কক্সবাংলা ডটকম(১৯ ডিসেম্বর) :: উৎপাদনমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো উপকরণ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে পণ্য বা সেবায় রেয়াত গ্রহণের সুযোগ পায়। কারণ চূড়ান্ত বিক্রির ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট পরিশোধের নিয়ম রয়েছে। তবে রেয়াত সুবিধা নিয়ে ভ্যাট পরিশোধ ছাড়াই কাঁচামাল আমদানি ও সংগ্রহের পর তা উৎপাদনের কাজে না লাগিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
পাশাপাশি ভুয়া চালান ও একই চালানের বিপরীতে বারবার রেয়াত গ্রহণ করে সরকারকে বিরাট অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে অনেক ব্যবসায়ী। এবার এসব ফাঁকির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে এনবিআর।
এনবিআরের মূসক বাস্তবায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগকে শক্তিশালী করে মাঠপর্যায়ের সব অফিসের মাধ্যমে রেয়াত সুবিধার অপব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য উৎপাদনকারী হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কাউকে রেয়াত সুবিধায় আমদানির সুযোগ না দেয়া ও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের শতভাগ আমদানি তথ্য যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য বিক্রির তথ্যের বাণিজ্যিক হিসাব সম্পন্ন করে ফাঁকি দেয়া প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে শাস্তির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ফাঁকি রোধে মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ভুয়া চালানের মাধ্যমে রেয়াত গ্রহণের প্রমাণ পেয়েছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা। রেয়াত নেয়া ক্রয় চালান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একই বিল অব এন্ট্রি বারবার ব্যবহারের প্রমাণও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি এনবিআর থেকে রেয়াত নিয়ে আমদানির পর ওই সব পণ্যের বিপরীতে আর ভ্যাট পরিশোধ না করার অনেক তথ্য রয়েছে।
এ জন্য এসব খাতে রাজস্ব ফাঁকি ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এনবিআরের মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি বিভাগকে এ বিষয়ে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এলটিইউসহ দেশের সব কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটকে এ বিষয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. নজিবুর রহমান এ বিষয়ে জানিয়েছেন, দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এনবিআর রাজস্ব আহরণ বাড়াতে কাজ করছে। এ জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র বের করার পাশাপাশি বিদ্যমান খাতগুলোয় রাজস্ব ফাঁকি রোধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বন্ডসহ রেয়াত সুবিধার অপব্যবহার রোধেও আপ্রাণ চেষ্টা করছেন মাঠপর্যায়ের রাজস্ব কর্মকর্তারা। সঠিকভাবে কর পরিশোধকারীদের সম্মাননা দেয়ার পাশাপাশি ফাঁকিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেবে এনবিআর।
সম্প্রতি এনবিআরের দেয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সব ভ্যাট কমিশনারেটকে তাদের অধীন উৎপাদনকারী হিসেবে নিবন্ধিত শতভাগ প্রতিষ্ঠানের আমদানি তথ্য যাচাই করতে হবে। তথ্য যাচাইয়ের পর উপকরণের বিপরীতে রেয়াত সুবিধা গ্রহণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা যাচাই করতে হবে। নিবন্ধন নেয়ার পর দাখিলপত্র জমা না দেয়া প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
নিবন্ধন নেয়ার পরও কোনো অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান রেয়াত সুবিধা গ্রহণ করছে কিনা, তা যাচাই করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এনবিআর থেকে। প্রসঙ্গত, স্থানীয় শিল্পকে প্রণোদনার অংশ হিসেবে কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াত সুবিধা দেয় এনবিআর।
Posted ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta