আবুল বশর পারভেজ,মহেশখালী(৫ মে) :: ৬ মে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক জান্তাদের আক্রমনে মহেশখালী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আদিনাথ মন্দিরের পাদদেশে বৌদ্ধ বিহারে গন হত্যার স্মৃতি আজও চোখে বেশে আসে।
রাখাই সম্প্রদায়ের প্যাগুড়াতে ৬ মে পাকহানাদার বাহিনী কর্তৃক ভেঙ্গেফেলা বৌদ্ধ মূর্তি ৪৭ বছরেও পড়ে আছে মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির সংলগ্ন বৌদ্ধ বিহারের আঙ্গিনায়। এই স্মৃতি অযতœ অবহেলায় পড়ে থাকলেও কোন ভাবে সংরক্ষণ হয়নি স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
১৯৭১ সালে ২৫ শে মার্চে মধ্যরাতে পাকিস্তানের সামরিক জান্তার অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সর্বাতœক হত্য,ধষর্ণ ও ধংসযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী বাংঙ্গালীকে আতংকগ্রস্থ করা। ২৫ শে মার্চের রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহীনিরা ধর্ম,বর্ণ বিত্ত ও রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে গোটা জাতির উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল।এই ধারাবাহিকতা অনুসারে;১৯৭১ সালে ৬ মে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা মহেশখালীতে ব্যাপক নির্যাতন ওহত্যা কান্ড ও আক্রমন চালায়।
এই দিনে শ্রী শ্রী আদিনাথ পাহাড়স্থ রাখাইন শত বছরে পুরানো প্রাচীনতম প্যাগোডা থেকে ৫-৭ টি বৌদ্ধ মূর্তিকে কেটে পাহাড় উপর থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়।এই ভেঙ্গে দেওয়াগুলো মধ্যে কয়েকটি নিচে রাখাইন বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে।আর রাখাইন বৌদ্ধ বিহারে ভিতরে থাকা পিতল বৌদ্ধ মূর্তিকে স্বর্ণ মনে করে চোখ তুলে ফেলে তা এখনো প্রমাণ আছে আর বিহারে থাকা অনেক টাকা, মুল্যবান, স্বর্ণ বৌদ্ধ মূর্তি, পুরাতন ধর্মীয় গ্রন্থও লুট করে নিয়ে যায়।
পাহাড় উপর আক্রমন করা পর নিচে বৌদ্ধ বিহারে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু ও রাখাইন সম্প্রদায়ে শত শত মানুষের উপর গণহত্যা চালায়।আর বিহারে অধ্যক্ষ উতৈচিংদা মহাথেরকে নিরীহ জনগণ কে ধর্ম,জাত বেদাভেদ ভুলে সবাইকে আশ্রয় ও খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার কারণে তাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়।
হত্যা করা হয় তার অনেক শিষ্যকে ও তাদের মধ্যে আছে উক্যছামং (ধুমং) আরো অনেকে, সেই দিন বেঁচে আসা প্রত্যক্ষদূশীর্রা জানাই অধ্যক্ষ ভান্তে উতৈচিংদা অনেক চেষ্টা করেছিলেন সবাইকে বাঁচানো জন্য।কিন্তু কয়েকজন বেঁচে গেলে ও বাকীদেরকে বাঁচাতে তিনি সখম হলেন না।তিনিসহ শত শত মানুষকে একসাথে লাইন করে ব্রাশ ফায়ার করে গণহত্যা করা হয়।
বাংলাদেশে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অবদানে জন্য স্বীকৃতি পেলে ও শহীদ ভান্তে উতৈচিংদা মহাথের ও তার শিষ্যরা এখনো কোন স্বীকৃতি মেলেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান জন্য শহীদ ভান্তে উতৈচিংদা মহাথেরো ও তার শিষ্যদেরকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও রাখাইন বৌদ্ধ বিহারে উন্নয়নসহ সেখানে একটি স্মৃতি স্থম্ভ প্রতিষ্ঠা করা জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও দপ্তরের নিকট দাবী জানান স্থানীয় রাখাই সম্প্রদায়।
মহেশখালী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষ থেকে সেই স্মৃতি বিঝড়িত আদিনাথের পাদদেশে ভেঙ্গে ফেলা বৌদ্ধ মূর্তি ও বধ্যভূমিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করবেন। সেই ভয়লা স্মৃতির কথা ও তথ্য শহীদ (ভান্তে) উতৈচিংদা মহাথের ফাউন্ডেশন থেকে সংগৃহীত।
Posted ৬:৫২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta