মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশে টয়োটার প্রাডোর কাছে শীর্ষস্থান হারাল মিৎসুবিশি পাজেরো

শনিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮
652 ভিউ
বাংলাদেশে টয়োটার প্রাডোর কাছে শীর্ষস্থান হারাল মিৎসুবিশি পাজেরো

কক্সবাংলা ডটকম(১ ডিসেম্বর) :: দেশে বিলাসবহুল ও দামি গাড়ির কথা বললে প্রথমেই আসে মিৎসুবিশির পাজেরোর নাম। একটা সময় বাংলাদেশে এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল) গাড়ির বাজারে শীর্ষস্থানে ছিল পাজেরো। ২০০৫ সালের দিকেও বাজারের ২৫ শতাংশ দখলে রেখেছিল এ মডেলের গাড়ি।

তবে গত দুই দশকের ব্যবধানে টয়োটার ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডোর কাছে শীর্ষস্থান হারিয়েছে পাজেরো। বর্তমানে দেশে এসইউভির বাজারের ৩৪ শতাংশ প্রাডোর দখলে। অন্যদিকে পিছিয়ে পড়া পাজেরো বাজারের ২২ শতাংশ দখলে রেখেছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা পাজেরোর এ পিছিয়ে পড়ার পেছনে দুটি কারণের কথা বলছেন। প্রথমত, পাজেরোর দীর্ঘদিন ধরে মডেল পরিবর্তন না করা। এর বিপরীতে প্রতিযোগী গাড়িগুলোর ঘন ঘন মডেল বদল ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি। দ্বিতীয়ত, বেশির ভাগ সরকারি কর্মকর্তার পাজেরো ব্যবহার। সরকারি কাজে বেশি ব্যবহূত হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে পাজেরো এড়িয়ে চলার একটা প্রবণতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

বিআরটিএর তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এসইউভি বাজারের অর্ধেকের বেশি দুই জাপানি প্রতিষ্ঠান টয়োটা ও মিৎসুবিশির দখলে। এ দুটি কোম্পানির তৈরি ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো ও পাজেরোর নিয়ন্ত্রণে আছে ৫৬ শতাংশ বাজার। অন্যদিকে ২২ শতাংশ বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ভারতীয় মোটরগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটার নিক্সন।

এ তিন প্রতিষ্ঠান মোট এসইউভির বাজারের ৭৮ শতাংশ দখলে রেখেছে। এর বাইরে চীনা মোটরগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হাভালের এইচ সিরিজের এসইউভি, জাপানি প্রতিষ্ঠান নিশানের পেট্রোল ও এক্সট্রেইল, হোন্ডার সিআরভি, ফ্রেঞ্চ মোটরগাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পুজোসহ আরো কয়েকটি কোম্পানি বাংলাদেশে এসইউভি গাড়ি বিপণন করছে।

বর্তমানে এসইউভির বাজারে টয়োটার প্রাডো শীর্ষে থাকলেও ২০০৫ সালে শীর্ষে ছিল মিৎসুবিশির পাজেরো। তখন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠান দুটির বাজার দখল ছিল যথাক্রমে ২৫  ও ২৩ শতাংশ।

বাংলাদেশে পাজেরোর বিক্রি ও জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার জন্য মডেলে নতুনত্ব না আনাকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকল ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি ও এএম গ্রুপের চেয়ারম্যান হাবিব উল্লাহ ডন।

তিনি বলেন, মিৎসুবিশির পাজেরোর বাজার হারানোর মূল কারণ, তারা মডেলে নতুনত্ব আনতে পারেনি। পাজেরোর যে মডেলটা বর্তমানে বাজারে চলছে, সেটা ২০ বছর আগের। তারা সেই মডেল থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। আর এ ২০ বছরে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো সাত-আটবার মডেল পরিবর্তন করেছে। স্বভাবতই পুরনো মডেল ও প্রতিযোগী অন্য গাড়িগুলোর চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা থাকায় পাজেরো বাজার হারাতে শুরু করেছে। পাশাপাশি পাজেরোর ইঞ্জিন নিয়েও আমাদের কাছে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ করেন ক্রেতারা।

