কক্সবাংলা ডটকম(৫ এপ্রিল) :: ভারতের কাছে ২.৬ বিলিয়ন ডলারে ২৪টি এমএইচ-৬০আর হেলিকপ্টার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই হেলিকপ্টারকে মূলত সাবমেরিন ধ্বংসের জন্য ও নজরদারীর কাজে ব্যবহার করা হয়। ভারত তাদের বহরে থাকা ব্রিটিশ সি কিং হেলিকপ্টারগুলো বদলে ফেলার জন্য এমএইচ-৬০আর অ্যাডভান্সড হেলিকপ্টারগুলো কেনার আবেদন করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্কের কারণে এবং ওয়াশিংটনে ভারতের শক্তিশালী লবি থাকার কারণে এই অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত বিবেচনা করে অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে।
ইন্দো প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, “প্রস্তাবিত এই বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার অনুকূলে এবং এটা যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে এবং আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অংশীদারের নিরাপত্তার উন্নতিতে ভূমিকা রাখবে”।
বেল্ট অ্যান্ড রোডের মধ্য দিয়ে নিজেদের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিপুল বিনিয়োগ করছে চীন এবং এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এখন ভারতের চারপাশের বিভিন্ন বন্দরের দখল নিতে শুরু করেছে। বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মধ্য দিয়ে এবং পাকিস্তানের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে এরই মধ্যে গোয়াদার বন্দরে প্রবেশ সুবিধা পেয়েছে চীন।
সম্প্রতি শ্রীলংকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হামবানতোতা বন্দরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে চীন এবং ভারত এখন নিজেদের সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। ভারত বারবার দাবি করে আসছে যে, ভারত মহাসাগরে চীনের সাবমেরিন টহলের মাত্রা বেড়ে গেছে এবং এজন্য তারা প্রতিবাদও করে আসছে।
এই অবাধ বিচরণশীল ড্রাগনের ডানা ছেটে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু ভারতকে প্রধান কৌশলগত মিত্রজ্ঞান করছে, তাই বিগত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। যদিও শীতল যুদ্ধকালীন সময়ে দুই দেশের সম্পর্ক ভালো ছিল না।
উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক প্রযুক্তি কেনার সুযোগ রয়েছে ভারতের
সম্প্রতি ভারত নিম্ন কক্ষপথে স্যাটেলাইট বিধ্বংসী মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে। এর মাধ্যমে চীনকে তারা এই বার্তা দিয়েছে যে, তাদেরও এই সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে, চীন ২০০৭ সালে যে সক্ষমতা অর্জন করে। যদিও ২০১২ সালেই এ সক্ষমতা অর্জন করেছে ভারত, কিন্তু এখন এটার প্রদর্শণী করার কারণ হলো এটাকে ব্যবহার করে মোদি আসন্ন নির্বাচনে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।
গত বছর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে যে ২+২ সম্মেলন হয়, সেখানে দুই দেশের মধ্যে কমিউনিকেশান কমপ্যাটিবিলিটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এগ্রিমেন্ট (সিওএমসিএএসএ) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এটাকে মাইলফলক একটা চুক্তি হিসেবে দেখা হয়, যেটার কারণে চীনকে মোকাবেলার জন্য উচ্চ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কিনতে পারবে ভারত।
পাকিস্তান ও চীন সীমান্তে নজরদারির জন্য ভারত সশস্ত্র ড্রোন কেনার কথা ভবছে। চীনের সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের যে সব সীমাবদ্ধতা রয়েছে বিগত দোকলাম অচলাবস্থার সময় সেগুলো প্রকটভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সিওএমসিএএসএ চুক্তির অধীনে ভারত কিছু প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাবে, যেগুলো হয়তো গবেষণা ও উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। সেগুলো কাজে লাগিয়ে নিজস্বভাবে সরঞ্জামাদি তৈরির সুযোগ রয়েছে ভারতের।
Posted ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৫ এপ্রিল ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta