কক্সবাংলা ডটকম(১৮ নভেম্বর) :: শ্রীলংকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ‘মৃত্যুর দূত’ খ্যাত গোতাবায়া রাজাপাকসে।সংখ্যালঘু তামিলদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, কারা-নির্যাতন চালানো সেই রাজাপাকসে পরিবারের কব্জায় এসেছে শ্রীলংকা। তামিলদের হত্যা করতে ডেথ স্কোয়াডের ‘উদ্ভাবক’ গোতাবায়া রাজাপাকসে (৭০) দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া তামিল টাইগার নিধন অভিযানের নিদের্শনায় ছিলেন তারই বড় ভাই ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে।আর সংখ্যালঘুদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুমের নেপথ্যে নায়ক ছিলেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া। সেই থেকেই নামের চেয়েও ‘ মৃত্যুর দূত’ উপাধিতেই বেশি কুখ্যাত তিনি।
শ্রীলংকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫২ দশমিক ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার আগেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। গোতাবায়া সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসের ভাই এবং গৃহযুদ্ধকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সিংহলিজ-বুড্ডিস্ট ন্যাশনালিস্ট পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। গত শনিবার অনুষ্ঠিত ভোটের ফলাফল বলছে, তিনি বেশ সহজ জয় পেয়েছেন। ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সিংহলি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় রাজাপাকসে স্পষ্ট ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে তামিল অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলে নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমাদাসা বেশি ভোট পেয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে সোমবার তার শপথ নেয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোতাবায়ার মুখপাত্র কহেলিয়া রম্বুকওয়েলার। বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, গোতাবায়া আমাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। আগামীকালই (আজ) শপথ নেবেন তিনি।
চলতি বছর ইস্টারের দিন শ্রীলংকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা গোতাবায়ার বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ওই ঘটনায় ২৫৯ জন প্রাণ হারান। এতে শ্রীলংকার পর্যটন শিল্প ও বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে আসে। নির্বাচনী প্রচারণায় বারবারই এ প্রসঙ্গ টেনে মানুষকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।
শ্রীলংকার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া সেনাবাহিনীতেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন এলটিটিইর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসানও তার হাত ধরেই।
সংখ্যালঘু মুসলিম ও তামিলদের সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হলেও সংখ্যাগুরু সিংহলিদের মধ্যে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বৌদ্ধদেরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোয় গোতাবায়াকে ‘চীনপন্থী’ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তিনি শ্রীলংকার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ভারত অস্বস্তিতে পড়েছে। কারণ চীনের সঙ্গে বরাবর সেতু হিসেবে কাজ করেছে রাজাপাকসে পরিবার। আগামী বছরের শুরুতে শ্রীলংকায় সংসদীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনের মাধ্যমে মাহিন্দা রাজাপাকসের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে ফেরার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
তবে এরই মধ্যে গোতাবায়াকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে মোদি শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, আমাদের দুই দেশ ও দেশের নাগরিকদের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি এবং গোটা উপমহাদেশের নিরাপত্তার জন্য আপনার সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে অপেক্ষায় রয়েছি। জবাবে গোতাবায়া লিখেছেন, ইতিহাস ও বিশ্বাসের নিরিখে আমাদের দুটি দেশ একই সুতোয় বাঁধা। আমাদের বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হবে আশা করি। আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ার অপেক্ষা করছি।
উল্লেখ্য, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী ছিলেন। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি ছিল দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
ইস্টার সানডের হামলার পর সমালোচনার মুখে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।
১০ বছর আগে গোতাবায়া রাজাপাকসের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মাহিন্দা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে গোতাবায়া রাজাপাকসে তাদের দল পিপলস ফ্রন্ট পার্টির প্রধান হিসেবে আছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এবার ১ কোটি ৬০ লাখ ভোটারের জন্য ২২টি নির্বাচনী জেলায় খোলা হয় প্রায় ১৩ হাজার ভোট কেন্দ্র। ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠরা গোতাবায়াকে সমর্থন দেন। সিংহলী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে তিনি স্পষ্ট ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে তামিল অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলে প্রেমাদাসা বেশি ভোট পেয়েছেন।
উগ্রবাদীদের হামলায় ২৬৯ জন নিহত হওয়ার ৭ মাস পর শনিবার অষ্টমবারের মতো শ্রীলংকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল। ওই হামলার জেরে দেশটির পর্যটন শিল্প ও বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পড়েছে শ্রীলংকা।
এ অবস্থায় ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হননি। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি শ্রীলংকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া তামিল টাইগার নিধন অভিযানের নিদের্শনায় ছিলেন তারই বড় ভাই ও তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসে। আর সংখ্যালঘুদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুমের নেপথ্যে নায়ক ছিলেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া। সেই থেকেই নামের চেয়েও ‘ মৃত্যুর দূত’ উপাধিতেই বেশি কুখ্যাত তিনি।
