সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি ‘বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্ষীণ’

শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৮
359 ভিউ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি ‘বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্ষীণ’

কক্সবাংলা ডটকম(৬ এপ্রিল) :: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে চুক্তি সই হলেও এবিষয়ে বাস্তবিকভাবে কোনো অগ্রগতি হয়নি। চুক্তিটি ‘বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্ষীণ’ বলেই মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আলী রীয়াজ। সেই সাথে এমন চুক্তি করা ‘ভুল’ ছিল বলে মত দিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘চুক্তিটি এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তা অসম্পূর্ণ এবং এর বাস্তবায়নের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কাজেই, এটা সই করা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত।’

নিজের পর্যবেক্ষণের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের প্রত্যাবাসন কাজের জন্য শেষ পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে চুক্তির প্রয়োজন হয়।‘সুতরাং, চুক্তি সই করাটা সমস্যা না, সমস্যা হলো এর বিস্তারিত বিষয়বস্তু।’

অধ্যাপক রীয়াজের মতে, চুক্তিটিতে যেসব সমস্যা রয়েছে তার মধ্যে আছে- চুক্তির বিষয়বস্তু, যে প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে চুক্তিটি হয়েছে তা, বাস্তবায়নের কৌশলগুলোর অনুপস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে না পারা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের ভাষায়, বাংলাদেশে বর্তমানে যত রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন তা ভুটানের মোট জনসংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি।

ভুটানের জনসংখ্যা প্রায় আট লাখ। অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চুক্তি সইসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো বাস্তবিক অগ্রগতি হয়নি।

বাংলাদেশি-আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখক অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, কোনো ধরনের আলোচনার শুরুর আগেই তাদের অনেকে এসব বিষয়ের (চুক্তির সমস্যাগুলো) গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের কথায় কর্ণপাত করা হয়নি।

চুক্তিটিতে ‘অনেক অস্পষ্টতা’ রয়েছে। যার মধ্যে আছে উদ্বাস্তুদের সংজ্ঞা এবং তাদের মর্যাদার বিষয়টি নির্ধারণ করা, বলেন তিনি।

‘দৃশ্যত বাইরের চাপে, চীনের জোরাজুরিতে, তাড়াহুড়ো করে চুক্তিটি করা হয়েছে। এই তাড়াহুড়োর ফলে, অনুমোদিত চুক্তিটি বাংলাদেশের প্রয়োজন পূরণ না করে বরং মিয়ানমারের অবস্থান বজায় রাখতে সাহায্য করেছে’, ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক রীয়াজ।

তার যুক্তি, চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য একেবারে শুরু থেকেই এখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুক্ত থাকা প্রয়োজন। ‘যদিও কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এখন নেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা চুক্তির বাইরে থেকে গেছেন। এখানে শাস্তির শর্ত নেই, নেই সালিসি ব্যবস্থা।’

এদিকে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সরকার আগামী ১৩ এপ্রিল জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইইউ) সই করতে যাচ্ছে। এটি সই হলে ইউএনএইচসিআর সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তনকারী রোহিঙ্গাদের সাক্ষাতকার নেবে। তারা বাংলাদেশের সহযোগিতায় স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা তা ওই সাক্ষাতে যাচাই করা হবে।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় তৃতীয় পক্ষের যুক্ত হওয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, সম্প্রতি যে যুক্ত করার ঘটনা ঘটেছে তা শুরুতে হওয়া দরকার ছিল, বিশেষ করে চুক্তির খসড়া তৈরি করার সময়। ‘না হওয়ার চেয়ে দেরিতে হওয়া ভালো। তবে বিষয়টি এখন বহুলাংশে নির্ভর করছে মিয়ানমারের ওপর। তারা ইউএনএইচসিআরকে দায়িত্ব পালনে কতটুকু ছাড় দেবে তা দেখার বিষয়। যদি চুক্তির অংশ হিসেবে এসব সংস্থা যুক্ত হতো তাহলে আমরা এরই মধ্যে ইতিবাচক গতিবিধি দেখতে পেতাম।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে চুক্তি সই হয়। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা করতে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি দুই দেশের মধ্যে মাঠপর্যায়ের চুক্তি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ সই হয়। এ চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার দুই বছরের মধ্যে তা সমাপ্ত হবে।

এবিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে, এই দীর্ঘস্থায়ী মানবিক পরিস্থিতির ব্যাপক ও টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ সরল বিশ্বাসে মিয়ানমারের সাথে কাজ করে যাবে।’

তৃণমূল পর্যায়ে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন না আসলে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার ভরসা পাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিক কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শিবির পরিদর্শনে আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ আসছেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আই। তিনি ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ আসবেন। পরদিন তার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

রাখাইনে সেনা নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে গত বছরের আগস্ট থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর এই প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের কোনো মন্ত্রী তাদের দেখতে আসছেন। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের সফর হয়েছে। তবে তাদের কেউই রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যাননি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এক হাজার ৬৭৩ রোহিঙ্গা পরিবারের আট হাজার ৩২ জনের তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে। শিগগিরই আরো প্রায় ১০ হাজার জনের তলিকা দেবে। যদিও প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তারা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমের ফিরিয়ে  নেয়ার জন্য এখন পর্যন্ত মাত্র এক হাজারেরও কম নাগরিকের তথ্য যাচাই করতে পেরেছে।

359 ভিউ

Posted ১:২৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৭ এপ্রিল ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com