রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তদের সঞ্চয়ের সুযোগ কমছে

মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯
159 ভিউ
মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তদের সঞ্চয়ের সুযোগ কমছে

কক্সবাংলা ডটকম(৯ ডিসেম্বর) :: কখনো সুদের হার হ্রাস, কখনো কর বসিয়ে বা করহার বাড়িয়ে মধ্যবিত্তের সঞ্চয়ের পরিধি ছোট করা হয়েছে। স¤প্রতি মানুষের নিরাপদ বিনিয়োগের উৎস সঞ্চয়পত্র কেনার নিয়মে কড়াকড়িসহ উৎসেকর বাড়ানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে। দীর্ঘদিন পর ব্যাংক খাতে সুদহার কিছুটা বাড়ানোর সঙ্গে আমানত ইতিবাচক গতি না পেতেই ঋণের সুদ এক অঙ্কে নামানোর অজুহাতে সেখানেও ক্যাপ (সুদের সর্বোচ্চ সীমা) বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে পিপলস লিজিংয়ের অবসায়নের সিদ্ধান্তে নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতেও অনাস্থা তৈরি হয়েছে। ভালো ও মৌল ভিত্তির শেয়ারের অভাবে অর্থ বিনিয়োগের আরেকটি বড় খাত পুঁজিবাজারেও চলছে দুর্দিন।

এ ছাড়া কখনো মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম), কখনো কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে অর্থ বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন অনেকেই। এভাবে দিন দিন কমে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ ও সঞ্চয়ের জায়গা। সাধারণের মনে এখন একটাই প্রশ্ন- ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কোথায় টাকা সঞ্চয় করবে?

স্বাধীনতার পর ব্যাংকগুলোর একটি বিজ্ঞাপনের কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময় সবার নজর কাড়া বহুল প্রচারিত বিজ্ঞাপনটি ছিল, ‘চঞ্চল টাকা অঞ্চলে (আঁচলে) রেখো না’। আমানত বাড়াতে ওই প্রচারণা চালাত ব্যাংকগুলো। কিন্তু অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, অনেকটা বাধ্য হয়েই মানুষকে টাকা ‘অঞ্চলে’ রাখতে হচ্ছে। এখন মাসের বাড়তি খরচ মিটিয়ে সামান্য যে সঞ্চয় থাকে তা বাসায় ‘অঞ্চলে’ বা ‘বালিশের’ নিচেই রেখে দিচ্ছেন অনেকে।

বিশেষ করে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরা এখন তাদের সঞ্চয় ব্যাংক, পুঁজিবাজার বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ততটা আগ্রহী হচ্ছে না।

জানা গেছে, সাধারণের কাছে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় জায়গা ছিল সঞ্চয়পত্র। করের হার বাড়ানো এবং কড়াকড়ি আরোপ করায় সেখান থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মানুষ। ঢাকার বাসাবোর বাসিন্দা সাদিয়া মমতাজ। তার স্বামী থাকেন মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইয়ে। প্রতি মাসে স্বামী যে টাকা পাঠান, বিভিন্ন খরচ মিটিয়ে বাকি টাকায় কয়েক বছর আগে পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন তিনি।

‘আগে যা মুনাফা পাওয়া যেত এখন তার অনেক কম পাওয়া যায়’ জানিয়ে হতাশার সুরে তিনি বলেন, ‘প্রথম যখন কিনি মাসে প্রতি লাখে ১ হাজার ৭০ টাকা পেতাম। ২০১৫ সালের মে মাসে মুনাফার হার কমানো হলে পেতাম ৯১২ টাকা। এখন করের হার বাড়ানোয় পাচ্ছি ৮৬৪ টাকা। ‘তাছাড়া নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন লাগবে। আরো কত নিয়ম-কানুন! তাই এখন থেকে খরচ করে যা বাঁচবে, তা বাসায়ই রেখে দেব।’

সাদিয়া মমতাজের আক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায় জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যে। সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে ৯৮৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ৩৫৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আর চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৪ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের এই তিন মাসে বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪১২ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে গিয়ে দেখা যায়, আগের মতো সেই ভিড় নেই। কিছুসংখ্যক লোক মাসের মুনাফার টাকা তুলতে এসেছেন। ৭-৮ জন নতুন সঞ্চয়পত্রের জন্য টাকা জমা দিচ্ছেন। অথচ আগে লম্বা লাইন লেগেই থাকত। রাত ৮-৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হতো কর্মকর্তাদের।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত বলেন, ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার অনেক বেশি হওয়ায় গত কয়েক বছর সঞ্চয়পত্র বেশি বিক্রি হয়েছিল। সুদহার কমানো এবং সার্ভিস চার্জ বাড়ানোর কারণে সঞ্চয়পত্রে আগ্রহ কমছে।

বেসরকারি বিনিয়োগের গতিও মন্থর। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই সঞ্চয়ের একটা অংশ বিদেশে পাচার করছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির কারণেও মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা কমছে। এর প্রভাব পড়েছে জাতীয় সঞ্চয়ে। আর জাতীয় সঞ্চয় কাক্সিক্ষত হারে না বাড়ায় জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগও স্থবির হয়ে আছে। এতে নতুন শিল্প-কারখানা যেমন গড়ে উঠছে না, তেমনি কর্মসংস্থানও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই উচ্চ জিডিপি অর্জনে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারকে আরো নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাজার অর্থনীতিতে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (আরওআই) বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা যদি বিভিন্ন বাজারে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট দিতে না পারি তাহলে উন্নতি করা কঠিন হবে। কারণ যারা সঞ্চয়কারী তারা যে শুধু সঞ্চয় দেশে রাখবে তা নয়, তারা বিদেশেও সঞ্চয় করতে পারে। কাজেই আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গেও প্রতিযোগিতা করতে হবে। তা না হলে টাকা পাচার হয়ে যাবে। এ জন্য সঞ্চয়কে বাজারে আকর্ষণীয় রাখতে হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আর্থিক সেবায় আনা ও তাদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম জোরদার করেছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় সেবা পৌঁছাতে ব্যাংকগুলোকে এজেন্ট ব্যাংকিং চালুর অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিং গ্রামের মানুষের কাছে এখন বেশ জনপ্রিয়। ছোটবেলা থেকে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাংকিং চালুর করা হয়েছে।

এ ছাড়া আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য নামমাত্র জমায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

159 ভিউ

Posted ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com