বর্বরোচিত এমন কর্মকাণ্ডে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু অভিযোগ রয়েছে। ঘুরেফিরে সেই তিনিই আজ শ্রীলংকার গণতন্ত্রের রক্ষাকর্তা। গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট হওয়ায় শ্রীলংকার ‘গণতন্ত্রের মৃত্যু’ এবং একটি ‘রাজবংশের উত্থান’ হল বলে উল্লেখ করেছে শ্রীলংকান গার্ডিয়ান।
মাহিন্দা রাজাপাকসের এক দশকের (২০০৫-১৫) দীর্ঘ শাসনামল নির্লজ্জ স্বজনপ্রীতির বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ছিল। তার চার ভাই সরকারের বেশির ভাগ মন্ত্রণালয় ও সরকারি অর্থের প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতেন। ভাইয়ের পুরো শাসনামলে প্রতিরক্ষা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন গোতাবায়া।
আরেক ভাই বাসিল রাজাপাকসে বড় ভাই মাহিন্দার উপদেষ্টা ও অর্থমন্ত্রী (২০১০-১৫) ছিলেন। ছোট ভাই ছামাল রাজাপাকসে ২০১০-১৫ সালে শ্রীলংকার পার্লামেন্টের স্পিকার ছিলেন।
ভাইদের ক্ষমতায় ভাগ দেয়ার পাশাপাশি নিজের আসন পাকাপোক্ত করেন মাহিন্দা। তৃতীয় দফা নির্বাচনে ২০১৫ সালে মাইথ্রিপালা সিরিসেনার কাছে পরাজিত হন। এরপরও ক্ষমতায় ফিরতে সিরিসেনাকে ‘বন্ধু’ বানিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেন।
গত বছর ‘প্রেসিডেন্ট ক্যু’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে সরিয়ে রাজাপাকসের সেই স্বপ্ন পূরণের সব রকম চেষ্টা করেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। ৫০ দিনের (২৬ অক্টোবর-১৫ ডিসেম্বর) জন্য প্রধানমন্ত্রীও হয়েছিলেন। পরে সুপ্রিমকোর্টের হস্তক্ষেপে তার স্বপ্ন ভেস্তে যায়।
দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা নিষিদ্ধ হওয়ার সংসদীয় আইনের বেড়াজালে বন্দি হয়ে পড়ে মাহিন্দার ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন। কিন্তু ভাইদের এ পদে এনে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ানোর কৌশল হাতে রয়ে যায়। ফলে প্রার্থী করেন ভাই গোতাবায়াকে।
এজন্য গোতাবায়া নিজের মার্কিন নাগরিকত্ব বাতিল করেন, যাতে তার প্রার্থী হওয়ার পথে কোনো বাধা না থাকে। এখন গোতাবায়া ভাইয়ের ক্ষয়িষ্ণু দাপট আবারও বাঁচিয়ে তুলবেন এমন ধারণা জোরালো হচ্ছে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন শ্রীলংকায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের দায়ে অভিযুক্ত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে চলমান দুটি মামলা থেকে দায়মুক্তি পেতে পারেন।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রের উত্তর ও পূর্ব অংশ নিয়ে ‘তামিল ইলম’ নামে স্বাধীন তামিল রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে ১৯৮৩ সালের ২৩ জুলাই থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (এলটিটিই)। তারা তামিল টাইগার নামে পরিচিত। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় তামিলদের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
২০০৫ সালে ক্ষমতায় এসে রাজাপাকসে তামিলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যায়। ২০০৬ সালের জুলাই থেকে ধারাবাহিক অভিযান শুরু করেন রাজাপাকসে। বন্দি করা হয় প্রায় ২০ হাজার তামিল টাইগারকে। হত্যা করা হয় এলটিটিই প্রতিষ্ঠাতা নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণকে।
লাশ পাওয়া যায়নি আরেক নেতা পট্টু আমানের। প্রায় ৪০ হাজার তামিল বেসামরিকও নিহত হন। হাজার হাজার তামিলদের গুম করা হয়। কারাগারে নির্যাতন চালিয়ে ৮৫ জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে মাহিন্দার বিরুদ্ধে। অর্ধশতাধিক তামিল নারীর ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগও রয়েছে।
একইসঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীদেরও হত্যা করা হয়। এ ‘ডেথ স্কোয়াড’ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মাহিন্দার ভাই গোতাবায়া।
দীর্ঘ ২৬ বছর পর ২০০৯ সালের মে মাসে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি হওয়ায় নিজেরা ‘সন্ত্রাসীদের প্রতিহতকারী’ দাবি করে রাজাপাকসে পরিবার। তামিলদের দমনে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানোয় পরিবারের কাছে ‘টার্মিনেটর’ উপাধি কুড়ান গোতাবায়া। তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা রয়েছে।
চলতি বছরের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক আদালতে গোতাবায়ার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করা হয়েছে। মাহিন্দার আমলে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতন এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের গুম ও স্বাধীন সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ মামলা দু’টি করা হয়েছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানায়, ভাইয়ের মতো গোতাবায়াও চীন ঘনিষ্ঠ। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি চীনের সঙ্গে ‘সম্পর্ক পুনরুদ্ধার’ করবেন। সমুদ্রপথের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে শ্রীলংকা কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে চীন ও ইন্দো-প্যাসিফিক ডেমোক্রেটিক শক্তিগুলোর (ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) মধ্যে।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সমুদ্র সিল্ক রোড প্রকল্পের অন্যতম কেন্দ্র হাম্বানটোটা বন্দর। মাহিন্দার চীনপন্থী পররাষ্ট্রনীতি শ্রীলংকায় চীনা প্রভাব এবং বেইজিংয়ের কাছে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার পথ ত্বরান্বিত করে দেয়। মাহিন্দার ঋণগ্রস্ততার কারণে ২০১৬ সালে সিরিসেনা বাধ্য হয়েছিলেন ভারত মহাসাগরের সবচেয়ে কৌশলগত বন্দর হাম্বানটোটা ও তৎসংলগ্ন ১৫ হাজার একর জমি ৯৯ বছরের জন্য চীনকে লিজ দিতে।
দ্য গার্ডিয়ান
Posted ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta