রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক পরিস্থিতির আরও অবনতি

সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮
334 ভিউ
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক পরিস্থিতির আরও অবনতি

কক্সবাংলা ডটকম(৩০ জুলাই) :: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ৩৫৯ শাখা এখন লোকসান গুনছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অব্যাহতভাবে লোকসানি শাখা বাড়ার কারণে ব্যাংকগুলোর সামগ্রিক অর্থনৈতিক সূচক দিন দিন খারাপ হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি লোকসানি শাখা এখন সোনালী ব্যাংকের। ব্যাংকটির একহাজার ২১২ শাখার মধ্যে ১৮৩টি লোকসানি শাখা। জনতা ব্যাংকের ৯০৮ শাখার মধ্যে ৫৭টি লোকসানি শাখা। অগ্রণী ব্যাংকের ৯৩১টির মধ্যে ৪৩টি লোকসানি শাখা। রূপালী ব্যাংকের ৫৬২টির মধ্যে ৩৩টি, বেসিক ব্যাংকের ৬৮টির মধ্যে ২১টি এবং বিডিবিএল’র ৪০টির মধ্যে ২২টি লোকসানি শাখা।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুশাসন না থাকার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকগুলোতে কেবল লোকসানি শাখাই বাড়ছে, একইসঙ্গে ব্যাংকগুলো মূলধনও খেয়ে ফেলছে।

এদিকে, এই ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে প্রতিবছরই জনগণের করের টাকা দেওয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গত জুন মাসে একহাজার ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সোনালী, রূপালী ও বেসিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণে। সবচেয়ে বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে আলোচিত বেসিক ব্যাংককে। সমস্যাকবলিত ব্যাংকটিকে একহাজার কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। সোনালী ব্যাংককে ৩০০ কোটি ও রূপালী ব্যাংককে ১০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১১ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের লোকসানি শাখা ছিল ১৫৯টি। ২০১২ সালে ১৯১টি, ২০১৩ সালে ১৭৩টি, ২০১৪ সালে ১৬৮টি। ২০১৫ সালে ছয় ব্যাংকের লোকসানে পড়ে ২২৫টি শাখা। তবে ২০১৬ সালে ছয় ব্যাংকের লোকসানে পড়ে ৪৯৩টি শাখা। ২০১৭ সালে কিছুটা উন্নতি হলেও বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ৩৫৯ শাখা লোকসান গুনছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো খেলাপি ঋণের উচ্চহার। বর্তমানে বেসিক ব্যাংকের ৫৯ দশমিক ২২ শতাংশই খেলাপি ঋণ। ব্যাংকটির এখন খেলাপি ঋণ ৮ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের খেলাপি ঋণ মোট ঋণের ৫৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বা ৮০৪ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এখন ১৪ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ৩৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৯ হাজার ৭০২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন ব্যবস্থায় দুর্বলতার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ খেলাপি হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এসব খেলাপি ঋণ আদায়ও সন্তোষজনক নয়। বিপরীতে ব্যাংকগুলোর আয় খাত থেকে অর্থ এনে খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। এতে ব্যাংকের আয় ও মূলধনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রভাবশালীরা যখন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর ফেরত না দেন, তখন ব্যাংকের আর কিছুই করার থাকে না। এ কারণে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘সুশাসন না থাকার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ব এই ব্যাংকগুলোতে কেবল লোকসানি শাখাই বাড়ছে না, ব্যাংকগুলো মূলধনও খেয়ে ফেলছে।’

ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, ‘প্রতিবছরই জনগণের করের টাকায় বাজেট থেকে সরকারি ব্যাংকগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণ কমিয়ে সম্পদের গুণগত মান বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রতিবছরই শীর্ষ ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়। প্রতি তিন মাস অন্তর ব্যাংকগুলো কী পরিমাণ ঋণ আদায় করতে পারছে তা অগ্রগতির জন্য পর্যালোচনা বৈঠক আয়োজন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কোনও কিছুইতে উন্নতি হচ্ছে না।

জানা গেছে, শীর্ষ ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পারছে না দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। বিশেষ করে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেও তা অর্জন করতে পারছে না।

এদিকে, ১০০ কোটি টাকা বা তদূর্ধ্ব খেলাপি ঋণের কেসগুলো তদারকির জন্য প্রতিটি ব্যাংকে একটি করে তদারকি সেল গঠন করার নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেটি করেনি ব্যাংকগুলো। এর আগে গত বছরের আগস্ট মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের ১০০ কোটি টাকার ওপরে বৃহৎ খেলাপি ঋণ গ্রহীতাদের আলাদা ডেট-মনিটরিংয়ের আওতায় এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ডেটা রিকভারি ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থা করার জন্য চিঠি দিয়েছিল।

334 ভিউ

Posted ৮:৫৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com