এর বিপরীতে প্রাডোর নতুন নতুন মডেল বাজারে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাডো প্রায় প্রতি তিন বছর অন্তর মডেল পরিবর্তন করে আসছে। ইঞ্জিন নতুন, ভেতরের কাঠামো নতুন। অপশন অনেক বেশি। এজন্য বাজারে প্রাডোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

বাজারে পাজেরো গাড়ির যন্ত্রাংশ সরবরাহ কমে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে। বিষয়টি সম্পর্কে বারভিডা সভাপতি বলেন, বাজারে যে গাড়িটি বেশি চলবে, সেই গাড়ির স্পেয়ার পার্টস বেশি আমদানি করবেন ব্যবসায়ীরা। এটাই তো স্বাভাবিক। পাজেরো কম চলছে, তাই এ গাড়ির পার্টস ব্যবসাও কমে আসছে। এর বিপরীতে ল্যান্ড ক্রুজারের পার্টস সহজলভ্য।

গতকাল রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একাধিক মোটরগাড়ির শোরুমে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাজেরো জিএলএস মডেলের তিন হাজার সিসির এসইউভির বাজারমূল্য শুল্ক বাদ দিয়ে ১ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা শুল্ক যোগ হবে। অর্থাত্ একটি তিন হাজার সিসির পাজেরো কিনতে খরচ পড়বে প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। পাজেরো ছাড়াও মিৎসুবিশির আরেকটি এসইউভি আউটল্যান্ডারও দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে ইঞ্জিনভেদে শুল্ক বাদ দিয়ে প্রতিটি টয়োটা প্রাডোর দাম ৭৫ লাখ থেকে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে বিক্রেতা জানিয়েছেন, উচ্চ সিসির প্রতিটি প্রাডো শুল্কসহ সাড়ে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকায় বিক্রি হয়। প্রাডো ছাড়াও এলসি ২০০, রাশ ও পিকআপ হাইলাক্সের চাহিদাও বাড়ছে।

বাংলাদেশে উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে পাজেরো ব্যবহার বেশ লক্ষণীয়। সরকারি মন্ত্রী, আমলা ও কর্মকর্তাদের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা হয় এসব গাড়ি।

প্রশাসনের লোকজনের মধ্যে ব্যবহার বেশি হওয়ায় সাধারণ অভিজাতদের মধ্যে পাজেরো ব্যবহারে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান হকস বে অটোমোবাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হক।

বাংলাদেশে পাজেরোর বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসইউভি সাধারণত সমাজের উঁচু শ্রেণীর মানুষরাই ব্যবহার করে থাকেন। তাদের বেশির ভাগেরই গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বিলাসী মনোভাব ও সামাজিক মর্যাদা কাজ করে। পাজেরো একসময় আমদানি হতো জাপান থেকে। পরে যখন দেশে সংযোজন (বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ এনে তৈরি) শুরু হলো, তখন পাজেরোটা সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

আবার শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ায় রাজনীতিবিদদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পাজেরো। ইউএনও থেকে শুরু করে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা পাজেরো ব্যবহার করেন। মূলত রাজনীতিবিদ ও সরকারি আমলারা ব্যবহার করার কারণেই সাধারণ অভিজাত শ্রেণী পাজেরো এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন।

এখানে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় ১ কোটি টাকার মধ্যেই একটি পাজেরো কেনা যায়। সাধারণ ক্রেতারা তো শুল্কমুক্ত সুবিধা পান না। তাই অতিরিক্ত ৬০-৭০ লাখ টাকা পাজেরোর পেছনে ব্যয় না করে প্রাডো, নিশানের মতো অন্য গাড়ির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এছাড়া পাজেরোর তুলনায় পার্টস রিপেয়ারিং সুবিধা, স্টাইল ও মডেলের কারণে ক্রেতারা প্রাডোর দিকে বেশি ঝুঁকছেন বলে মনে করেন তিনি।

652 ভিউ

Posted ৭:১৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ ডিসেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com