কক্সবাংলা ডটকম(৪ ডিসেম্বর) :: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কম্বোডিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে তাদের ঘরে ফিরতে পারে, সেজন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের কাছেও আমি সহযোগিতা চাইছি, যাতে এ সঙ্কটের একটি টেকসই সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারি।’ খবর বাসসের।
সোমবার কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা একথা বলেন।
যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সাম্প্রতিক কিছু আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। দুই পক্ষই সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথা বলেছে।
কয়েকটি পুলিশি চেকপোস্টে হামলার জের ধরে গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ ও ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী ও রাখাইন সন্ত্রাসীরা। প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে সাড়ে সাত লাখ ছাড়িয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়েও কথা বলেছি, যা আমাদের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও শান্তি বিনষ্টের হুমকি তৈরি করছে।’
শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশকে এখন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বইতে হচ্ছে, যাদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ মানুষ মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন আশা করছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একসঙ্গে কাজ করে সহজেই রোহিঙ্গাদের তাদের আবাসভূমিতে ফেরত পাঠাতে পারবে।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়েও আলোচনা করেছেন, যা কিনা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হুন সেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার উভয়েই এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুশৃঙ্খলভাবে নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একযোগে কাজ করবে। তিনি বলেন, ‘দেশে ১৬ কোটি মানুষ থাকার পরেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করে এবং তাদের বিষয়টি নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়ায় আমরা তাদের (বাংলাদেশের) প্রশংসা করছি।’
কম্বোডিয়াকে বাংলাদেশের নিকটতম আঞ্চলিক প্রতিবেশি আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই দুটি দেশ একই রকম শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের প্রত্যাশী। তিনি বলেন, আমরা অনেক আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ফোরামে পরস্পরকে নিবিঢ়ভাবে সহযোগিতা করে থাকি বিশেষ করে এআরএফ, আসেম, এসিডি এবং জাতিসংঘে।
Posted ৪:৪৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta