরা পড়ে না, সেগুলোই চলে যায় জুয়েলারি দোকানগুলোতে।

কয়েকদিন আগে আপন জুয়েলার্সের পাঁচটি শো-রুম থেকে সাড়ে ১৩ মন ও হীরা আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। যার আনুমানিক বাজার মূল্য আড়াইশ’ কোটি টাকা। শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আপন জুয়েলার্স থেকে আটক করা সাড়ে ১৩ মন স্বর্ণই অবৈধ পথে আসা। বৈধ পথে এসেছে এমন কোনও প্রমাণ ও কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। এ জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিম চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলেই তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।

গত মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক বাজেট আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক শামীমও স্বীকার করেন, চোরাই পথে আসা স্বর্ণের একটি বড় অংশ জুয়েলারি দোকানগুলোতে চলে যায়। এর ৩৫ শতাংশ তারা দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ করেন। উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণেও দেশে চোরাচালান বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আমদানি নীতিমালা সহজ ও তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধের দাবিতে জুয়েলার্স সমিতির সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এলসির মাধ্যমে আমদানি প্রক্রিয়া খুবই জটিল ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য তাঁতি বাজারের পোদ্দারদের কাছ থেকে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে কিনে ব্যবসা করি। অবৈধভাবে ব্যবসা করি না।’

এভাবে ব্যবসা বৈধ কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৈধ না হলে আমরা সরকারকে কিভাবে ভ্যাট দেই? এছাড়া সরকার তো কখনও বলেনি স্থানীয় ব্যবসায়ী কিংবা প্রবাসীদের নিয়ে আসা কেনা যাবে না। তবে আগামীতে সরকার নীতিমালা সহজ করে দিলে আমরা সেভাবেই কিনে ব্যবসা করব।’

আমদানি নীতিমালা সহজ ও জুয়েলারি দোকানগুলোতে কোন পথে আসে—জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের বিপক্ষে নই। আমরা কেবল চোরাচালানের বিরুদ্ধে। যেখানে প্রশ্ন থাকবে সেখানে আমাদের অভিযান চলবে। আমরা নিয়মিতভাবে এয়ারপোর্টগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে প্রচুর উদ্ধারও করছি। যারা এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। গত তিন বছরে প্রায় ১ হাজার ১০০ কেজির বেশি উদ্ধার ও শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। জিরো টলারেন্স নিয়ে চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে কাজ করছি আমরা।’

ড. মইনুল খান আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেক সৎ ব্যবসায়ী আছেন। সুনামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন। আমরা তাদের সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে একটা যুগোপযোগী আমদানি নীতিমালা যেন করা যায়, সে জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। বর্তমান নীতিমালার সিস্টেমে কোনও সমস্যা থাকলে সেটা সমাধানের চেষ্টা করব। আমাদের কোনও উদ্যোগ যদি ব্যবসায়ীদের কাজে লাগে, অবশ্যই আমরা সেই উদ্যোগ নেব।’

এ প্রসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ  বলেন, ‘স্বর্ণের বিষয়টি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এটি এক ধরনের কারেন্সি। এ কারণে দোকানদাররা চোরাচালানের আশ্রয় নিলেও এই ব্যাপারে খুব বেশি উদ্যোগ নেওয়া হয় না। এটি এমন এক সম্পদ, যা আন্তর্জাতিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়। ফলে এর আইনের কঠোরতা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর যেকোনও সীমাবদ্ধতার সুযোগ নেয় চোরাচালানিরা।

’ তিনি আরও বলেন, ‘চোরাচালান থেকেও ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করে, আবার ১০০ গ্রাম করে আনার যে সুযোগ আছে, সেখান থেকেও তারা সংগ্রহ করে। স্বর্ণের বাজারটা মূলত অস্বচ্ছ। এটাকে স্বচ্ছ করতে হলে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, আশেপাশের দেশগুলোতেও একইভাবে সংগ্রহ করেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। এর ক্ষুদ্র একটি অংশ বৈধ। বাকিটা অন্যরকম।’

542 ভিউ

Posted ১:৩৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৬ মে ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com