কক্সবাংলা রিপোর্ট(৯ মে) :: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ভারতের সাহায্য দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ত্রাণ ও দুুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ৯ মে রোহিঙ্গাদের জন্য ভারতের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী গ্রহণকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ৩৭৩ টন ত্রাণসামগ্রী মন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।
এ সময় ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণে ভারত আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। তবে সাহায্য দিয়েই কিন্তু সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। সে জন্য ভারতের বিশেষ ভূমিকা আমরা আশা করি।’
ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে তারা আমাদের শুধু সাহায্যই করেনি, অস্ত্র দিয়ে, পরামর্শ দিয়ে, মহান যুদ্ধে ভারতের হাজারো সৈনিক আমাদের পাশে থাকতে গিয়ে জীবন উত্সর্গ করেছেন। তাই এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিলেও তাদের অচিরেই মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো দরকার। একাত্তরের মতো এবারো শেষ পর্যন্ত ভারত আমাদের পাশে থাকবে বলে আমরা আশা রাখি।
মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সবচেয়ে বড় সমস্যা জ্বালানি সংকট। ভারত সরকার ২৫ হাজার স্টোভ আর ১ মিলিয়ন লিটার কেরোসিন তেল ত্রাণ হিসেবে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের দরকারে পাশে থেকেছে। আমাদের এ দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি বিশ্বাস, বন্ধুত্ব ও শহীদের আত্মত্যাগ যা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। বাংলাদেশে যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে তা মোকাবিলা করতে আমরা আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। এই দফার ৩৭৩ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী ছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি কেরোসিন ও রান্নার চুলা নিয়ে আরও একটি জাহাজ আসবে।
হাইকমিশনার বলেন, আমরা জানি এত বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের সহায়তা করতে বাংলাদেশের ভূমিকা অসাধারণ। আমরা মনে করি, এ কাজ আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন পাবার যোগ্য। জরুরি সেবা দিতে বাংলাদেশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে আমরা তার প্রশংসা করছি।
এবারের ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- ৪৫ টন শিশুখাদ্য, ১০০ টন গুঁড়োদুধ, ১০০ টন শুঁটকি, ৫০ হাজার রেইনকোট, ৫০ হাজার জোড়া গামবুট। গত ৫ মে বিশাখাপত্তম বন্দর থেকে ভারতীয় নৌবাহিনী জাহাজ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে রওনা দিয়ে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম দফায় ৯৮১ টন ত্রাণ সহায়তা দেয় ভারত।
