কক্সবাংলা ডটকম(২৯ জুন) :: বাংলাদেশের সর্বত্রই মৌসুমী বায়ু আগমন হয়েছে। এই মুহূর্তে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন উপকূলের ওপরে একটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। সঙ্গে রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্তও।
নদীমাতৃক বাংলাদেশ। গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকায় এর অবস্থান। দেশের মধ্য দিয়ে ছোটবড় প্রায় ২৩০টি নদী বয়ে গেছে; যাদের গন্তব্য বঙ্গোসাগর।
উজান থেকে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে প্রায় প্রতি বছরই বর্ষাকালে ছোট থেকে মাঝারি আকারে বন্যা হয়। ১৯৮৮, ১৯৯৮ ও ২০২২ সালে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক বন্যা হয়েছিল।
প্রকৃতির এ রুদ্ররোষের কাছে মানুষ অসহায়। বন্যা শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এবারও বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে সিলেট, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নেত্রকোনা, রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলার অধিকাংশ নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
কয়েক দিন আগেই বন্যা দেখা দিয়েছিল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। একরকম তলিয়ে গিয়েছিল নদী তীরবর্তী অঞ্চল। টানা কয়েক দিনের ভোগান্তির পর নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
তবে এর রেশ না কাটতেই আবারও ধেয়ে আসছে বন্যা। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের অধিকাংশ জায়গায় ভারি বর্ষণ হতে পারে। আর এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ফের বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জুন) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের এক বার্তায় এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল বাড়ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি এবং আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে এ সময় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে।
একই সঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারা, পুরাতন-সুরমা, সারিগোয়াইন নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
অপরদিকে বৃষ্টি নিয়ে নতুন বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের বিভিন্ন এলাকায় টানা আট দিন অতিভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, সারা দেশে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত অতিবৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়াও পূর্বাভাস অনুযায়ী, অতিভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসেরও আশঙ্কা রয়েছে।
এর আগে টানা ভারি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের ফলে সিলেটের সমতল আর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বন্যায় তলিয়ে যায়। উজানের পানির কারণে দুটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। দেখা দেয় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাব। বন্ধ করে দেওয়া হয় পর্যটনকেন্দ্রগুলো।
Posted ১:২৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta