কক্সবাংলা ডটকম(২৬ ফেব্রুয়ারী) :: রাখাইন রাজ্য সংলগ্ন বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া ও প্রাসঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণের জন্য প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলারের বাজেট অনুমোদন করেছে মিয়ানমারের পার্লামেন্ট। গত আগস্ট মাসের পর থেকে ওই এলাকা থেকে প্রায় সাত লাখ মানুষ পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ো জাউ অং এমপি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বর্ডার্স অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাজেটের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই তিন মন্ত্রণালয়ই নিয়ন্ত্রণ করে সামরিক বাহিনী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মন্ত্রী জেনারেল অং সো স্বীকার করেন যে, বাজেট অনুমোদন হয়েছে এবং ২৯৩ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ২০২ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া নির্মাণ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের অনেকের মধ্যে এই ধারণা রয়েছে যে তারা বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী, যদিও তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছে। অধিকাংশ রোহিঙ্গা সেখানে ব্যাপক সামাজিক ও সরকারী বৈষম্যের শিকার।
মূলত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস সহিংসতা থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জাতিগত নির্মূল অভিযানের অভিযোগ উঠেছে। একটি রোহিঙ্গা জঙ্গি গ্রুপ ৩০টিরও বেশি পুলিশ আউটপোস্টে হামলার পর সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালায়।
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে নিশ্চয়তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। অনেকেরই ফেরার মতো কোন জায়গাও নেই, কারণ তাদের গ্রামগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের উন্নয়নমূলক প্রকল্প ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তামূলক এজেন্সি ইউএসএইড। মিয়ানমারের সবচেয়ে অনুন্নত রাজ্য হল কায়াহ। সেখানে বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর মধ্যে দীর্ঘ লড়াইয়ের ইতিহাস আছে। সেখানে ওই পরিমাণ অর্থ দিয়ে মৌলিক সেবা খাতগুলোর উন্নয়ন করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে ইউএসএইড।
ওই এজেন্সি থেকে দেয়া একটি বিবৃতিতে মিয়ানমারে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট মারসিয়েল বলেন, মিয়ানমারের জনগণ, বিশেষ করে সংঘাতকবলিত সম্প্রদায়ের জীবনমানের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন প্রতিশ্র“তিবদ্ধ, তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক পটপরিবর্তনকে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন গ্রুপ, সুশীল সমাজ ও সরকারের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অনুমোদন করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউএসএইডের ওই প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘অ্যাডভান্সিং কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট ইন সাউদার্ন মিয়ানমার’।
স্থানীয় চারটি সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া অর্থ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবহার করবে। এর ফলে কায়াহ রাজ্যে স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত ও দৃঢ় হবে।
Posted ৩:০১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta