সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রামুর গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভবন সংকটে ছাত্র-ছাত্রীরা : ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাগ্রহণ

বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০১৭
406 ভিউ
রামুর গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভবন সংকটে ছাত্র-ছাত্রীরা : ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাগ্রহণ

হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী(২২ জুন) :: কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ভবন সংকটের কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরী হয়েছে। গত ৩০মে ঘুর্ণিঝড় মোরার আঘাতে বিদ্যালয়ের প্রাচীন একাডেমিক ভবন বিধ্বস্ত হয়। এর পর থেকে অনেকটা উদ্বিগ্ন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। কারণ দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ না হলে চরমভাবে ব্যাহত হবে তিন শ্রেণির কয়েকশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাগ্রহণ।

গত ১৮জুন সকালে বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, ঘুর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ভবনটি এখনো পড়ে রয়েছে। রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও দশম, অষ্টম ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত পাঠ গ্রহন চলছে। এসময় নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানান ছাত্র-ছাত্রীরা।

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জুবাইদা খানম বলেন, ‘আমাদের ক্লাসরুম সহ ভবনটি ঘুর্ণিঝড়ে ল-ভ- হয়ে গেছে। ছুটি শেষে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ক্লাস পুরোদমে আরম্ভ হলে-আমরা কোথায় পাঠ গ্রহণ করবো সেই টেনশনে আছি।’

দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ করিম বলেন, প্রতিটি ক্লাশে শিক্ষার্থীদেরকে গাদাগাদি করে বসতে হয়। এ কারণে লেখাপড়ায় মনযোগ নষ্ট হচ্ছে। ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’র পর বিদ্যালয়ে আবারও নতুন করে শ্রেণিকক্ষ সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকট নিরসন খুবই জরুরি।

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী রুমেনা আক্তার স্বপ্না ও ইয়াছমিন আক্তার পারুল বলেন, ‘বিদ্যালয়ে একটিও কমন রুম নেই। এই জন্য ছাত্রীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আর কম্পিউটার ল্যাব না থাকায় আমরা নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এএইচএম মনিরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে এখন মাত্র দুটি পাকা ভবন রয়েছে। ১৯৬৩ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর নির্মাণ করা প্রাচীন ভবনটি ১৯৯১ এর ঘুর্ণিঝড়ে একবার বিধ্বস্ত হয়। পুন:নির্মাণ করার পর টিনসেড ভবনটি সম্প্রতি আবারও বিধ্বস্ত হওয়ায় তীব্র আকারে শ্রেণিকক্ষ সংকট দেখা দিয়েছে। কারণ বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরের বন্ধের পর আগামী ৩০জুন থেকে ক্লাশ আরম্ভ হলে অন্তত তিনশ ছাত্র-ছাত্রীকে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হবে।

গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী পরিষদের সহসম্পাদক সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠানটি না থাকলে আমরা আধারেই থেকে যেতাম। গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এতদঅঞ্চলের মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়। সন্তানের পড়াশোনার স্থান খুঁজে পায় বাবা-মা। তবে উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে সরকারি সহযোগিতা না পাওয়ায় বিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা থেমে আছে। এখানে একটি বহুতল ভবন ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন খুবই জরুরি।’

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিদ্যায়টি রামুর পূর্বাঞ্চলের আলোর প্রদীপ। নানা সমস্যার মধ্যেও তা জ্বালিয়ে রাখতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন বিদ্যালয়ের ভবন সংকট দূরিকরণ ও অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে বরাদ্দ দরকার।’

এ ব্যাপারে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.শাহজাহান আলি বলেন, ‘ঘুর্ণিঝড়ের পর ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল’সহ আমরা ক্ষতিগ্রস্থ গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। বিদ্যালয় ভবনটি পুন:নির্মাণের জন্য সাংসদ মহোদয় আর্থিক অনুদানও ঘোষণা করেছেন। সরকারিভাবে বহুতল ভবন নির্মাণের চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শিক্ষাদীক্ষায় বরাবরই পিছিয়ে থাকা রামুর পূর্বাঞ্চলে আলো জ্বালাতে স্বপ্ন দেখেন বৃহত্তর গর্জনিয়ার দানবীর প্রয়াত হাকিম মিয়া চৌধুরী। তখন তিনি একটি বিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তাঁর ছেলে বৃহত্তর গর্জনিয়ার প্রয়াত চেয়ারম্যান ইসলাম মিয়া চৌধুরীকে সাথে নিয়ে সংগঠিত করেন এলাকার লোকজনকে।

১৯৬৩ সালে গর্জনিয়া ইউনিয়নের বোমাংখিল গ্রামে নিজেই ৩ একর ২০ শতক জমি দানের মধ্য দিয়ে হাকিম মিয়া চৌধুরী গড়ে তুলেন গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয়। তখন আশপাশের ২৫ কিলোমিটার এলাকায় এটিই একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ। এ জন্য বিত্তশালীরা দিয়েছেন অর্থ, কৃষক, দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষেরা দিয়েছেন শ্রম। সবার সহযোগিতায় চার কক্ষের দুচালা একটি ভবন তৈরি হলো

শুরু হলো বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক নিয়েই চলতে থাকে বিদ্যালয়ের পাঠদান। ধীরে ধীরে সচেতন হতে থাকে লোকজন। বাড়তে থাকে শিক্ষার্থী। এভাবেই ভরপুর হয় বিদ্যালয়। ১৯৭৫ সালে রূপ নেয় পরিপূর্ণ উচ্চবিদ্যালয়ে। তবে ১৯৯১ সালের প্রলয়নকারী ঘুর্ণিঝড়ে ল-ভ- হয়ে যায় বিদ্যালয় ঘরটি।

পরবর্তীতে কক্সবাজার ৩ (সদর-রামু) আসনের সাবেক সাংসদ ও রাষ্ট্রদূত প্রয়াত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী এবং গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালিন চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরীর বিশেষ আন্তরিকতায় বিদ্যালয়ঘরটি পুন:নির্মাণ হয়। পরে তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী এক কানি এবং শিক্ষাবীদ মরহুম আমির মোহাম্মদ বাচ্চু চৌধুরী বিদ্যালয়ের নামে এক কোনি জমি দান করেন।

406 ভিউ

Posted ১২:১৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com