মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্র- চীন বাণিজ্য যুদ্ধ : কে বেশি লাভবান হচ্ছে

শুক্রবার, ০৩ আগস্ট ২০১৮
347 ভিউ
যুক্তরাষ্ট্র- চীন বাণিজ্য যুদ্ধ : কে বেশি লাভবান হচ্ছে

কক্সবাংলা ডটকম(৩ আগস্ট) :: যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ এখন পর্যন্ত শুল্ক আরোপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুটি দেশ পরস্পরের ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, তবে সবচেয়ে আঘাতগুলো এসেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকেই।

গত জানুয়ারি মাস থেকে, চীনের কয়েকশ’ পণ্যের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন। যদিও মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে পাল্টা জবাব দিয়েছে বেইজিং। তবে এশিয়ার এই সুপার পাওয়ারের আরো চারটি অস্ত্র রয়েছে, পরিস্থিতি খারাপের দিকে গড়ালে যা হয়তো তারা ব্যবহার করতে পারে।

১.আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য পরিস্থিতি কঠিন করে তোলা

এ জন্য বেশ কয়েকটি পন্থা রয়েছে। কোন সরকার হয়তো শুল্ক ব্যবস্থা কঠোর করে তুলতে পারে। নতুন আইন বা বিধিনিষেধ জারি করতে পারে এবং ভৌগলিক সীমার মধ্যে কর্মরত আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।

সিরাকুজ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ম্যারি লভলি বিবিসিকে বলেছেন, ‘এ ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার অতীত ইতিহাস রয়েছে চীনের, যা পরিষ্কারভাবে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগের একটি বিষয়।’

‘কিন্তু এ রকম যেকোনো পদক্ষেপের ফলে উভয় পক্ষকে বড় মূল্য দিতে হবে। এটা হয়তো রপ্তানিকারক বা বিনিয়োগকারীদের আমেরিকায় বা চীনের বাজারের প্রতি নিরুৎসাহিত করবে। এর ফলে প্রতিযোগিতা কমে যাবে, পণ্যের দাম বাড়বে এবং ভোক্তাদের বিকল্প পণ্য পাওয়ার সুবিধা কমে যাবে’- তিনি বলছেন।

২. যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে তোলা

যুক্তরাষ্ট্রে যেমন একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, চীন সম্প্রতি তাদের নিয়ম পাল্টেছে। ফলে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাবার জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অতটা তাড়াহুড়ো না করলেও চলবে।

তার প্রশাসন হয়তো আস্তে আস্তে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বা জোট গড়ে তুলতে পারে- যা যুক্তরাষ্ট্রকে একঘরে করে ফেলবে।

অনেক বিশ্লেষকের মতে, ইউরোপ, এশিয়া আর লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে বেইজিং এর মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

অনেকে বিশ্বাস করেন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া আর প্রশান্ত মহাসাগরের পাশের কয়েকটি দেশ নিয়ে যে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপের কথা হচ্ছিল, সেখানে শেষ পর্যন্ত নেতৃত্ব চীনের কাছে চলে যেতে পারে। ওই পরিকল্পনা থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার পর সেটি ঝিমিয়ে পড়েছে।

আরেকটি কারণ হতে পারে, ওয়াশিংটনের বাণিজ্য শুল্কের শিকার শুধুমাত্র চীন নয়, কানাডা, মেক্সিকো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও তার শিকার হয়েছে। ফলে এটিও হয়তো চীনকে নতুন বন্ধু পেতে সহায়তা করবে।

৪. ইউয়ানের মুদ্রামান হ্রাস

চীন যদি সরাসরি বাণিজ্যিক আক্রমণ করতে চায়, তার জন্য সবচেয়ে সহজ হলো তাদের মুদ্রা ইউয়ানের মান কমিয়ে দেয়া। এর দুটি সুবিধা রয়েছে: এর ফলে চীনের রপ্তানি পণ্যের দাম কমবে এবং রপ্তানিকারকদের সুবিধা হবে, একই সঙ্গে সেটি আমেরিকান পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে। বিশেষ করে যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক বেশি, সেগুলোর ওপর বেশি প্রভাব পড়বে।

