কক্সবাংলা ডটকম(৫ মে) :: ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ‘টু-প্লাস-টু’ মন্ত্রী পর্যায়ের স্থগিত সংলাপ চলতি বছর গ্রীষ্মের শেষ দিকে হতে পারে। গত সপ্তাহে মার্কিন সিনেট নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মাইক পম্পেওকে নিশ্চিত করার পর এ বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুই দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠকের জন্য ১৮-১৯ এপ্রিল সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পম্পেওয়ের মনোনয়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় ওই বৈঠক স্থগিত করতে হয়। মার্চে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের বদলে ৫৪ বছর বয়সী সাবেক সিআইএ ডিরেক্টর পম্পেওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পেন্টাগনের চিফ প্রেস সেক্রেটারি ডানা হোয়াইট বলেন, আলোচনার সময় পুনর্নির্ধারণ করা হবে কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোন তারিখের কথা বলেননি তিনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সংলাপ স্থগিত করা হয়েছিল। এখন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন। আমরা দফতরের সাথে কথা বলে নিকট ভবিষ্যতে সময় পুনর্নির্ধারণ করবো”।
গত গ্রীষ্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় এই টু-প্লাস-টু বৈঠকের ঘোষণা দেয়া হয়। আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যে কোন সময় এই বৈঠক হতে পারে। কিছু সূত্রে জানা গেছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সাথে ট্রাম্পের সম্ভাব্য বৈঠকের পরপরই এ সংলাপ হতে পারে।
ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এটা প্রথম টু-প্লাস-টু বৈঠক। এই বৈঠকে ইন্দো-প্রশান্ত, ইউরেশিয়া এবং পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে নতুন করে পর্যালোচনা করা হবে। বিশ্ব রাজনীতির প্রধান দিকগুলো নিয়ে এই সংলাপে আলোচনা হতে পারে।
ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে চীনের মোকাবেলার জন্য ভারত-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব জোরদার করার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। যদিও উহান সম্মেলনের ভেতর দিয়ে ভারত-চীন সম্পর্কে স্থিতিশীলতা আনার প্রচেষ্টা হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, ভারতের গোয়ায় দ্বিপাক্ষিক নৌ নিরাপত্তা সংলাপের তৃতীয় দফা আলোচনায় আমেরিকান কর্মকর্তারা ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে সম্ভাব্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলেন।
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে আরও বেশি ভূমিকা রাখার জন্য ভারতকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং সমমনা শক্তিগুলো অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চল গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এছাড়া ওই বৈঠকে ইন্দো-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
আলোচনায় ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপের বিষয়ও উঠতে পারে, যেগুলো ভারতের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর মধ্যে রাশিয়ার অস্ত্র রফতানির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি রয়েছে, যে কারণে ভারতের বিদ্যমান অস্ত্রাদির জন্য নিয়মিত সরবরাহ এবং মস্কোর কাছ থেকে নতুন সরঞ্জামাদি কেনার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পারমানবিক চুক্তি পরিত্যাগের সম্ভাব্যতা (যেটা ভারতীয় স্বার্থে প্রভাব ফেলবে), বাণিজ্য শুল্ক এবং এইচ১-বি ভিসা নীতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।
এর আগে, ওবামা প্রশাসনের অধীনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দুই দফা কৌশলগত ও বাণিজ্যিক সংলাপ হয়েছিল। সে সব আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে বাণিজ্য মন্ত্রীরা অংশ নিয়েছিলেন।
Posted ৬:০৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta