শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বিনম্র শ্রদ্ধায় ৭১’র শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে জাতি

শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮
276 ভিউ
বিনম্র শ্রদ্ধায় ৭১’র শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে জাতি

কক্সবাংলা ডটকম(১৪ ডিসেম্বর) :: ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে জাতি। ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাকহানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

মুক্তিযুদ্ধকালে পুরো সময়জুড়েই পাকিস্তান হানাদার ও বদরবাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা। দেশকে মেধাশূন্য করে দিতে পরিকল্পিতভাবে তালিকা করে চালানো হয়েছিল এই হত্যাযজ্ঞ।

মুক্তিযুদ্ধে যোগদান, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশের কথা বলতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল এসব সূর্যসন্তানদের যাদের বাণী ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায়।
কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পর কোথায় আজকের বুদ্ধিজীবী সমাজ?

রাষ্ট্রের যেকোনও সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কার বাণী কানে বাজবে তরুণদের? বর্তমান সময়ের বুদ্ধিজীবী ও তরুণদের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ বলছেন, আমাদের দেশে দীর্ঘ সময় ধরে সুকৌশলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার কারণে নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করা মানুষ অবশিষ্ট থাকেননি।

তাদের  মতে, দলীয় লেজুরবৃত্তির প্রবণতা এবং কিছু সুবিধা পাওয়ার আশায় এমন এক প্রজন্ম দাঁড় হয়েছে যাদের কাছে আমরা সেই স্বাধীন চিন্তা পাই না।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, বুদ্ধিজীবী সবসময়ই বিদ্যমান ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে বদল ঘটাতে চায়। যখন যারা ক্ষমতাশালী তাদের সাথে থাকলে সুবিধা পাওয়া যায় বটে, তাকে কোনোভাবেই বুদ্ধিজীবী বলা যায় না।

যখন যে সরকার আসবেন তাদের অনুসারী কিছু বিজ্ঞজনকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা বিদ্যমান ব্যবস্থাকে চ্যলেঞ্জ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের আপনি বিদ্বান বলতে পারেন, তারা বুদ্ধিজীবী নন, বুদ্ধিজীবীর দায় থাকে, সমাজের মানুষের প্রতি।

তিনি আরও বলেন,১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তারা সামরিক শাসক চালিত রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করেননি।

যে যাকে পছন্দ করে সেই তার কাছে বুদ্ধিজীবী বলে উল্লেখ করে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন বলেন, বাণী শুনতে চাই তাদেরই ব্যক্তি যাকে পছন্দ করে। কিন্তু তার ওপর নির্ভর করে তো বুদ্ধিবৃত্তি চর্চা হয় না। কিন্তু এখন এটিই  কোনও দলীয় বুদ্ধিজীবীর রেওয়াজ দাঁড়িয়ে গেছে। কোনদিনই একজন বুদ্ধিজীবী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হননি, এটি সম্ভব না।

যার যার আদর্শের লোক তাকে বেছে নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারপর কিছু কিছু বিষয়ে দলের বাইরে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়, বুদ্ধিজীবীকে সেই ডিলেমাটা কাটাতে পারতে হবে।
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক মনে করেন আমাদের দেশে দীর্ঘ সময় ধরে সুকৌশলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নির্মোহ বিশ্লেষণ ও দিক নির্দেশনা দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যেগুলো জনমত প্রভাবিত করতে পারতো, রাজনৈতিক কূটচালের মাধ্যমে তাদেরকে ধ্বংস করে সেখানে দলীয় লোকজন বসানো হয়েছে।

একাত্তর সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, পরবর্তীতে হয়তো শারিরীকভাবে এতো বুদ্ধিজীবী একসঙ্গে হত্যা করা হয়নি, কিন্তু মানসিকভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার রেশ এই স্বাধীন বাংলাদেশেও রয়ে গেছে।
.রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ (ছবি: ফোকাস বাংলা)তিনি আরও বলেন, যার ফলে স্বাধীন, সাহসী, স্বতন্ত্র স্বরগুলো চাপা পড়ে গেছে। পুরো সিস্টেম এমনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে যেখানে দলীয় সংকীর্ণ মনোভাবাপন্ন লোকজনকে প্রমোট করা হয়েছে। মিডিয়ায় এদেরকে বড় বুদ্ধিজীবী হিসেবে দেখানো হয়েছে, বিভিন্ন পুরস্কার, বিভিন্ন সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার দায়িত্বে এদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে। জাতির সামনে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে যে এরা বুদ্ধিজীবী। অন্যান্য সম্ভাবনাগুলোকে ভয় দেখিয়ে অথবা কৌশলে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা হয়েছে। জাতি শ্রদ্ধা ভরে শুনবে এমন কণ্ঠস্বর এই দেশে নেই, কারণ যাদের সেই সম্ভাবনা ছিল তাদেরকে বিকশিত হতে দেয়নি এই জাতির সিস্টেম।

বুদ্ধিজীবী দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিনয় এবং শ্রদ্ধায় জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে। ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে স্তূপ করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল ঢাকার কয়েকটি এলাকায়। তাদের হত্যা করেই ক্ষান্ত দেয়নি দখলদার পাকহানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস। তাদের মৃতদেহকে বিকৃত করে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল।

চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুইদিন আগে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এরপর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির উন্নয়ন এবং অগ্রগতির রূপকার। তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সৃজনশীল কর্মকাণ্ড, উদার ও গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা জাতীয় অগ্রগতির সহায়ক। জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত দেশের বুদ্ধিজীবীরা তাদের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে পরামর্শ প্রদানসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপুল অবদান রাখেন।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে দেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে নামে। তারা বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্যদিয়ে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়। বাংলাদেশ যাতে আর কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সেটাই ছিল এ হত্যাযজ্ঞের মূল লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী দল-মত নির্বিশেষে একাত্তরের ঘাতক, মানবতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত চক্রের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
 বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয়ভাবে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ নানা পেশাজীবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা, মৌন মিছিল ইত্যাদি। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এদিন সকাল ৭টা ৫ মিনিটে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ৭টা ৬ মিনিটে মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহিদ পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭টা ২২ মিনিটে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।

276 ভিউ

Posted ১:৪০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com