অর্থনীতি বিষয়ক লেখক ব্রায়ান বোর্জিকোয়স্কি বলছেন, ‘চীন হয়তো স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে সহায়তা করতে বাজারে অর্থ যোগান দিতে পারে অথবা মুদ্রার মান কমিয়ে দিতে পারে।’

তবে এ ধরনের পদক্ষেপে ঝুঁকিও রয়েছে। অনেক সময় বাজারের কারণে যা ধারণা করা হয়, তার চেয়েও ইউয়ানের মুদ্রার মান আরো বেশি পড়ে যেতে পারে। তখন সেটি চীনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।

তবে মুদ্রার মান কমালে চীনের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে, তার প্রভাব কম পড়বে। তখন যুক্তরাষ্ট্রকে আবার শুল্ক বাড়িয়ে সেটি সামাল দিতে হতে পারে, যা হয়তো উত্তেজনা আরেক দফা বাড়াবে।

৪. যুক্তরাষ্ট্রের দেনা ঝেড়ে ফেলা

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১.১৭ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ট্রেজারি বণ্ড রয়েছে চীনের কাছে। অনেক বিশ্লেষক ধারণা করেন, পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে চীন হয়তো এসব বণ্ড ছেড়ে দিতে পারে। গত কয়েক দশকে চীন এসব ট্রেজারি বণ্ডে বিনিয়োগ করেছে। প্রতিবছর এ থেকে বড় অংকের সুদও পায় দেশটি।

চীন যদি বড় আকারের বণ্ড বিক্রির উদ্যোগ নেয়, সেটি আন্তর্জাতিক বাজারে বড় প্রভাব ফেলবে। হঠাৎ করে বেশি বণ্ড বাজারে চলে এলে সেটির দাম পড়ে যাবে এবং তখন মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়বে।যার ফল হবে আমেরিকান অর্থনীতির গতি কমে যাওয়া।

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বণ্ডের দাম কমে গেলে তা চীনের ওপরও প্রভাব ফেলবে এবং বণ্ডের মতো বিকল্প নিরাপদ বিনিয়োগ বাজার খুঁজে পাওয়াও চীনের জন্য কঠিন হবে।

ভঙ্গুর চীন

বিশ্লেষকদের বড় একটি অংশই মনে করেন, শুল্ক আরোপের বাইরে চীন এই বাণিজ্য যুদ্ধ আর বাড়াতে চাইবে না।

চীনের অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ স্কট কেনেডি বলছেন, ‘বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় চীন অনেক বেশি ভঙ্গুর অবস্থায় পড়বে। কারণ আমেরিকান অর্থনীতি অনেক বড় আর অনেক বেশি দক্ষ।’

‘বণ্ড বিক্রি করে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করবে না বেইজিং, তাহলে সেটা সামলাতে যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে বড় আকারে শুল্ক আরোপ করতে পারে।’

বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, চীন হয়তো তাদের ভূখণ্ডে আমেরিকান কোম্পানিগুলোর কর্মকাণ্ড কঠিন করে তুলতে পারে। কিন্তু সেটি হলে তা হবে বিরল ঘটনা।

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিংলিৎজ মনে করেন, বাণিজ্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে চীন তুলনামূলক ভালো অবস্থানেই রয়েছে।

‘তাদের বেশ কিছু কৌশল এবং সম্পদ রয়েছে, যা বাণিজ্য যুদ্ধে ভালোভাবেই কাজে লাগাতে পারবে। সবচেয়ে বড় কথা, চীন নিজে তিন ট্রিলিয়ন ডলার রিজার্ভের ওপর বসে রয়েছে।’

তবে এটা একেবারে নিশ্চিত করে বলা চলে যে, এই যুদ্ধ শুধুমাত্র এই দুই দেশের সীমানার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। হয়তো তা সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।

বিবিসি

347 ভিউ

Posted ১:৫৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ আগস্ট ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com