কক্সবাংলা ডটকম(৯ জুন) :: ভারতের সাধারণ নির্বাচন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়ই শুধু নয় এবার দীর্ঘতম সময় ধরেও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে চমক জাগানো রেকর্ডটি গড়েছে নির্বাচনী ব্যয়ে। ভারতে চলতি বছর অনুষ্ঠিত বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে সবমিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ৮৬০ কোটি ডলার বা ৫৯ হাজার ৬৭৫ কোটি রুপি। অর্থাত্ নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত খরচের হিসাবে এই নির্বাচনই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ব্যয়বহুল।
দিল্লিভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ (সিএমএস) নামে ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাব করে দেখিয়েছে, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের ব্যয় ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যয়কেও ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন গবেষণা সংস্থা ওপেন সিক্রেটের হিসাবে, ট্রাম্পের ইতিহাস গড়া ওই নির্বাচনে মোট খরচ হয়েছিল ৬৫০ কোটি ডলার। তাছাড়া ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন, যে নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি বিপুল ভোটে বিজয়ী হন তখনকার খরচও এবারের খরচের অর্ধেক ছিল।
জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে নির্বাচনে মোট ব্যয় এই গবেষণার হিসাবে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর আসন নিশ্চিত হওয়া এ নির্বাচনে গতবারের (২০১৪ সাল) নির্বাচনের দ্বিগুণ ব্যয় হয়েছে। এই নির্বাচনই মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে পার্লামেন্টে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে মোদিকে কার্যত ভারতের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।
সিএমএসের গবেষণায় আরো উঠে এসেছে, নির্বাচনে অভাবনীয় ফলাফল করার পেছনে রয়েছে বিজেপির সবার চেয়ে বেশি আর্থিক সুবিধা পাওয়া। হিন্দুত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তাকে ইস্যু করে সারা দেশে তারা ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা বাবদ মোট ব্যয়ের ৫৫ শতাংশই বিজেপির; টাকার অংকে ৪৫০ কোটি ডলার বা ৩১ হাজার ২২৫ কোটি রুপি।
অপরদিকে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যয়ের অনুপাত মাত্র ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। তাছাড়া এবার দলটি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন আসন (লোকসভায় ৫৪৩টির মধ্যে ৫২) পেয়েছে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৬০ কোটির বেশি মানুষ ভোট দিয়েছে। পোলিং স্টেশন ছিল ১০ লাখের বেশি। এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত সাত ধাপে সাত সপ্তাহ ধরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জড়িত ছিলেন প্রায় এক কোটি কর্মকর্তা।
নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ব্যয় হয়েছে একশ কোটি ডলারের বেশি। যা ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিগুণ। সিএমএস দাবি করছে, মোট খরচের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নগদ অর্থ। জরিপে অংশ নেয়া ১০ থেকে ১২ শতাংশ ভোটার স্বীকার করেছেন, তারা ভোটের আগে প্রার্থীদের কাছ থেকে নগদ টাকা পেয়েছেন।
সিএমএসের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটারদের নানাভাবে প্রলুব্ধ করা হয়েছে। ভোট দিলে এবং দল ক্ষমতায় এলে কীভাবে লাভবান হবেন- ভোটারদের কাছে সেসব নানা অফার নিয়ে গেছেন প্রার্থীর প্রতিনিধিরা।
অবশ্য অবৈধভাবে টাকা বিলির অভিযোগ নির্বাচনের সময়ই একাধিকবার সামনে এসেছে। নির্বাচন কমিশন ১১ সপ্তাহের নির্বাচনী প্রচারণার সময় মোট ৫০ কোটি ডলার মূল্যমানের নগদ অর্থ, স্বর্ণ, মদ ও নানা ধরনের মাদক জব্দ করেছে।
সিএনএন
Posted ২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ জুন ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta