কক্সবাংলা ডটকম(২ ডিসেম্বর) :: প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজ শুরু করার মধ্য দিয়ে বিশ্বের পারমাণবিক ক্লাবে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ভারত ও পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক প্রযুক্তি ব্যবহারকারী তৃতীয় রাষ্ট্র। দেশটির পারমাণবিক ক্লাবে যোগদান দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি কাঠামো বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানী থেকে ১৬০ কি.মি. দূরে পাবনা জেলার রূপপুরে এই নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। সেখানে প্রতিটি ১,২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি চুল্লী নির্মিত হচ্ছে রাশিয়ার সহায়তায়। একটি চুল্লী চালু হবে ২০২৩ সাল নাগাদ, অন্যটি পরের বছর।
বাংলাদেশের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজে ভারতও সহায়তা করছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই’কে জানিয়েছেন ভারতের এটমিক এনার্জি কমিশনের চেয়ারম্যান শেখর বসু। এ ব্যাপারে গত এপ্রিলে ঢাকার সঙ্গে একটি বেসামরিক পারমাণবিক সহায়তা চুক্তি সই করে নয়া দিল্লি। এর বাইরে আরো দুটি চুক্তি সই করা হয়। এর আওতায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরঞ্জাম ও উপাদন সরবরাহ ও উৎপাদন করবে ভারত।
আর এটাই হবে দেশের বাইরে ভারতের প্রথম পারমাণবিক শক্তি-সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য। ১৯৭৪ সালে ভারত প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়। কিন্তু এরপর দেশটির ওপর পানিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আন্তর্জাতিক রমাণবিক সংস্থা।
রূপপুরে চুল্লী নির্মাণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক এলেক্সি লিখাচেভ উপস্থিত ছিলেন। ‘প্রথম কংক্রিট’ ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে রূপপুর প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হলো।
বাংলাদেশের রেগুলেটরি অথরিটি (বিএইআরএ) গত ৪ নভেম্বর চুল্লী দুটির ডিজাইন ও নির্মাণের অনুমতিপত্র হস্তান্তর করেছে।
বর্তমানে এই চুল্লী দুটি নির্মাণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ২,২০০ কর্মী। এর মধ্যে রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ রয়েছেন ৪৫০ জন। মূল নির্মাণ শুরুর পর এই কর্মী সংখ্যা দাঁড়াবে ১২,৫০০। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে আসা বিশেষজ্ঞ থাকবেন ২,৫০০ জন।
ভারতের কুদানকুলামে নির্মিত পারমাণবিক চুল্লী থেকে রূপপুরের চুল্লীগুলো খুব একটা তফাৎ হবে না। ভারতের চুল্লীটি নির্মাণ করে রাশিয়ার এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট।
ভিভিইআর-১২০০ চুল্লীগুলোর মূল নির্মাতা রাশিয়ার নভোভোরোনেজ পাওয়ার প্লান্ট। ইতোমধ্যে এ ধরনের চুল্লী বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
চুল্লীগুলোর ডিজাইনে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মাণদণ্ড পুরোপুরি অনুসরণ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা বিদ্যুৎ বিষয়ক জার্নালে দ্বিতীয় নভোভোরোনেজ পাওয়ার প্লান্টকে বিশ্বের তৃতীয় সেরা পারমাণবিক ইউনিট খেতাব দেয়া হয়েছে।
Posted ১:৫২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta