মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(২৫ ফেব্রুয়ারী) :: রাখাইনে হত্যা-ধর্ষণসহ সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বর্ণনা আন্তর্জাতিক জনমতকে আরো সংহত করতে শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী রবিবার কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কল কারমান ও যুক্তরাজ্যের মেরেইড ম্যাগুয়ার।
৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার বিকালে আন্তর্জাতিক সংস্থার নারী পক্ষের সংস্থার সহযোগিতায় এ তিন নোবেল বিজয়ী নারী রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি অবলোকন করেন।এ সময় ঝুপড়িতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের দুখ দুর্দশার খবর নেন এবং তাদের কথা বলেন।
পর্যবেক্ষকদলের এই তিন নারী বালুখালী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিজের চোখে দেখেন। এবং তাদের মুখ থেকে মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতনের কথা শোনেন এবং তাদের এ অভিজ্ঞতা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তা তুলে ধরবেন বলে জানান।এসময় নারীপক্ষ এনজিও’র কর্মকর্তা ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নোবেল বিজয়ীরা যে সময় রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলছিলেন, ঠিক এমন সময় ক্যাম্পের ভিতর থেকে একটি কিশোরের দল বিক্ষোভ করে। গোয়ান্দা কর্মিরা জানান, এমন সময় উতপেতে বসে থাকা ২ জন ঢাকার সংবাদকর্মী বিক্ষোভরত রোহিঙ্গাদের ছবি তুলার সময় পুলিশ বিশেষ শাখার সদস্যরা ২জনকে আটক করে। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উখিয়া থানা হেফাজতে রয়েছে এ দুইজন সাংবাদিক। ধারনা করা হচ্ছে, এই রোহিঙ্গা কিশোরদের বিক্ষোভ মিছিলের সাথে তাদের যুগসন্ধি রয়েছে।
এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উখিয়া থানা হেফাজতে রয়েছে এ দুইজন সাংবাদিক। ধারনা করা হচ্ছে, এই রোহিঙ্গা কিশোরদের বিক্ষোভ মিছিলের সাথে তাদের যুগসন্ধি রয়েছে।
জানা যায়,রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমতকে আরও সুসংহত করতে ঢাকার নারীপক্ষ নামক নারী সংস্থার সহযোগিতায় নোবেল জয়ী তিন নারীর বাংলাদেশ সফরের আয়োজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত।
মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি আর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিজস্ব অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে তুলে এনেছে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ভয়াবহ বাস্তবতা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা জঙ্গি সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দমনে অভিযান চালিয়েছে।
Posted ৯:২৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta