কক্সবাংলা রিপোট(১৮ ডিসেম্বর) :: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্যের উত্থাপিত একটি খসড়া প্রস্তাবের ওপর আলোচনা বয়কট করেছে চীন ও রাশিয়া। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমার যেন জাতিসংঘের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে তাই ছিল এই প্রস্তাবের লক্ষ্য।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় দেশটি থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশ থেকে তাদের নিজ দেশে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করাই এই খসড়া প্রস্তাবের লক্ষ্য।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে দমনপীড়ন শুরু হলে জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন এ জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই একে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
খসড়া প্রস্তাবে সতর্ক করে বলা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পদক্ষেপে যথেষ্ট অগ্রগতি না থাকলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ নিষেধাজ্ঞাসহ আরও ব্যবস্থা নিতে পারে। এতে জাতিসংঘের কর্মকর্তাদেরও এ ইস্যুতে নিয়মিত নিরাপত্তা পরিষদের কাছে রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়।
খসড়া প্রস্তাবটি ভোটাভুটির জন্য তোলা হবে কিনা অথবা তোলা হলে কখন তোলা হবে তা এখনও পরিষ্কার নয়। শেষ পর্যন্ত এটি ভোটাভুটির জন্য উত্থাপন করা হলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ৯টি ভোট পেতে হবে। এর পাশাপাশি চীন ও রাশিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদেরও ভোট পেতে হবে। স্থায়ী সদস্যদের কেউ ভেটো দিলে প্রস্তাবটি পাস করানো অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া সোমবার রয়টার্সকে বলেন, আমার কাছে এটি অযথার্থ, অসময়োচিত ও নিরর্থক মনে হয়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনা দূত মা ঝাওজু এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। সংস্থাটিতে নিযুক্ত মিয়ানমারের প্রতিনিধিও তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে অপারগতা জানিয়েছেন।
চলতি বছরের নভেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে খসড়াটি সরবরাহ করা হয়। কূটনীতিকরা জানিয়েছে, এ নিয়ে কয়েক দফায় আলোচনা হতে পারে।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা ইস্যুকে জটিল, বড় ও আন্তর্জাতিকীকরণ করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক। দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ওয়াং ই বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। একে এত বড় করে দেখা বা আন্তর্জাতিক ইস্যু হিসেবে বিবেচনা করাকে চীন সমর্থন করে না।
Posted ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta