মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রেমিটেন্স আয় কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক

বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭
461 ভিউ
রেমিটেন্স আয় কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ ব্যাংক

কক্সবাংলা ডটকম(১১ আক্টোবর) :: ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম দুই খাত, রেমিট্যান্স ও রফতানি। বিশেষ করে, রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, খাত দু’টির নেতিবাচক পরিস্থিতি নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে এটা ভবিষ্যতে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. জায়েদ বখত বলেন, ‘প্রবাসী আয় ও রফতানি আয় কমে যাওয়াটা বড় ভয়ের কারণ না হলেও দুশ্চিন্তার বিষয় তো বটেই। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অন্যতম এই দুই খাতে ভালো প্রবৃদ্ধি না হওয়াতে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ইতিমধ্যে নেগেটিভ হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখনও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে কিছুটা সংকট দেখা দেবে। শিগগিরই যদি প্রবাসী আয়ে উন্নতি না হয়, তাহলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যেতে পারে। তবে এই মুহূর্তে ভয়ের কোনও কারণ নেই। কারণ, আমাদের এখনও পর্যাপ্ত রিজার্ভ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে সব কারণে রেমিট্যান্স নেগেটিভ হচ্ছে, সেই সব কারণ খুঁজে বের করে পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মাস হিসেবে বিগত সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন। আবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ যা আয় করেছে, তা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ শতাংশ এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ কম।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে বৈধপথে রেমিট্যান্স কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় আসেনি। আবার আশা অনুযায়ী রফতানি আয়ও হয়নি। এ কারণে রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। একইভাবে রফতানির জন্য নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেবল তৈরি পোশাক রফতানির ওপর নির্ভর করা ঠিক হবে না। বিভিন্ন দেশে বিকল্প পণ্য রফতানিতে মনোযোগ দিতে হবে।  আবার নির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর নির্ভর না করে নতুন নতুন বাজারের সন্ধান করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন কারণে বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা পড়ে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ রেমিটেন্স কম আসে।

রেমিট্যান্সের উৎস দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দা এবং মোবাইল ব্যাংকিংসহ অন্যান্য মাধ্যমে হুন্ডি ব্যবসার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ও একইসঙ্গে বৈধপথে রেমিট্যান্স কম আসায় দুশ্চিন্তায় পড়েন সরকারের নীতি-নির্ধারকরা। রেমিট্যান্স বাড়াতে মাশুল না নেওয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রবাসীদের জন্য বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি করা হয়।

সর্বশেষ হুন্ডিরোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৪ সেপ্টেম্বর হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স বিতরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের দুই হাজার ৮৮৭ জন এজেন্টের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী,  প্রবাসীরা চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩৩৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছে ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসেছে ১৪১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। আর সেপ্টেম্বরে এসেছে ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

প্রসঙ্গত, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ (১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স বাংলাদেশে আসে। এরপর প্রতিবছরই রেমিট্যান্স কমেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আড়াই শতাংশ কমে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা সাড়ে ১৪ শতাংশ কমে আসে এক হাজার ২৭৭ কোটি ডলার, যা ছিল আগের ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো এই বৈদেশিক মুদ্রা।

এদিকে, ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৮৬৬ কোটি ২৭ লাখ (৮ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দুই দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। এই তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৮৯১ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব বাজারে টিকে থাকার জন্য পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের নানামুখী প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। আমরা নতুন নতুন বাজারে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাতসহ বিভিন্ন খাতে ব্যয় বেড়ে গেছে।’

ইপিবি’র তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ সেপ্টেম্বর মাসে পণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশ ২০৩ কোটি ৪১ লাখ ডলার আয় করেছে। এই অঙ্ক গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ৭২ শতাংশ কম।  সেপ্টেম্বর মাসে রফতানির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ২২৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বর আয় হয়েছিল ২৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার।

প্রসঙ্গত, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রফতানি আয়ে মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় তিন হাজার ৭৫০ কোটি (৩৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন) ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশ তিন হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ (৩৪ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন) ডলার আয় করে, যা ছিল আগের অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।

461 ভিউ

Posted ২:২৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com